নিখোঁজের পর ‘ফিরে আসা’ আলোচিত ধর্মীয় বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানকে নিরাপদে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করায় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তার মামা আমিনুল ইসলাম।
শুক্রবার (১৮ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে রংপুর আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের সামনে অনুভূতি প্রকাশকালে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এর আগে রাত সাড়ে নয়টার দিকে রংপুর কোতোয়ালি আমলি আদালতে আবু ত্ব-হাসহ এবং তার সফরসঙ্গী আবু মুহিত আনছারী ও গাড়িচালক আমির উদ্দিনকে হাজির করা হয়। কোতোয়ালি আমলি আদালত-৪ এর বিচারক কে এম হাফিজুর রহমান তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর নিজ জিম্মায় তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার আদেশ দেন তিনি।
জবানবন্দি নেয়ার পর ত্ব-হাসহ তিনজনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে
এরপর আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমরা তাকে ফিরে পেয়েছি। এ জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া জানাই। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেশবাসীর কাছে চির কৃতজ্ঞ যে, সবাই তার (আবু ত্ব-হা) প্রতি এতো ভালোবসা দেখিয়েছে। তার বিষয়ে সবাই দোয়া করেছেন। খোঁজ-খবর নিয়ে আমাদের পাশে থেকেছেন। আপনাদের সবার মঙ্গল হোক।’
গত ১০ জুন দিবাগত রাত থেকে কোনো খোঁজ মিলছিল না আবু ত্ব-হা, তার দুই সঙ্গী আবু মুহিত আনছারী, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিনের। সেদিন বিকেল চারটার দিকে ওই তিনজনসহ আবু ত্ব-হা রংপুর থেকে ভাড়া করা একটি গাড়িতে ঢাকার পথে রওনা দেন। রাতে মোবাইল ফোনে সর্বশেষ কথা হলে তিনি সাভারে যাচ্ছেন বলে তার মাকে জানান।
এরপর রাত দুইটা ৩৬ মিনিটে প্রথম স্ত্রী হাবিবা নূরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় ত্ব-হার। তিনি সাভার যাচ্ছেন বলেই জানান স্ত্রীকে। তারপর থেকেই তাদের সকলের ফোন বন্ধ থাকায় আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পরে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি শেষে তাকে না পেয়ে ১১ জুন বিকেলে রংপুর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন ত্ব-হার মা আজেদা বেগম এবং আমির উদ্দিনের ভাই। তার খোঁজ চেয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনও করেন ত্ব-হার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারা।
নিখোঁজ হওয়া নিয়ে আলোচনার মধ্যে শুক্রবার ত্ব-হার খোঁজ মেলে। বিপ্লব মিয়া নামে এক প্রতিবেশী জানান, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবু ত্ব-হাকে তার শ্বশুর আজহারুল ইসলাম মন্ডলের বাড়িতে ঢুকতে দেখেন তিনি। পরে খবর পেয়ে বেলা তিনটার দিকে তাকে রংপুর নগরের আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টার পাড়ার ওই বাড়ি থেকে ত্ব-হাকে নিয়ে যায় পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধায় বন্ধু সিয়ামের বাসায় ব্যক্তিগত কারণে আত্মগোপনে ছিলেন চারজনেই। বন্ধু বাসায় না থাকলেও তার মায়ের কাছে ছিলেন তারা। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে ত্ব-হা আত্মগোপনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সফরসঙ্গীরাও তাদের ফোন বন্ধ করে ত্ব-হার কাছে রেখে দেন।
উদ্ধারের পর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তাকে রংপুর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে সংবাদ সম্মেলনে রংপুর মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ক্রাইম ডিভিশনের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, মা ও ভাইয়ের জিডির সূত্রে আমরা (ত্ব-হার) অনুসন্ধান করতে থাকি। আমরা গোপন সূত্রে জানতে পারি, ত্ব-হা চারতলা মোড়ের পাশে আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টার পাড়ায় তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে আছেন। সেই সংবাদ পেয়ে আমরা তাকে নিয়ে আসি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আমরা অপর সঙ্গীদেরও সন্ধান পাই। এরপর গাড়িচালক আমির উদ্দিন ও আবু মুহিত আনছারীকেও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।

দৈনিক দেশ নিউজ বিডি ডটকম ডেস্ক 

























