মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২ বছরে সাত বিয়ে, গ্যাং তৈরি করে স্বামীদের লুট করতেন নববধূ

বিয়ে করে টাকা, গয়না হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তার পেশা। এ জন্য তিনি তৈরি করেছিলেন একটি গ্যাং। যারা পাত্রপক্ষের কাছে নিজেদের পাত্রীর বাবা, মা, দাদা হিসেবেই পরিচয় দিতেন। এভাবে দুই বছরে সাতটি বিয়ে করেছেন ওই নারী। ওই পাত্রীবেশের নারীর নাম ঊর্মিলা আহারিবার (২৮)। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে। এ নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার।

খবরে বলা হয়, অষ্টম শ্রেণি পাশ ঊর্মিলার ইশারাতেই গোটা গ্যাং পরিচালিত হতো। মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের ধনবন্তপুরের বাসিন্দা তিনি। ২০ বছর বয়সেই অজয় আহিরবারের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় ঊর্মিলার। কিন্তু বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই মৃত্যু হয় অজয়ের। আচমকা স্বামীকে হারিয়ে অথৈ জলে পড়েন ঊর্মিলা। বাপেরবাড়ি চলে আসেন তিনি। জামাকাপড় সেলাই করে নিজের খরচ চালাতেন। এই সময়ই ভাগচন্দ নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ওই যুবক রাজস্থানের বাসিন্দা। প্রতিবেশী অর্চনা বর্মণের মাধ্যমে এর পর শ্যাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গেও পরিচয় হয় ঊর্মিলার। তাদের দলে অমরসিংহ পটেল নামে এক ব্যক্তিও যোগ দেন। প্রত্যেকেরই টাকার প্রয়োজন ছিল। ফলে টাকা হাতানোর জন্য একটি দল তৈরি করেন তারা। ঊর্মিলার বয়স যেহেতু কম, তাই তাকেই হাতিয়ার করে লুঠের ব্যবসায় নামে দলটি।

যাদের বিয়ে হয়নি বয়স বেশি এমন পুরুষদের খুঁজে বার করতেন তারা। তারপর ঊর্মিলাকে পাত্রী সাজিয়ে, বাকি সদস্যরা ঊর্মিলার আত্মীয় সেজে পাত্রের বাড়িতে হাজির হতেন। ঊর্মিলার প্রথম শিকার ছিলেন রাজস্থানের এক ব্যক্তি। বিয়ের চার মাস পর সুযোগ বুঝে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং গয়না নিয়ে চম্পট দেন ঊর্মিলা। নতুন নতুন শিকার জোগাড়ের কাজ ছিল শ্যামের। তার মাধ্যমেই মধ্যপ্রদেশের সাগরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের ১৫ দিনের মধ্যেই ২২ হাজার টাকা, গয়না নিয়ে উধাও। এরপর মধ্যপ্রদেশেরই দমোহতে তৃতীয় বিয়ে করেন। বিয়েতে পাওয়া ১৭ হাজার টাকা নিয়ে গা ঢাকা দেন ঊর্মিলা। চতুর্থ বিয়ে করেন রাজস্থানের রাজাখেড়ায়। পঞ্চম এবং ষষ্ঠ বিয়ে করেন রাজস্থানেরই ধৌলপুর এবং জয়পুরে।

এ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু গত ২ ফেব্রুয়ারি জবলপুরে ৪১ বছরের দশরথ পটেলকে বিয়ে করতে গিয়েই ফাঁদে পড়েন ঊর্মিলাসহ পুরো গ্যাং। মন্দিরে দশরথের সঙ্গে বিয়ে করেন ঊর্মিলা। তার কিছুক্ষণ পরই নগদ টাকা এবং গয়না নিয়ে পালিয়ে যান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি এ ক্ষেত্রে। প্রথমে ধরা পড়েন ঊর্মিলার প্রতিবেশী অর্চনা। তার সূত্র ধরেই এক এক করে ঊর্মিলাসহ গোটা দলটিকে ধরেছে পুলিশ।

২০১৫ সালের হিন্দি ছবি ‘ডলি কি ডোলি’-তে ডলির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সোনম কাপুর। তিনি এক এক জনকে বিয়ে করতেন আর বিয়ের রাতেই টাকা, গয়না লুঠ করে পালাতেন। ঠিক সেই কায়দাতেই স্বামীদের লুঠতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়েন ঊর্মিলা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার

২ বছরে সাত বিয়ে, গ্যাং তৈরি করে স্বামীদের লুট করতেন নববধূ

প্রকাশিত সময় : ০৯:২৯:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২

বিয়ে করে টাকা, গয়না হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তার পেশা। এ জন্য তিনি তৈরি করেছিলেন একটি গ্যাং। যারা পাত্রপক্ষের কাছে নিজেদের পাত্রীর বাবা, মা, দাদা হিসেবেই পরিচয় দিতেন। এভাবে দুই বছরে সাতটি বিয়ে করেছেন ওই নারী। ওই পাত্রীবেশের নারীর নাম ঊর্মিলা আহারিবার (২৮)। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে। এ নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার।

খবরে বলা হয়, অষ্টম শ্রেণি পাশ ঊর্মিলার ইশারাতেই গোটা গ্যাং পরিচালিত হতো। মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের ধনবন্তপুরের বাসিন্দা তিনি। ২০ বছর বয়সেই অজয় আহিরবারের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় ঊর্মিলার। কিন্তু বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই মৃত্যু হয় অজয়ের। আচমকা স্বামীকে হারিয়ে অথৈ জলে পড়েন ঊর্মিলা। বাপেরবাড়ি চলে আসেন তিনি। জামাকাপড় সেলাই করে নিজের খরচ চালাতেন। এই সময়ই ভাগচন্দ নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ওই যুবক রাজস্থানের বাসিন্দা। প্রতিবেশী অর্চনা বর্মণের মাধ্যমে এর পর শ্যাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গেও পরিচয় হয় ঊর্মিলার। তাদের দলে অমরসিংহ পটেল নামে এক ব্যক্তিও যোগ দেন। প্রত্যেকেরই টাকার প্রয়োজন ছিল। ফলে টাকা হাতানোর জন্য একটি দল তৈরি করেন তারা। ঊর্মিলার বয়স যেহেতু কম, তাই তাকেই হাতিয়ার করে লুঠের ব্যবসায় নামে দলটি।

যাদের বিয়ে হয়নি বয়স বেশি এমন পুরুষদের খুঁজে বার করতেন তারা। তারপর ঊর্মিলাকে পাত্রী সাজিয়ে, বাকি সদস্যরা ঊর্মিলার আত্মীয় সেজে পাত্রের বাড়িতে হাজির হতেন। ঊর্মিলার প্রথম শিকার ছিলেন রাজস্থানের এক ব্যক্তি। বিয়ের চার মাস পর সুযোগ বুঝে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং গয়না নিয়ে চম্পট দেন ঊর্মিলা। নতুন নতুন শিকার জোগাড়ের কাজ ছিল শ্যামের। তার মাধ্যমেই মধ্যপ্রদেশের সাগরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের ১৫ দিনের মধ্যেই ২২ হাজার টাকা, গয়না নিয়ে উধাও। এরপর মধ্যপ্রদেশেরই দমোহতে তৃতীয় বিয়ে করেন। বিয়েতে পাওয়া ১৭ হাজার টাকা নিয়ে গা ঢাকা দেন ঊর্মিলা। চতুর্থ বিয়ে করেন রাজস্থানের রাজাখেড়ায়। পঞ্চম এবং ষষ্ঠ বিয়ে করেন রাজস্থানেরই ধৌলপুর এবং জয়পুরে।

এ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু গত ২ ফেব্রুয়ারি জবলপুরে ৪১ বছরের দশরথ পটেলকে বিয়ে করতে গিয়েই ফাঁদে পড়েন ঊর্মিলাসহ পুরো গ্যাং। মন্দিরে দশরথের সঙ্গে বিয়ে করেন ঊর্মিলা। তার কিছুক্ষণ পরই নগদ টাকা এবং গয়না নিয়ে পালিয়ে যান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি এ ক্ষেত্রে। প্রথমে ধরা পড়েন ঊর্মিলার প্রতিবেশী অর্চনা। তার সূত্র ধরেই এক এক করে ঊর্মিলাসহ গোটা দলটিকে ধরেছে পুলিশ।

২০১৫ সালের হিন্দি ছবি ‘ডলি কি ডোলি’-তে ডলির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সোনম কাপুর। তিনি এক এক জনকে বিয়ে করতেন আর বিয়ের রাতেই টাকা, গয়না লুঠ করে পালাতেন। ঠিক সেই কায়দাতেই স্বামীদের লুঠতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়েন ঊর্মিলা।