শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাবি শিক্ষক তাহের হত্যার রায়ে সন্তুষ্ট সহকর্মীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মো. মহিউদ্দিন এবং বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে অপর দুই আসামির যাবজ্জীবন দণ্ডও বহাল রেখেছেন আদালত। তারা হলেন- নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের সম্বন্ধী আব্দুস সালাম।

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৬ বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আপিল বিভাগের এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে অধ্যাপক তাহেরর সহকর্মী ও রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি। তাহের স্যারের প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছিল আজ এ রায়ের মাধ্যমে স্যার তার বিচার পেলেন। আমাদের পবিত্র শিক্ষাঙ্গনে কোনো শিক্ষক তো দূরের কথা, কোনো মানুষকে কেউ যেন হত্যা করার সাহস না পায়। এ রায় তারই একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

অধ্যাপক তাহেরর সহকর্মী ও রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, এধরণের জঘন্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ আমরা প্রথম থেকেই করেছি এবং তাহের স্যারের হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সকলে মিলে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমরা মনে করি আজ সেই ন্যায় এবং সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জাতি আজ দেখল এই বাংলাদেশে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি এই রায়ের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পবিত্র অঙ্গণে এ ধরণের জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটালে কেউ ছাড় পেতে পারেনা।

এর আগে গত ১৬ই মার্চ উভয়পক্ষের (রাষ্ট্র ও আসামি) করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজ (৫ এপ্রিল) দিন রেখেছিলেন আপিল বিভাগ। আদালতে ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অবন্তী নুরুল। বাদীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথী। এছাড়া ছিলেন অধ্যাপক ড. এস তাহেরের মেয়ে আইনজীবী সাগুফতা। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মো. তাজুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। সে মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুইজনকে খালাস দেন। পরে হাইকোর্ট দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্য দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাবি শিক্ষক তাহের হত্যার রায়ে সন্তুষ্ট সহকর্মীরা

প্রকাশিত সময় : ০৭:২৯:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০২২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মো. মহিউদ্দিন এবং বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে অপর দুই আসামির যাবজ্জীবন দণ্ডও বহাল রেখেছেন আদালত। তারা হলেন- নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের সম্বন্ধী আব্দুস সালাম।

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৬ বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আপিল বিভাগের এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে অধ্যাপক তাহেরর সহকর্মী ও রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি। তাহের স্যারের প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছিল আজ এ রায়ের মাধ্যমে স্যার তার বিচার পেলেন। আমাদের পবিত্র শিক্ষাঙ্গনে কোনো শিক্ষক তো দূরের কথা, কোনো মানুষকে কেউ যেন হত্যা করার সাহস না পায়। এ রায় তারই একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

অধ্যাপক তাহেরর সহকর্মী ও রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, এধরণের জঘন্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ আমরা প্রথম থেকেই করেছি এবং তাহের স্যারের হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সকলে মিলে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমরা মনে করি আজ সেই ন্যায় এবং সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জাতি আজ দেখল এই বাংলাদেশে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি এই রায়ের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পবিত্র অঙ্গণে এ ধরণের জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটালে কেউ ছাড় পেতে পারেনা।

এর আগে গত ১৬ই মার্চ উভয়পক্ষের (রাষ্ট্র ও আসামি) করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজ (৫ এপ্রিল) দিন রেখেছিলেন আপিল বিভাগ। আদালতে ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অবন্তী নুরুল। বাদীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথী। এছাড়া ছিলেন অধ্যাপক ড. এস তাহেরের মেয়ে আইনজীবী সাগুফতা। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মো. তাজুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। সে মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুইজনকে খালাস দেন। পরে হাইকোর্ট দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্য দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।