মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শাবিপ্রবি উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করলেন রাবি শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের কুশপু্ত্তলিকা দাহ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্ৰন্থাগারের পেছনে আমতলা চত্বরে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

এসময় ‘শাবিপ্রবিতে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ফরিদ তুই গদি ছাড়সহ বিভিন্ন রকমের স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। দাহ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিগুলো পরিবারতন্ত্র, স্বজনপ্রীতি, স্বৈরাচারের সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। আর এই ভিসিগুলোকে চালাচ্ছে সরকার। আমরা এক ফরিদ‌ উদ্দিনকে পতন করে কি হবে। স্বৈরতন্ত্র শাসন দেশ থেকে উচ্ছেদ না করা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বৈরাচারী ভিসিগুলো থাকবে। সাস্টে যে হামলা ও মামলা হয়েছে। আমরা এর তীব্র ধিক্কার জানাই। এই মামলা প্রত্যাহার করা হোক।

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটা স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে উঠেছে। সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের যে প্রতিনিধিত্বমূলক জায়গা ছাত্রসংসদ, তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো পরিবর্তন, শিক্ষার্থীদের কথা বলার অধিকার, মুক্তচিন্তার অধিকার, সৃজনশীল চিন্তা করার অধিকারসহ বিভিন্ন নায্য দাবিদাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। এসময় শাবিপ্রবির উপাচার্যের অপসারণ, শিক্ষার্থীদের নামে যে মামলা হয়েছে তার প্রত্যাহার ও তাদের দাবিগুলো মেনে নিতে বলেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান বলেন, আমাদের ভাইবোনদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার মদদদাতা সেই ভিসির কুশপুত্তলিকা দাহ করছি। আমরা বলে দিতে চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা এক দেহ এক আত্মার মতো। তাই শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে সেটা আমাদের উপরেও হয়েছে। এই গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মাস্টার্স পাশ ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী অশিক্ষিত উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগসহ তিনদফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের ছাত্রীরা। আন্দোলন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত রোববার বেলা তিনটার দিকে উপাচার্য তাঁর কার্যালয় থেকে ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। পরে বিকেলে পুলিশ উপাচার্যকে মুক্ত করতে ভবনের ভেতরে ঢুকতে চাইলে আন্দোলনকারীরা বাঁধা দেন। এক পর্যায়ে পুলিশ শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

শাবিপ্রবি উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করলেন রাবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত সময় : ১০:৩০:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২২

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের কুশপু্ত্তলিকা দাহ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্ৰন্থাগারের পেছনে আমতলা চত্বরে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

এসময় ‘শাবিপ্রবিতে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ফরিদ তুই গদি ছাড়সহ বিভিন্ন রকমের স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। দাহ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিগুলো পরিবারতন্ত্র, স্বজনপ্রীতি, স্বৈরাচারের সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। আর এই ভিসিগুলোকে চালাচ্ছে সরকার। আমরা এক ফরিদ‌ উদ্দিনকে পতন করে কি হবে। স্বৈরতন্ত্র শাসন দেশ থেকে উচ্ছেদ না করা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বৈরাচারী ভিসিগুলো থাকবে। সাস্টে যে হামলা ও মামলা হয়েছে। আমরা এর তীব্র ধিক্কার জানাই। এই মামলা প্রত্যাহার করা হোক।

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটা স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে উঠেছে। সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের যে প্রতিনিধিত্বমূলক জায়গা ছাত্রসংসদ, তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো পরিবর্তন, শিক্ষার্থীদের কথা বলার অধিকার, মুক্তচিন্তার অধিকার, সৃজনশীল চিন্তা করার অধিকারসহ বিভিন্ন নায্য দাবিদাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। এসময় শাবিপ্রবির উপাচার্যের অপসারণ, শিক্ষার্থীদের নামে যে মামলা হয়েছে তার প্রত্যাহার ও তাদের দাবিগুলো মেনে নিতে বলেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান বলেন, আমাদের ভাইবোনদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার মদদদাতা সেই ভিসির কুশপুত্তলিকা দাহ করছি। আমরা বলে দিতে চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা এক দেহ এক আত্মার মতো। তাই শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে সেটা আমাদের উপরেও হয়েছে। এই গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মাস্টার্স পাশ ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী অশিক্ষিত উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগসহ তিনদফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের ছাত্রীরা। আন্দোলন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত রোববার বেলা তিনটার দিকে উপাচার্য তাঁর কার্যালয় থেকে ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। পরে বিকেলে পুলিশ উপাচার্যকে মুক্ত করতে ভবনের ভেতরে ঢুকতে চাইলে আন্দোলনকারীরা বাঁধা দেন। এক পর্যায়ে পুলিশ শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।