বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ডাকা চলমান সংলাপে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
সোমবার রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির নিয়মিত সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ব্যতিরেকে সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনো নির্বাচন কমিশনই করতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছেন, তার কোনো ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সেই কারণে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনো ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারবে না। বিএনপি অর্থহীন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নিবন্ধিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিএনপি মনে করে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ব্যতীত নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়ে সংলাপ শুধু সময়ের অপচয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিগত দুটি নির্বাচন কমিশন গঠনের পূর্বে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছিল। বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করেছিল। কিন্তু সব উদ্যোগই ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচনকালীন আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে।’
বিএনপির অভিযোগ, ‘রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেআইনি ব্যবহার, নির্বাচন কমিশনের চরম ব্যর্থতা ও অযোগ্যতার কারণে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দলীয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পর পর দুটো নির্বাচন কমিশনই চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচন কমিশন কখনই স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে না।’
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে সোমবারের ওই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
প্রসঙ্গত, আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হবে। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন ইসি গঠন করতে হবে। এজন্য রাষ্ট্রপতি গত ২০ ডিসেম্বর নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। এ পর্যন্ত ১৪টি দলকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। পর্যায়ক্রমে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত মোট ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ করার কথা রয়েছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি

প্রকাশিত সময় : ১০:৫৪:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২১
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ডাকা চলমান সংলাপে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
সোমবার রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির নিয়মিত সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ব্যতিরেকে সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনো নির্বাচন কমিশনই করতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছেন, তার কোনো ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সেই কারণে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনো ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারবে না। বিএনপি অর্থহীন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নিবন্ধিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিএনপি মনে করে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ব্যতীত নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়ে সংলাপ শুধু সময়ের অপচয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিগত দুটি নির্বাচন কমিশন গঠনের পূর্বে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছিল। বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করেছিল। কিন্তু সব উদ্যোগই ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচনকালীন আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে।’
বিএনপির অভিযোগ, ‘রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেআইনি ব্যবহার, নির্বাচন কমিশনের চরম ব্যর্থতা ও অযোগ্যতার কারণে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দলীয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পর পর দুটো নির্বাচন কমিশনই চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচন কমিশন কখনই স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে না।’
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে সোমবারের ওই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
প্রসঙ্গত, আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হবে। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন ইসি গঠন করতে হবে। এজন্য রাষ্ট্রপতি গত ২০ ডিসেম্বর নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। এ পর্যন্ত ১৪টি দলকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। পর্যায়ক্রমে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত মোট ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ করার কথা রয়েছে।