রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওমিক্রন এবং ডেল্টা মিলে আরও ভয়ঙ্কর কিছু নিয়ে আসতে পারে’

করোনার সর্বশেষ নতুন ধরন ওমিক্রন এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া আগের ধরন ডেল্টা মিলে করোনাভাইরাসের একটি সুপার ভ্যারিয়েন্ট বা আরও ভয়ঙ্কর নতুন কোনো ধরনের জন্ম দিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট পিটার হোয়াইট।

ব্লুমবার্গ এর মতামত কলামিস্ট অঞ্জনী ত্রিবেদীর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

পিটার হোয়াইট বলেন, ‘ভাইরাসরা দ্রুত পরিবর্তিত হয়। এজন্য প্রতি বছরই আমাদেরকে ফ্লু ভ্যাকসিন সমন্বয় করতে হয়। কিছু ভাইরাস অন্যদের তুলনায় দ্রুত পরিবর্তিত হয়। ভাইরাস যেভাবে টিকে থাকার জন্য বারবার বদলে যায় সেভাবেই আমাদেরকেও টিকা বদলে ফেলতে হবে।

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে কতটা সক্ষম এবং এই ধরন কতটা সংক্রামক তা নিয়ে আমরা এখনই কোন নিশ্চিত উপসংহারে উপনীত হতে পারি কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পিটার বলেন, আমি যা দেখেছি তা থেকে এটিকে ডেল্টার মতো একই রকম তীব্র বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া ডেল্টার জায়গা দখল করার মধ্য দিয়ে ওমিক্রন ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এটি আরও বেশি সংক্রামক। আমরা বিশ্বজুড়ে খুব দ্রুত এর ছড়িয়ে পড়া দেখছি। তবে এটি বেশি সংক্রামক হলেও অত ভয়ঙ্কর নয় বলেই মনে হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনে হাসপাতালে ভর্তির পরিমাণ বেশি নয়।

বিশ্বব্যাপী দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এটি ভারতে শনাক্ত অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবারের মধ্যেই বিশ্বের ৩০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন।

দক্ষিণ আফ্রিকা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিষয়ে প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) রিপোর্ট করেছিল ২৪ নভেম্বর। কিন্তু সাম্প্রতিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, এর বহু আগেই বিভিন্ন দেশে ছড়াতে শুরু করেছিল ভ্যারিয়েন্টটি।

আফ্রিকা মহাদেশের বতসোয়ানায় প্রথম ওমিক্রন চিহ্নিত হয়েছিল ১১ নভেম্বর।

দক্ষিণ আফ্রিকা স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি, তাদের দেশে কবে প্রথম ধরা পড়ে ভ্যারিয়েন্টটি। নভেম্বরের শুরু থেকেই তারা রোগীদের মধ্যে ভিন্ন উপসর্গ লক্ষ্য করেন। করোনা পরীক্ষাতেও ভাইরাসের এস-জিনের অনুপস্থিতি চোখে পড়ে সে দেশের বিজ্ঞানীদের। এর পরে অনুসন্ধান চালিয়ে পাওয়া যায় নতুন ভ্যারিয়েন্ট। বলা হচ্ছে, গত ৯ নভেম্বরই দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা করোনার এই নতুন ধরন সম্পর্কে টের পান।

ওমিক্রনের সংক্রমণ ও মারণ ক্ষমতা এখনো অজানা। তবে ভাইরাসটির ম্যাথামেটিকাল মডেলিং দেখে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে গোটা ইউরোপের অর্ধেক করোনা সংক্রমণের জন্যই দায়ী হবে ওমিক্রন।

তারা মনে করছে, যত দ্রুত এটি ছড়াবে, তত তাড়াতাড়ি ডেল্টাকে সরিয়ে এটিই মূল সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট হয়ে উঠবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ওমিক্রন এবং ডেল্টা মিলে আরও ভয়ঙ্কর কিছু নিয়ে আসতে পারে’

প্রকাশিত সময় : ০৯:৩৩:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২১

করোনার সর্বশেষ নতুন ধরন ওমিক্রন এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া আগের ধরন ডেল্টা মিলে করোনাভাইরাসের একটি সুপার ভ্যারিয়েন্ট বা আরও ভয়ঙ্কর নতুন কোনো ধরনের জন্ম দিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট পিটার হোয়াইট।

ব্লুমবার্গ এর মতামত কলামিস্ট অঞ্জনী ত্রিবেদীর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

পিটার হোয়াইট বলেন, ‘ভাইরাসরা দ্রুত পরিবর্তিত হয়। এজন্য প্রতি বছরই আমাদেরকে ফ্লু ভ্যাকসিন সমন্বয় করতে হয়। কিছু ভাইরাস অন্যদের তুলনায় দ্রুত পরিবর্তিত হয়। ভাইরাস যেভাবে টিকে থাকার জন্য বারবার বদলে যায় সেভাবেই আমাদেরকেও টিকা বদলে ফেলতে হবে।

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে কতটা সক্ষম এবং এই ধরন কতটা সংক্রামক তা নিয়ে আমরা এখনই কোন নিশ্চিত উপসংহারে উপনীত হতে পারি কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পিটার বলেন, আমি যা দেখেছি তা থেকে এটিকে ডেল্টার মতো একই রকম তীব্র বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া ডেল্টার জায়গা দখল করার মধ্য দিয়ে ওমিক্রন ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এটি আরও বেশি সংক্রামক। আমরা বিশ্বজুড়ে খুব দ্রুত এর ছড়িয়ে পড়া দেখছি। তবে এটি বেশি সংক্রামক হলেও অত ভয়ঙ্কর নয় বলেই মনে হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনে হাসপাতালে ভর্তির পরিমাণ বেশি নয়।

বিশ্বব্যাপী দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এটি ভারতে শনাক্ত অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবারের মধ্যেই বিশ্বের ৩০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন।

দক্ষিণ আফ্রিকা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিষয়ে প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) রিপোর্ট করেছিল ২৪ নভেম্বর। কিন্তু সাম্প্রতিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, এর বহু আগেই বিভিন্ন দেশে ছড়াতে শুরু করেছিল ভ্যারিয়েন্টটি।

আফ্রিকা মহাদেশের বতসোয়ানায় প্রথম ওমিক্রন চিহ্নিত হয়েছিল ১১ নভেম্বর।

দক্ষিণ আফ্রিকা স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি, তাদের দেশে কবে প্রথম ধরা পড়ে ভ্যারিয়েন্টটি। নভেম্বরের শুরু থেকেই তারা রোগীদের মধ্যে ভিন্ন উপসর্গ লক্ষ্য করেন। করোনা পরীক্ষাতেও ভাইরাসের এস-জিনের অনুপস্থিতি চোখে পড়ে সে দেশের বিজ্ঞানীদের। এর পরে অনুসন্ধান চালিয়ে পাওয়া যায় নতুন ভ্যারিয়েন্ট। বলা হচ্ছে, গত ৯ নভেম্বরই দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা করোনার এই নতুন ধরন সম্পর্কে টের পান।

ওমিক্রনের সংক্রমণ ও মারণ ক্ষমতা এখনো অজানা। তবে ভাইরাসটির ম্যাথামেটিকাল মডেলিং দেখে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে গোটা ইউরোপের অর্ধেক করোনা সংক্রমণের জন্যই দায়ী হবে ওমিক্রন।

তারা মনে করছে, যত দ্রুত এটি ছড়াবে, তত তাড়াতাড়ি ডেল্টাকে সরিয়ে এটিই মূল সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট হয়ে উঠবে।