বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইইউ প্রার্থীর মর্যাদা পেল ইউক্রেন

ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রার্থীর মর্যাদা প্রদানের পক্ষে ভোট দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটে বিপুল ভোট অর্জনের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের প্রার্থী সদস্যতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। ইউক্রেনের পক্ষে ভোট ছিল ৫২৯টি। ইউক্রেনের প্রার্থীর মর্যাদা প্রাপ্তির বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ৪৫টি।

প্রার্থীর মর্যাদা প্রাপ্তিতে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে টুইট করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিজয়। আমরা ১২০ দিন এবং ৩০ বছর ধরে অপেক্ষা করছি। এখন আমরা শত্রুকে পরাজিত করব।’

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা বলেন, ‘এটি ইউক্রেনকে শক্তিশালী করবে, এটি ইউরোপকে শক্তিশালী করবে। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য একটি সিদ্ধান্ত এবং এটি আমাদেরকে ইতিহাসের ডান দিকে রাখে।’ এই দিনকে ‘ইউরোপের জন্য শুভ দিন’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইন।

দীর্ঘদিন ধরে ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে আসছিল ইউক্রেনে। ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে বরাবরের মতো সোচ্চার ছিল মস্কো। যুদ্ধের আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছিলেন, ইউক্রেনকে কখনই ন্যাটোতে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হবে না। যার ফলশ্রুতিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে শুরু হয় রুশ সামরিক অভিযান।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জোরালো সমর্থন প্রদর্শনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা বৃহস্পতিবার ইউক্রেন ও মালদোভাকে ইইউ’র প্রার্থীর মর্যাদা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা কিয়েভকে আরও উচ্চ-প্রযুক্তির এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলায় সক্ষম রকেট সিস্টেম পাঠাচ্ছে।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের প্রধান শহরগুলো রাশিয়ান বাহিনী অবরুদ্ধ করে রেখেছে। গ্যাস ও শস্য রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ার পরে পশ্চিমে সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে ইউক্রেন ও মালদোভাকে ইইউ’র প্রার্থীর মর্যাদা ঘোষণা করলো।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কি তার দেশ এবং মালদোভা সম্পর্কে ইইউ’র সিদ্ধান্তকে ‘একটি অনন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসাবে স্বাগত জানিয়েছে। সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের এই দেশ দুটি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসেছে এবং এখন দেশ দুটি অবাধ চলাচল ও একটি সাধারণ বাজার সুবিধা পাবে।

জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ইইউ’র মধ্যে’। তিনি কয়েক সপ্তাহ ধরে ফোনের মাধ্যমে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জিতব, পুননির্মাণ  করব, ইইউতে প্রবেশ করব এবং তারপর বিশ্রাম নেবো অথবা সম্ভবত আমরা বিশ্রাম নেবো না।’

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বলেছেন, ইইউ নেতাদের সিদ্ধান্ত রাশিয়াকে ‘অত্যন্ত জোরালো সংকেত’ পাঠিয়েছে যে, ইউরোপীয়রা ইউক্রেনের পশ্চিমাপন্থী আকাঙ্ক্ষা সমর্থন করে। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইইউ প্রার্থীর মর্যাদা পেল ইউক্রেন

প্রকাশিত সময় : ০৪:০০:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২

ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রার্থীর মর্যাদা প্রদানের পক্ষে ভোট দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটে বিপুল ভোট অর্জনের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের প্রার্থী সদস্যতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। ইউক্রেনের পক্ষে ভোট ছিল ৫২৯টি। ইউক্রেনের প্রার্থীর মর্যাদা প্রাপ্তির বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ৪৫টি।

প্রার্থীর মর্যাদা প্রাপ্তিতে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে টুইট করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিজয়। আমরা ১২০ দিন এবং ৩০ বছর ধরে অপেক্ষা করছি। এখন আমরা শত্রুকে পরাজিত করব।’

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা বলেন, ‘এটি ইউক্রেনকে শক্তিশালী করবে, এটি ইউরোপকে শক্তিশালী করবে। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য একটি সিদ্ধান্ত এবং এটি আমাদেরকে ইতিহাসের ডান দিকে রাখে।’ এই দিনকে ‘ইউরোপের জন্য শুভ দিন’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইন।

দীর্ঘদিন ধরে ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে আসছিল ইউক্রেনে। ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে বরাবরের মতো সোচ্চার ছিল মস্কো। যুদ্ধের আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছিলেন, ইউক্রেনকে কখনই ন্যাটোতে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হবে না। যার ফলশ্রুতিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে শুরু হয় রুশ সামরিক অভিযান।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জোরালো সমর্থন প্রদর্শনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা বৃহস্পতিবার ইউক্রেন ও মালদোভাকে ইইউ’র প্রার্থীর মর্যাদা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা কিয়েভকে আরও উচ্চ-প্রযুক্তির এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলায় সক্ষম রকেট সিস্টেম পাঠাচ্ছে।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের প্রধান শহরগুলো রাশিয়ান বাহিনী অবরুদ্ধ করে রেখেছে। গ্যাস ও শস্য রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ার পরে পশ্চিমে সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে ইউক্রেন ও মালদোভাকে ইইউ’র প্রার্থীর মর্যাদা ঘোষণা করলো।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কি তার দেশ এবং মালদোভা সম্পর্কে ইইউ’র সিদ্ধান্তকে ‘একটি অনন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসাবে স্বাগত জানিয়েছে। সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের এই দেশ দুটি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসেছে এবং এখন দেশ দুটি অবাধ চলাচল ও একটি সাধারণ বাজার সুবিধা পাবে।

জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ইইউ’র মধ্যে’। তিনি কয়েক সপ্তাহ ধরে ফোনের মাধ্যমে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জিতব, পুননির্মাণ  করব, ইইউতে প্রবেশ করব এবং তারপর বিশ্রাম নেবো অথবা সম্ভবত আমরা বিশ্রাম নেবো না।’

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বলেছেন, ইইউ নেতাদের সিদ্ধান্ত রাশিয়াকে ‘অত্যন্ত জোরালো সংকেত’ পাঠিয়েছে যে, ইউরোপীয়রা ইউক্রেনের পশ্চিমাপন্থী আকাঙ্ক্ষা সমর্থন করে।