বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৮ দিন পর দুঃখ প্রকাশ করলেন শাবিপ্রবি উপাচার্য

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি ও লাঠিপেটার ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে ২৮ দিন পর দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ যারা আহত হয়েছেন তাদের সবার প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ঘটে যাওয়া উক্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি।

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, উক্ত ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের এই প্রিয় প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা সম্ভব হবে।

এর আগে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) প্রায় ৩ ঘণ্টার আলোচনা শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবিই যৌক্তিক। উপাচার্যকে অপসারণ তাদের একটি দাবি ছিল। সে ব্যাপারে আমরা আগেও তাদের সাথে কথা বলেছি। উপাচার্যকে অপসারণের দাবির কথা তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছে দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।

শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, তারা তাদের যে বক্তব্য, তাদের যে চাওয়াগুলো এবং কেন তারা সেটি চায়, সেই বক্তব্য আমাদের কাছে তুলে ধরেছে। আমরা অত্যন্ত মনোযোগের সাথে তাদের সেই বক্তব্যগুলো শুনেছি। আমরা তাদের বক্তব্য মহামান্য আচার্যকে অবহিত করবো।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েকশ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা।

পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাদের লক্ষ্য করে গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে এই আন্দোলন উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। প্রথম ছয় দিনে দাবি পূরণ না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি বেলা তিনটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।

২৬ জানুয়ারি সকালে অনশনস্থলে গিয়ে লেখক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

২৮ দিন পর দুঃখ প্রকাশ করলেন শাবিপ্রবি উপাচার্য

প্রকাশিত সময় : ০৯:২৬:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি ও লাঠিপেটার ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে ২৮ দিন পর দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ যারা আহত হয়েছেন তাদের সবার প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ঘটে যাওয়া উক্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি।

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, উক্ত ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের এই প্রিয় প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা সম্ভব হবে।

এর আগে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) প্রায় ৩ ঘণ্টার আলোচনা শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবিই যৌক্তিক। উপাচার্যকে অপসারণ তাদের একটি দাবি ছিল। সে ব্যাপারে আমরা আগেও তাদের সাথে কথা বলেছি। উপাচার্যকে অপসারণের দাবির কথা তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছে দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।

শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, তারা তাদের যে বক্তব্য, তাদের যে চাওয়াগুলো এবং কেন তারা সেটি চায়, সেই বক্তব্য আমাদের কাছে তুলে ধরেছে। আমরা অত্যন্ত মনোযোগের সাথে তাদের সেই বক্তব্যগুলো শুনেছি। আমরা তাদের বক্তব্য মহামান্য আচার্যকে অবহিত করবো।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েকশ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা।

পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাদের লক্ষ্য করে গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে এই আন্দোলন উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। প্রথম ছয় দিনে দাবি পূরণ না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি বেলা তিনটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।

২৬ জানুয়ারি সকালে অনশনস্থলে গিয়ে লেখক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।