রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মিখাইল কাসিয়ানভ। কিন্তু তার সাবেক ‘বস’ ইউক্রেনের সঙ্গে পুরোমাত্রার যুদ্ধ শুরু করবেন, তিনি সেটা কখনই ভয়াবহতম কল্পনাতেও করতে পারেননি।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘আমি অন্য এক পুতিনকে চিনতাম।’ তার ধারণা, এই যুদ্ধ দুই বছর পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে এবং যুদ্ধে ইউক্রেনই জিতবে।
২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন কাসিয়ানভ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পশ্চিমাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন ৬৪ বছর বয়সী কাসিয়ানভ। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য অনেক রাশিয়ানের মতো তিনিও ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগেও বিশ্বাস করতে পারেননি যে, আসলেই যুদ্ধ বেধে যাবে।’
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর তিন দিন আগে দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের নাটকীয় বৈঠক ডেকেছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেই সময় কাসিয়ানভ কেবল বুঝতে পেরেছিলেন যে, পুতিন কিছু একটা করতে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক দেখে আমি বুঝতে পারলাম যে, হ্যাঁ, একটা যুদ্ধ হবে। কিন্তু সেই সময় এই যুদ্ধের ব্যাপারে পুতিন যথাযথভাবে চিন্তা করতে পারেননি।’
কাসিয়ানভ বলেছেন, ‘আমি এসব লোককে জানি এবং তাদেরকে দেখেছি। তখন আমি বুঝতে পারি যে, পুতিন ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছেন। তিনি মেডিক্যাল নয়, বরং রাজনৈতিক দিক থেকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছেন।’
পুতিন ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর কাসিয়ানভ রাশিয়ার বিরোধী দলে যোগ দেন এবং ক্রেমলিনের সবচেয়ে কট্টর সমালোচক হয়ে ওঠেন তিনি। কাসিয়ানভ বর্তমানে রাশিয়ার বিরোধী দল পিপলস ফ্রিডম পার্টি বা পারনাসের প্রধান।
তিনি বলেন, রাশিয়ার দুর্ধর্র্ষ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির সাবেক এজেন্ট পুতিন আগামী অক্টোবরে ৭০ বছরে পা রাখবেন। গত ২০ বছরে তিনি রাশিয়ায় একটি ভয়ের এবং দায়মুক্তির ব্যবস্থা তৈরি করেছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ দুই বছর ধরে চলতে পারে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন কাসিয়ানভ। তবে তিনি বলেছেন, ইউক্রেন জিতবে, এটা অনিবার্য। তবে ইউক্রেনের পতন ঘটলে পুতিনের পরবর্তী টার্গেট হবে বাল্টিক অঞ্চল।
ইউক্রেন যুদ্ধের ফল অবশ্য রাশিয়ার ভবিষ্যৎও নির্ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন কাসিয়ানভ। পুতিনকে হেয় করা উচিত নয় বলে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে একমত নন রুশ সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
যুদ্ধের অবসানে দখল করা ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে ইউক্রেনের প্রতি যে আহ্বান জানানো হয়েছে, সেটির সঙ্গেও দ্বিমত পোষণ করেছেন কাসিয়ানভ। তিনি বলেন, পুতিন এমন কী করেছেন যে, তিনি ইউক্রেন ভূখণ্ড পাবেন। এটা বাস্তবতা বিবর্জিত অবস্থান।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক /দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম 
























