শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশের ওপর হামলা: নারী আইনজীবীর জামিন, রিমান্ডে ৫

রাজধানীর জুরাইনে ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্যকে মারধরের মামলায় ইয়াসিন জাহান নিশান নামে এক অন্তঃসত্ত্বা আইনজীবীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে শ্যালক-দুলাভাইসহ ৫ জনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

আজ বুধবার ঢাকার এডিশনাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এই আদেশ দেন।

রিমান্ডে দেওয়া ৫ আসামি হলেন-মোটরসাইকেলের চালক বার্তা বিচিত্রা পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সোহাগ উল ইসলাম রনি, তার শ্যালক ইয়াসিন আরাফাত ভুঁইয়া, শরিফ, নাহিদ ও রাসেল।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্যামপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করে ৫ আসামির সাতদিন করে রিমান্ড আবেদন এবং নারী আইনজীবীকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

এদিকে আইনজীবী গ্রেপ্তারের খবরে সহকর্মী আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গনে এসে ভীড় করেন। তারা এজলাস এবং বাইরে জামিন চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশের বিরুদ্ধেও তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। হৈচৈ এর কারণে আদালতের বিচারকাজ বিলম্ব হয়। বিচারক ৩ টা ৫ মিনিটের দিকে এজলাস থেকে নেমে যান। এরপরও আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক ও বর্তমান নেতারাও আসেন শুনানিতে। তারা আইনজীবীদের শান্ত করার পর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আসামিদের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী কাজী নজিব উল্যাহ হিরু, এহেসানুল হক সমাজীসহ কয়েকজন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। ওই নারী আইনজীবীরও জামিন আবেদন করা হয়।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ৫ আসামির তিন দিনের রিমান্ড এবং একজনকে জামিনের আদেশ দেন।

মামলা থেকে জানা যায়, গত মঙ্গলবার জুরাইন রেলগেট দিয়ে উল্টোপথে আসা একটি মোটরসাইকেলকে গতিরোধ করলে সার্জেন্ট আলী হোসেনের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়ান মোটরসাইকেল আরোহী সোহাগ উল ইসলাম রনি ও তার স্ত্রী ইয়াসিন জাহান নিশান। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে লোকজন জড়ো হওয়ায় ওই এলাকার ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) বিপ্লব ভৌমিক কয়েকজন কনস্টেবল নিয়ে এসে তাদের সবাইকে মীমাংসার জন্য সড়কে থাকা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে নিয়ে যান। এ সময় মোবাইলে ইয়াসিন জাহান নিশান বিষয়টি তার ভাই ইয়াসির আরাফাতকে জানান। তিনি লোকজন নিয়ে এসে পুলিশ বক্সে প্রবেশ করেন। এরপর পুলিশ বক্স ভেঙে তারা বের হয়ে আসেন।

এ সময় ওই এলাকার হকার ও ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা হামলা চালায়। ট্রাফিক বক্সের গ্লাস দিয়ে সার্জেন্ট আলী হোসেনকে আঘাত করলে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা কেটে যায়। উত্তেজিত হামলাকারীরা পুলিশ ইউনিফর্মে থাকা সবার ওপরই হামলা করে।

এ সময় শ্যামপুর থানার এসআই উৎপল চন্দ্র ও এসআই সাকিব সেখানে গেলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

পুলিশের ওপর হামলা: নারী আইনজীবীর জামিন, রিমান্ডে ৫

প্রকাশিত সময় : ০৯:৫৫:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুন ২০২২

রাজধানীর জুরাইনে ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্যকে মারধরের মামলায় ইয়াসিন জাহান নিশান নামে এক অন্তঃসত্ত্বা আইনজীবীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে শ্যালক-দুলাভাইসহ ৫ জনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

আজ বুধবার ঢাকার এডিশনাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এই আদেশ দেন।

রিমান্ডে দেওয়া ৫ আসামি হলেন-মোটরসাইকেলের চালক বার্তা বিচিত্রা পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সোহাগ উল ইসলাম রনি, তার শ্যালক ইয়াসিন আরাফাত ভুঁইয়া, শরিফ, নাহিদ ও রাসেল।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্যামপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করে ৫ আসামির সাতদিন করে রিমান্ড আবেদন এবং নারী আইনজীবীকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

এদিকে আইনজীবী গ্রেপ্তারের খবরে সহকর্মী আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গনে এসে ভীড় করেন। তারা এজলাস এবং বাইরে জামিন চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশের বিরুদ্ধেও তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। হৈচৈ এর কারণে আদালতের বিচারকাজ বিলম্ব হয়। বিচারক ৩ টা ৫ মিনিটের দিকে এজলাস থেকে নেমে যান। এরপরও আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক ও বর্তমান নেতারাও আসেন শুনানিতে। তারা আইনজীবীদের শান্ত করার পর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আসামিদের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী কাজী নজিব উল্যাহ হিরু, এহেসানুল হক সমাজীসহ কয়েকজন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। ওই নারী আইনজীবীরও জামিন আবেদন করা হয়।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ৫ আসামির তিন দিনের রিমান্ড এবং একজনকে জামিনের আদেশ দেন।

মামলা থেকে জানা যায়, গত মঙ্গলবার জুরাইন রেলগেট দিয়ে উল্টোপথে আসা একটি মোটরসাইকেলকে গতিরোধ করলে সার্জেন্ট আলী হোসেনের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়ান মোটরসাইকেল আরোহী সোহাগ উল ইসলাম রনি ও তার স্ত্রী ইয়াসিন জাহান নিশান। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে লোকজন জড়ো হওয়ায় ওই এলাকার ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) বিপ্লব ভৌমিক কয়েকজন কনস্টেবল নিয়ে এসে তাদের সবাইকে মীমাংসার জন্য সড়কে থাকা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে নিয়ে যান। এ সময় মোবাইলে ইয়াসিন জাহান নিশান বিষয়টি তার ভাই ইয়াসির আরাফাতকে জানান। তিনি লোকজন নিয়ে এসে পুলিশ বক্সে প্রবেশ করেন। এরপর পুলিশ বক্স ভেঙে তারা বের হয়ে আসেন।

এ সময় ওই এলাকার হকার ও ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা হামলা চালায়। ট্রাফিক বক্সের গ্লাস দিয়ে সার্জেন্ট আলী হোসেনকে আঘাত করলে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা কেটে যায়। উত্তেজিত হামলাকারীরা পুলিশ ইউনিফর্মে থাকা সবার ওপরই হামলা করে।

এ সময় শ্যামপুর থানার এসআই উৎপল চন্দ্র ও এসআই সাকিব সেখানে গেলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়।