মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে খাদ্য বিপর্যয়ের মুখে বিশ্ব

জাতিসংঘ প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ‘ক্ষুধার তান্ডব এবং বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার বিপর্যয়’ মোকাবিলায় বিশ্বকে অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব সোমবার নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেছেন, যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহে সুদূর প্রসারী বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি করে যা দরিদ্রদের ওপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলবে।  জাতিসংঘ প্রধান বলেন, ‘এই যুদ্ধ ইউক্রেনকে ছাড়িয়ে গেছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ ও দেশ গুলোর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।’

তিনি বলেন, যুদ্ধের আগেও উন্নয়নশীল দেশগুলো ‘মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারে রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান সুদের হার এবং ্ঋণের বোঝা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে লড়াই করছিল।’

‘এখন তাদের রুটির ঝুড়িতে বোমা ফেলা হচ্ছে’ উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, ইউক্রেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অর্ধেকেরও বেশি গম সরবরাহ করে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, জাতিসংঘের বৈশ্বিক খাদ্য মূল্য সূচক সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে এবং বিশ্বের ৪৫ টির বেশি দেশ তাদের গমের চাহিদার অন্তত এক-তৃতীয়াংশ ইউক্রেন বা রাশিয়া থেকে আমদানি করে। এ সব দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বুরকিনা ফাসো, মিশর, কঙ্গো, লেবানন, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন।

‘ক্ষুধার তান্ডব এবং বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থার বিপর্যয় এড়াতে আমাদের অবশ্যই যথাসাধ্য চেষ্টা চালাতে হবে’ এ কথা উল্লেখ করে তিনি অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানান। নিরাপত্তা পরিষদে অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ’র (ওএসসিই) এক ব্রিফিংয়ের ফাঁকে মহাসচিব এ কথা বলেন। 

২০২২ সালে ওএসসিই’র ঘূর্ণায়মান সভাপতিত্বের দায়িত্বে থাকা পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ছিল ‘একটি কৌশলগত ব্যর্থতা।’ জেবিগনিউ রাউ বলেছেন, এর ফলে মস্কো বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু হামলা চালাতে তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে।

‘এটি দুঃখজনক ও লজ্জাজনক এবং এটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের সমতুল্য’ এ কথা উল্লেখ করে রাউ বলেন, রাশিয়ার আগ্রাসন ‘ওএসসিই’র অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে খাদ্য বিপর্যয়ের মুখে বিশ্ব

প্রকাশিত সময় : ০৯:৩৪:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ ২০২২

জাতিসংঘ প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ‘ক্ষুধার তান্ডব এবং বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার বিপর্যয়’ মোকাবিলায় বিশ্বকে অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব সোমবার নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেছেন, যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহে সুদূর প্রসারী বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি করে যা দরিদ্রদের ওপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলবে।  জাতিসংঘ প্রধান বলেন, ‘এই যুদ্ধ ইউক্রেনকে ছাড়িয়ে গেছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ ও দেশ গুলোর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।’

তিনি বলেন, যুদ্ধের আগেও উন্নয়নশীল দেশগুলো ‘মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারে রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান সুদের হার এবং ্ঋণের বোঝা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে লড়াই করছিল।’

‘এখন তাদের রুটির ঝুড়িতে বোমা ফেলা হচ্ছে’ উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, ইউক্রেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অর্ধেকেরও বেশি গম সরবরাহ করে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, জাতিসংঘের বৈশ্বিক খাদ্য মূল্য সূচক সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে এবং বিশ্বের ৪৫ টির বেশি দেশ তাদের গমের চাহিদার অন্তত এক-তৃতীয়াংশ ইউক্রেন বা রাশিয়া থেকে আমদানি করে। এ সব দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বুরকিনা ফাসো, মিশর, কঙ্গো, লেবানন, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন।

‘ক্ষুধার তান্ডব এবং বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থার বিপর্যয় এড়াতে আমাদের অবশ্যই যথাসাধ্য চেষ্টা চালাতে হবে’ এ কথা উল্লেখ করে তিনি অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানান। নিরাপত্তা পরিষদে অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ’র (ওএসসিই) এক ব্রিফিংয়ের ফাঁকে মহাসচিব এ কথা বলেন। 

২০২২ সালে ওএসসিই’র ঘূর্ণায়মান সভাপতিত্বের দায়িত্বে থাকা পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ছিল ‘একটি কৌশলগত ব্যর্থতা।’ জেবিগনিউ রাউ বলেছেন, এর ফলে মস্কো বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু হামলা চালাতে তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে।

‘এটি দুঃখজনক ও লজ্জাজনক এবং এটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের সমতুল্য’ এ কথা উল্লেখ করে রাউ বলেন, রাশিয়ার আগ্রাসন ‘ওএসসিই’র অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।