রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘শতভাগ বিদ্যুতের দেশ বলে হাতির ঝিলে ফানুস উড়ল, কিন্তু আজকে বিদ্যুৎ পাচ্ছি না’

এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত কেন আসলো? যখন শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি, তারপরও কেন আসতে হচ্ছে? আগে লোডশেডিংয়ে মানুষকে পে করতে হয়নি এখন মিউজিয়ামে যাওয়া লোডশেডিংকে ফেরত এনে পে করতে হচ্ছে। লোডশেডিং সত্ত্বেও কেন মানুষকে পেমেন্ট করতে হচ্ছে-সেটিই বড় প্রশ্ন। 

সোমবার (১৮ জুলাই) বিকালে রাজধানীর গুলশানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক বিদ্যুৎমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এসব বলেন। 

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, সরকারের প্ল্যানে বলা ছিলো ৬৪ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন থাকবে সরকারের হাতে, আর ৩৬ ভাগ থাকবে বেসরকারি হাতে। সরকার তড়িঘড়ি করে বেজ প্ল্যান্টগুলো প্রাইভেটে দিয়ে দিলো। সবকিছু মিলিয়ে আমি মনে করি এই প্ল্যান খারাপ ছিলো, দূর্ভিসন্ধীমূলক ছিলো এবং দুর্নীতিগ্রস্থ ছিলো। যার ফলে আমাদের বিদ্যুতের যে আইন, সেগুলো জলাঞ্জলি দিয়ে সংসদে আইন পাশ করে যাকে ইচ্ছে তাকে পাওয়ার স্টেশন দিয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতের দেশ বলে হাতির ঝিলে অনেক ফানুস উড়লো, কিন্তু আজকে এসে আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। 

তিনি বলেন, যেটি করার দরকার সেটি তারা করে নাই। বিদ্যুৎ উৎপাদন সরকারের হাতে রাখার দরকার ছিল, সরকার যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতো তাহলে আজকের পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। অন্ধকারে থেকে পেমেন্ট করতে হচ্ছে, যেটি অতীতে দিতে হয়নি। দুর্নীতিপুষ্ট প্রকল্পগুলো করে, আনন্দ-ফূর্তি করে সরকার সবাইকে দেখানোর চেষ্টা করছে। যার ফলে আজ আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। আমাদের সরকারি কোষাগার থেকে টাকা যাবে পাওয়ার স্টেশন মালিকদের কাছে,তারা পাওয়ার স্টেশন না চালিয়ে টাকা নিয়ে যাবে। আর শতভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের জনগণ। এ যে সরকার অনিয়ম করে গেলো,এটা আমাদের দেশ ও জাতিকে অনেকদিন বহন করতে হবে। 

টুকু বলেন, বিদ্যুৎ এমন একটি খাত যা সংরক্ষণ করা যায় না, উৎপাদন করলে খরচ হয়ে যাবে। এই খাতকে জনগণের সেবামূলক খাতে দিবে হবে কিন্তু আবার কমার্শিয়ালিও চালাইতে হবে। না চালাইলে খরচ উঠবে না। সে কারণে সরকারের হাতে রাখলে যা হয়, সরকার অনেক সাশ্রয় করতে পারে, অনেক জিনিসের দাম-টাম কমাই রাখতে পারে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ কমার্শিয়ালি চলে গেলো। 

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, আমরা যেটা প্ল্যান করেছিলাম, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন আমরা প্রাইভেটকে দিয়ে দিবো। সরকারের কাজ না বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যুতের বিল তোলা। কিন্তু এর উল্টোটা করেছে, জেনারেশন দিয়ে দেয়া হয়েছে প্রাইভেট সেক্টরকে। এখন এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে। লস এসেসম্যান্ট না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে, এখন সেই ফল ভোগ করতে হচ্ছে। 

সরকারের নেয়া উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন হলে বিদ্যুৎ ঘাটতি কাটবে কিনা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলা করার জন্য এগুলো করেনি। এগুলো করেছে রিজার্ভে  টান পড়েছে তাই। তেল, গ্যাস আমদানি করতে পারছে না। যার ফলে কম বিদ্যুৎ খরচ হলে আমদানিও কম লাগবে সে জন্য। সারাদিন এতো ঢোল পেটালো সিঙ্গাপুর, ব্যাংককে ছাড়িয়ে গেছি আমরা, সেই রিজার্ভ এখন কোথায়। হঠাৎ করে নাই হয়ে গেলো কেন। আজকে দেশ অর্থনৈতিক ক্রাইসিসে দাঁড়িয়ে গেছে এবং এটার জন্য আমি পুরোপুরি সরকারকে দায়ী করি।

এতে উপস্থিত ছিলেন আহ্বায়ক বিএনপি মিডিয়া সেল  জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, শায়রুল কবির খান-দেশ রূপান্তর

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

‘শতভাগ বিদ্যুতের দেশ বলে হাতির ঝিলে ফানুস উড়ল, কিন্তু আজকে বিদ্যুৎ পাচ্ছি না’

প্রকাশিত সময় : ১০:১৫:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই ২০২২

এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত কেন আসলো? যখন শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি, তারপরও কেন আসতে হচ্ছে? আগে লোডশেডিংয়ে মানুষকে পে করতে হয়নি এখন মিউজিয়ামে যাওয়া লোডশেডিংকে ফেরত এনে পে করতে হচ্ছে। লোডশেডিং সত্ত্বেও কেন মানুষকে পেমেন্ট করতে হচ্ছে-সেটিই বড় প্রশ্ন। 

সোমবার (১৮ জুলাই) বিকালে রাজধানীর গুলশানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক বিদ্যুৎমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এসব বলেন। 

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, সরকারের প্ল্যানে বলা ছিলো ৬৪ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন থাকবে সরকারের হাতে, আর ৩৬ ভাগ থাকবে বেসরকারি হাতে। সরকার তড়িঘড়ি করে বেজ প্ল্যান্টগুলো প্রাইভেটে দিয়ে দিলো। সবকিছু মিলিয়ে আমি মনে করি এই প্ল্যান খারাপ ছিলো, দূর্ভিসন্ধীমূলক ছিলো এবং দুর্নীতিগ্রস্থ ছিলো। যার ফলে আমাদের বিদ্যুতের যে আইন, সেগুলো জলাঞ্জলি দিয়ে সংসদে আইন পাশ করে যাকে ইচ্ছে তাকে পাওয়ার স্টেশন দিয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতের দেশ বলে হাতির ঝিলে অনেক ফানুস উড়লো, কিন্তু আজকে এসে আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। 

তিনি বলেন, যেটি করার দরকার সেটি তারা করে নাই। বিদ্যুৎ উৎপাদন সরকারের হাতে রাখার দরকার ছিল, সরকার যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতো তাহলে আজকের পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। অন্ধকারে থেকে পেমেন্ট করতে হচ্ছে, যেটি অতীতে দিতে হয়নি। দুর্নীতিপুষ্ট প্রকল্পগুলো করে, আনন্দ-ফূর্তি করে সরকার সবাইকে দেখানোর চেষ্টা করছে। যার ফলে আজ আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। আমাদের সরকারি কোষাগার থেকে টাকা যাবে পাওয়ার স্টেশন মালিকদের কাছে,তারা পাওয়ার স্টেশন না চালিয়ে টাকা নিয়ে যাবে। আর শতভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের জনগণ। এ যে সরকার অনিয়ম করে গেলো,এটা আমাদের দেশ ও জাতিকে অনেকদিন বহন করতে হবে। 

টুকু বলেন, বিদ্যুৎ এমন একটি খাত যা সংরক্ষণ করা যায় না, উৎপাদন করলে খরচ হয়ে যাবে। এই খাতকে জনগণের সেবামূলক খাতে দিবে হবে কিন্তু আবার কমার্শিয়ালিও চালাইতে হবে। না চালাইলে খরচ উঠবে না। সে কারণে সরকারের হাতে রাখলে যা হয়, সরকার অনেক সাশ্রয় করতে পারে, অনেক জিনিসের দাম-টাম কমাই রাখতে পারে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ কমার্শিয়ালি চলে গেলো। 

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, আমরা যেটা প্ল্যান করেছিলাম, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন আমরা প্রাইভেটকে দিয়ে দিবো। সরকারের কাজ না বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যুতের বিল তোলা। কিন্তু এর উল্টোটা করেছে, জেনারেশন দিয়ে দেয়া হয়েছে প্রাইভেট সেক্টরকে। এখন এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে। লস এসেসম্যান্ট না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে, এখন সেই ফল ভোগ করতে হচ্ছে। 

সরকারের নেয়া উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন হলে বিদ্যুৎ ঘাটতি কাটবে কিনা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলা করার জন্য এগুলো করেনি। এগুলো করেছে রিজার্ভে  টান পড়েছে তাই। তেল, গ্যাস আমদানি করতে পারছে না। যার ফলে কম বিদ্যুৎ খরচ হলে আমদানিও কম লাগবে সে জন্য। সারাদিন এতো ঢোল পেটালো সিঙ্গাপুর, ব্যাংককে ছাড়িয়ে গেছি আমরা, সেই রিজার্ভ এখন কোথায়। হঠাৎ করে নাই হয়ে গেলো কেন। আজকে দেশ অর্থনৈতিক ক্রাইসিসে দাঁড়িয়ে গেছে এবং এটার জন্য আমি পুরোপুরি সরকারকে দায়ী করি।

এতে উপস্থিত ছিলেন আহ্বায়ক বিএনপি মিডিয়া সেল  জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, শায়রুল কবির খান-দেশ রূপান্তর