মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহাকাশে ভয়ঙ্কর সৌরঝড়, স্পেস এক্সের ৪০টি স্যাটেলাইট পুড়ে ছাই

ভয়ঙ্কর এক সৌর ঝড়ের আঘাতে স্পেসএক্সের পাঠানো নতুন স্যাটেলাইটগুলোর বেশিরভাগই তাদের কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফিরে এসেছে এবং পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার রাতে এক অনলাইন আপডেটে সংস্থাটি জানিয়েছে, গত সপ্তাহে তাদের উৎক্ষেপিত ৪৯টি ছোট উপগ্রহের মধ্যে ৪০টিই হয় বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশ করেছে এবং পুড়ে গেছে, অথবা ধ্বংস হওয়ার পথে রয়েছে।

স্পেসএক্স বলেছে যে, গত শুক্রবার একটি ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় বায়ুমণ্ডলকে আরও ঘন করে তোলে। যার ফলে তাদের স্টারলিঙ্ক উপগ্রহগুলোর ওপর বায়ুমণ্ডলের টান বেড়ে যায় এবং সেগুলো বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে ধ্বংস হয়ে যায়।

পৃথিবীতে থাকা নিয়ন্ত্রকরা স্যাটেলাইটগুলোকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বায়ুমণ্ডলীয় টান খুব বেশি ছিল। ফলে উপগ্রহগুলো দূরে সরে যেতে পারেনি। স্পেসএক্সের এখনও প্রায় ২ হাজার স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট রয়েছে, যেগুলো পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে এবং বিশ্বের প্রত্যন্ত কোণে ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করছে। তারা ভূমি থেকে ৩৪০ মাইল উপর দিয়ে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে।

সৌর ঝড়ের আঘাতে ধ্বংস হওয়া স্যাটেলাইটগুলো অস্থায়ী অবস্থায় ছিল। স্পেসএক্স ইচ্ছাকৃতভাবেই তাদের এই অস্বাভাবিকভাবে নিচু কক্ষপথে স্থাপন করেছিল যাতে যে কোনও নষ্ট উপগ্রহ দ্রুত বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করতে পারে এবং অন্য মহাকাশযানের জন্য কোনও হুমকি সৃষ্টি করতে পারে না।

সংস্থার মতে, কক্ষপথে বা মাটিতে এই নতুন উপগ্রহগুলো থেকে কোনও বিপদ আসার সম্ভাবনা নেই। প্রতিটি স্যাটেলাইটের ওজন মাত্র ২৬০ কেজি।

স্পেসএক্স এতগুলো উপগ্রহ হারানোকে একটি ‘অনন্য পরিস্থিতি’ বলে বর্ণনা করেছে। এই ধরনের ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় অগ্নিশিখার মতো তীব্র সৌর ক্রিয়াকলাপের কারণে তৈরি হয়, যা সূর্য থেকে প্লাজমার স্রোত মহাকাশে এবং পৃথিবীর দিকে ঠেলে পাঠাতে পারে।

২০১৯ সালে প্রথম স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট চালু করার পর থেকে স্পেসএক্স সিইও ইলোন মাস্ক বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বাড়ানোর জন্য আরও হাজার হাজার উপগ্রহ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। স্পেসএক্স এই স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে টোঙ্গায় ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু করার চেষ্টা করছে। জানুয়ারির শেষের দিকে এক বিধ্বংসী আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং সুনামিতে টোঙ্গার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

স্পেস এক্স ছাড়া লন্ডন ভিত্তিক ওয়ানওয়েবেরও নিজস্ব ইন্টারনেট স্যাটেলাইট আছে। এবং আমাজন এই বছরের শেষের দিকে তাদের ইন্টারনেট স্যাটেলাইট চালু করার পরিকল্পনা করছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মহাকাশে ভয়ঙ্কর সৌরঝড়, স্পেস এক্সের ৪০টি স্যাটেলাইট পুড়ে ছাই

প্রকাশিত সময় : ১২:৪১:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২২

ভয়ঙ্কর এক সৌর ঝড়ের আঘাতে স্পেসএক্সের পাঠানো নতুন স্যাটেলাইটগুলোর বেশিরভাগই তাদের কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফিরে এসেছে এবং পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার রাতে এক অনলাইন আপডেটে সংস্থাটি জানিয়েছে, গত সপ্তাহে তাদের উৎক্ষেপিত ৪৯টি ছোট উপগ্রহের মধ্যে ৪০টিই হয় বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশ করেছে এবং পুড়ে গেছে, অথবা ধ্বংস হওয়ার পথে রয়েছে।

স্পেসএক্স বলেছে যে, গত শুক্রবার একটি ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় বায়ুমণ্ডলকে আরও ঘন করে তোলে। যার ফলে তাদের স্টারলিঙ্ক উপগ্রহগুলোর ওপর বায়ুমণ্ডলের টান বেড়ে যায় এবং সেগুলো বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে ধ্বংস হয়ে যায়।

পৃথিবীতে থাকা নিয়ন্ত্রকরা স্যাটেলাইটগুলোকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বায়ুমণ্ডলীয় টান খুব বেশি ছিল। ফলে উপগ্রহগুলো দূরে সরে যেতে পারেনি। স্পেসএক্সের এখনও প্রায় ২ হাজার স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট রয়েছে, যেগুলো পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে এবং বিশ্বের প্রত্যন্ত কোণে ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করছে। তারা ভূমি থেকে ৩৪০ মাইল উপর দিয়ে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে।

সৌর ঝড়ের আঘাতে ধ্বংস হওয়া স্যাটেলাইটগুলো অস্থায়ী অবস্থায় ছিল। স্পেসএক্স ইচ্ছাকৃতভাবেই তাদের এই অস্বাভাবিকভাবে নিচু কক্ষপথে স্থাপন করেছিল যাতে যে কোনও নষ্ট উপগ্রহ দ্রুত বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করতে পারে এবং অন্য মহাকাশযানের জন্য কোনও হুমকি সৃষ্টি করতে পারে না।

সংস্থার মতে, কক্ষপথে বা মাটিতে এই নতুন উপগ্রহগুলো থেকে কোনও বিপদ আসার সম্ভাবনা নেই। প্রতিটি স্যাটেলাইটের ওজন মাত্র ২৬০ কেজি।

স্পেসএক্স এতগুলো উপগ্রহ হারানোকে একটি ‘অনন্য পরিস্থিতি’ বলে বর্ণনা করেছে। এই ধরনের ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় অগ্নিশিখার মতো তীব্র সৌর ক্রিয়াকলাপের কারণে তৈরি হয়, যা সূর্য থেকে প্লাজমার স্রোত মহাকাশে এবং পৃথিবীর দিকে ঠেলে পাঠাতে পারে।

২০১৯ সালে প্রথম স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট চালু করার পর থেকে স্পেসএক্স সিইও ইলোন মাস্ক বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বাড়ানোর জন্য আরও হাজার হাজার উপগ্রহ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। স্পেসএক্স এই স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে টোঙ্গায় ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু করার চেষ্টা করছে। জানুয়ারির শেষের দিকে এক বিধ্বংসী আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং সুনামিতে টোঙ্গার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

স্পেস এক্স ছাড়া লন্ডন ভিত্তিক ওয়ানওয়েবেরও নিজস্ব ইন্টারনেট স্যাটেলাইট আছে। এবং আমাজন এই বছরের শেষের দিকে তাদের ইন্টারনেট স্যাটেলাইট চালু করার পরিকল্পনা করছে।