বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রীলঙ্কায় কর্মকর্তাদের ঘরে বসে কাজ করার নির্দেশ

শ্রীলঙ্কায় জ্বালানি সংকট তীব্র হওয়ায় দেশটির রাজধানী কলম্বোতে স্কুল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘরে বসে কাজ করার নির্দেশ।

দুই কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশ শ্রীলঙ্কা বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে রয়েছে। ফলে জরুরি আমদানি খাদ্য, ওষুধ বিশেষ করে জ্বালানির মূল্য পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি।

এক কথায় সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকট পার করছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। যেখানে জ্বালানির জন্য মানুষ রাস্তায় লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। 

এর মধ্যে পেট্রলের জন্য সড়কে লাইন ধরেছেন গাড়ির চালকরা। সোমবার লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা চালকদের দেওয়া হয়েছে টোকেন।

টোকেন পাওয়া অটোরিকশাচালক ডব্লিউ. ডি. শেলটন (৬৭) বলেন, আমি লাইনে দাঁড়িয়ে আছি চারদিন ধরে। এ সময়ের মধ্যে আমি ঠিকমতো খাইনি এবং ঘুমাইনি। আমরা আয় করতে পারছি না। ফলে আমাদের পরিবারের সদস্যদের মুখে তুলে দিতে পারছি না খাবার।

টোকেন পাওয়ার অর্থ হলো, তিনি পেট্রল পাবেন। এ জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হবে।

কলম্বোর কেন্দ্রে একটি ফুয়েল স্টেশনে জ্বালানির জন্য অপেক্ষারতদের মধ্যে ২৪ নম্বর অবস্থানে রয়েছেন শেলটন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া উপায়ও নেই। কারণ মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাড়িতে ফিরে যেতে পারছেন না তিনি। কেননা, ফিরে যাওয়ার মতো পেট্রল তার গাড়িতে নেই।

রোববার বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেছিলেন, আমাদের হাতে নয় হাজার টনের মতো ডিজেল ও ছয় হাজার টনের মতো পেট্রল রয়েছে। কিন্তু নতুন করে জ্বালানি আসার কোনো খবর নেই।

এদিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কর্মকর্তাদের ঘরে বসে কাজ করার জন্য বলেছে দেশটির সরকার। যখন বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বো এবং আশপাশের এলাকায় এক সপ্তাহর জন্য স্কুল বন্ধ রয়েছে।

গত সপ্তাহ থেকেই ফুয়েল স্টেশনগুলোর সামনে জ্বালানির জন্য লাইন দীর্ঘ হচ্ছিল।

শেলটন বলেন, এটি ট্রাজেডি, আমরা জানি না এর শেষ কবে হবে।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি প্রতিনিধি দল তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য শ্রীলঙ্কা সফর করছে। ভারত মহাসাগরীয় দেশটির আশা, বৃহস্পতিবারের আগে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে স্টাফ-লেভেল চুক্তিতে পৌঁছানোর। তবে তাৎক্ষণিক তহবিল পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

শ্রীলঙ্কায় কর্মকর্তাদের ঘরে বসে কাজ করার নির্দেশ

প্রকাশিত সময় : ০৬:৪৫:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জুন ২০২২

শ্রীলঙ্কায় জ্বালানি সংকট তীব্র হওয়ায় দেশটির রাজধানী কলম্বোতে স্কুল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘরে বসে কাজ করার নির্দেশ।

দুই কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশ শ্রীলঙ্কা বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে রয়েছে। ফলে জরুরি আমদানি খাদ্য, ওষুধ বিশেষ করে জ্বালানির মূল্য পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি।

এক কথায় সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকট পার করছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। যেখানে জ্বালানির জন্য মানুষ রাস্তায় লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। 

এর মধ্যে পেট্রলের জন্য সড়কে লাইন ধরেছেন গাড়ির চালকরা। সোমবার লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা চালকদের দেওয়া হয়েছে টোকেন।

টোকেন পাওয়া অটোরিকশাচালক ডব্লিউ. ডি. শেলটন (৬৭) বলেন, আমি লাইনে দাঁড়িয়ে আছি চারদিন ধরে। এ সময়ের মধ্যে আমি ঠিকমতো খাইনি এবং ঘুমাইনি। আমরা আয় করতে পারছি না। ফলে আমাদের পরিবারের সদস্যদের মুখে তুলে দিতে পারছি না খাবার।

টোকেন পাওয়ার অর্থ হলো, তিনি পেট্রল পাবেন। এ জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হবে।

কলম্বোর কেন্দ্রে একটি ফুয়েল স্টেশনে জ্বালানির জন্য অপেক্ষারতদের মধ্যে ২৪ নম্বর অবস্থানে রয়েছেন শেলটন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া উপায়ও নেই। কারণ মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাড়িতে ফিরে যেতে পারছেন না তিনি। কেননা, ফিরে যাওয়ার মতো পেট্রল তার গাড়িতে নেই।

রোববার বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেছিলেন, আমাদের হাতে নয় হাজার টনের মতো ডিজেল ও ছয় হাজার টনের মতো পেট্রল রয়েছে। কিন্তু নতুন করে জ্বালানি আসার কোনো খবর নেই।

এদিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কর্মকর্তাদের ঘরে বসে কাজ করার জন্য বলেছে দেশটির সরকার। যখন বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বো এবং আশপাশের এলাকায় এক সপ্তাহর জন্য স্কুল বন্ধ রয়েছে।

গত সপ্তাহ থেকেই ফুয়েল স্টেশনগুলোর সামনে জ্বালানির জন্য লাইন দীর্ঘ হচ্ছিল।

শেলটন বলেন, এটি ট্রাজেডি, আমরা জানি না এর শেষ কবে হবে।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি প্রতিনিধি দল তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য শ্রীলঙ্কা সফর করছে। ভারত মহাসাগরীয় দেশটির আশা, বৃহস্পতিবারের আগে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে স্টাফ-লেভেল চুক্তিতে পৌঁছানোর। তবে তাৎক্ষণিক তহবিল পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।