শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাসপোর্ট অফিসে সেবাগ্রহীতাকে চেয়ার দিয়ে মারধর

পাসপোর্ট করতে আসা তিন গ্রাহককে চেয়ার দিয়ে পিটিয়েছেন কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) নুরুল হুদা। এ সময় এ ঘটনার ভিডিয়ো ধারণ করতে গেলে স্থানীয় অনলাইন পোর্টালের এক সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) এ ঘটনায় আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা গেছে, সোমবার সকালে সাকিব পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন অফিসের নিচতলায়। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর সাকিব পাশে থাকা একটি চেয়ারে বসে পড়েন। তার সঙ্গে আরও অন্তত তিন-চারজন সেবাগ্রহীতা বসেন। এ সময় আচমকা পাসপোর্ট অফিসের ডিডি মো. নুরুল হুদা নিচে নেমে আসেন। এসেই প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে সেবাগ্রহীতাদের পেটাতে থাকেন। চেয়ার ভেঙে গেলে ওই সেবাগ্রহীতাদের চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন তিনি।

ভুক্তভোগী মো. সাকিব বলেন, ‘আমি খুব ব্যথা পেয়েছি। আমার সঙ্গে থাকা আরও দুজন ভয়ে অফিস থেকে চলে গেছে।’ এ ঘটনার ভিডিয়ো ধারণ করছিলেন কুমিল্লা প্রেস নামে একটি অনলাইন পোর্টালের সংবাদকর্মী মো. সাফি। পরে উপ-পরিচালক নুরুল হুদা ওই সংবাদকর্মীর মোবাইল ফোন নিয়ে যান।

এদিকে পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা অন্তত দশজন সেবাগ্রহীতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘হঠাৎ করে বড় স্যার বাইরে আইসা চেয়ারে বসা দুই তিনজনরে পিডানি দিছে। পরে থাপ্পড় দেয়। এ ঘটনার পরে আমরা অনেকে ভয় পেয়ে যাই। থাপ্পড় খেয়ে দুই-তিনজন অফিস থেকে চলে যায়।’

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পাসপোর্ট অফিসে যান কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সহিদুর ও পরিদর্শক (তদন্ত) কমলকৃষ্ণ ধর। মারধরের বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জানান, আমি শুনেছি উপ-পরিচালকের সঙ্গে সেবাগ্রহীতাদের কথাকাটাকাটি হয়েছে আর বেশি কিছু জানি না।

পরে ঘটনার ৩ ঘণ্টা পর ওসি সহিদুর রহমান এবং থানার তদন্ত কর্মকর্তা কমল দের উপস্থিতিতে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইলটি সাংবাদিককে ফেরত দেওয়া হয়।

ওই ঘটনার বিবরণ দিয়ে সংবাদকর্মী মো. সাফি বলেন, আমি আমার পাসপোর্টের বিষয়ে পাসপোর্ট অফিসে যাই। ওই সময় দেখি পাসপোর্ট অফিসের ডিডি আমার কিছুটা সামনে তিন-চারজন সেবাগ্রহীতাকে চেয়ার দিয়ে পেটাচ্ছেন। পরে ভুক্তভোগীদের কাছে জানতে চাই কেন তাদেরকে পেটাল।

পরে আমাকে ভুক্তভোগীরা জানান, তারা ভুল করে অফিসের কর্মকর্তাদের চেয়ারে বসেছিলেন। এজন্য তাদেরকে পেটানো হয়। ঘটনার বিষয়ে পাসপোর্টের ডিডির কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মো. নুরুল হুদা জানান, তিনি কাউকে মারধর করেননি। সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনুমতি না নিয়ে ভিডিয়ো ধারণ করায় মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরে মোবাইল ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

পাসপোর্ট অফিসে সেবাগ্রহীতাকে চেয়ার দিয়ে মারধর

প্রকাশিত সময় : ০৪:৪৬:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০২২

পাসপোর্ট করতে আসা তিন গ্রাহককে চেয়ার দিয়ে পিটিয়েছেন কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) নুরুল হুদা। এ সময় এ ঘটনার ভিডিয়ো ধারণ করতে গেলে স্থানীয় অনলাইন পোর্টালের এক সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) এ ঘটনায় আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা গেছে, সোমবার সকালে সাকিব পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন অফিসের নিচতলায়। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর সাকিব পাশে থাকা একটি চেয়ারে বসে পড়েন। তার সঙ্গে আরও অন্তত তিন-চারজন সেবাগ্রহীতা বসেন। এ সময় আচমকা পাসপোর্ট অফিসের ডিডি মো. নুরুল হুদা নিচে নেমে আসেন। এসেই প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে সেবাগ্রহীতাদের পেটাতে থাকেন। চেয়ার ভেঙে গেলে ওই সেবাগ্রহীতাদের চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন তিনি।

ভুক্তভোগী মো. সাকিব বলেন, ‘আমি খুব ব্যথা পেয়েছি। আমার সঙ্গে থাকা আরও দুজন ভয়ে অফিস থেকে চলে গেছে।’ এ ঘটনার ভিডিয়ো ধারণ করছিলেন কুমিল্লা প্রেস নামে একটি অনলাইন পোর্টালের সংবাদকর্মী মো. সাফি। পরে উপ-পরিচালক নুরুল হুদা ওই সংবাদকর্মীর মোবাইল ফোন নিয়ে যান।

এদিকে পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা অন্তত দশজন সেবাগ্রহীতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘হঠাৎ করে বড় স্যার বাইরে আইসা চেয়ারে বসা দুই তিনজনরে পিডানি দিছে। পরে থাপ্পড় দেয়। এ ঘটনার পরে আমরা অনেকে ভয় পেয়ে যাই। থাপ্পড় খেয়ে দুই-তিনজন অফিস থেকে চলে যায়।’

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পাসপোর্ট অফিসে যান কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সহিদুর ও পরিদর্শক (তদন্ত) কমলকৃষ্ণ ধর। মারধরের বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জানান, আমি শুনেছি উপ-পরিচালকের সঙ্গে সেবাগ্রহীতাদের কথাকাটাকাটি হয়েছে আর বেশি কিছু জানি না।

পরে ঘটনার ৩ ঘণ্টা পর ওসি সহিদুর রহমান এবং থানার তদন্ত কর্মকর্তা কমল দের উপস্থিতিতে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইলটি সাংবাদিককে ফেরত দেওয়া হয়।

ওই ঘটনার বিবরণ দিয়ে সংবাদকর্মী মো. সাফি বলেন, আমি আমার পাসপোর্টের বিষয়ে পাসপোর্ট অফিসে যাই। ওই সময় দেখি পাসপোর্ট অফিসের ডিডি আমার কিছুটা সামনে তিন-চারজন সেবাগ্রহীতাকে চেয়ার দিয়ে পেটাচ্ছেন। পরে ভুক্তভোগীদের কাছে জানতে চাই কেন তাদেরকে পেটাল।

পরে আমাকে ভুক্তভোগীরা জানান, তারা ভুল করে অফিসের কর্মকর্তাদের চেয়ারে বসেছিলেন। এজন্য তাদেরকে পেটানো হয়। ঘটনার বিষয়ে পাসপোর্টের ডিডির কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মো. নুরুল হুদা জানান, তিনি কাউকে মারধর করেননি। সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনুমতি না নিয়ে ভিডিয়ো ধারণ করায় মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরে মোবাইল ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।