শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কানাডায় গিয়ে ক্ষমা চাইলেন পোপ

দশকের পর দশক ধরে অত্যাচার চলেছে ক্যাথলিক গির্জার নিয়ন্ত্রণাধীন আবাসিক স্কুলগুলোতে। ধর্মের বেড়াজালে কানাডার আদিবাসী শিশুদের উপরে হওয়া সেই নির্যাতনের জন্য ক্ষমা চাইলেন পোপ ফ্রান্সিস।

সোমবার তিনি কানাডার আলবার্ট অঞ্চল পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে পোপ তাদের দুঃখের কথা শুনেন এবং বলেন যারা তাদের উপর এমন নিষ্ঠুর নির্যাতন করেছেন তিনি তাদের জন্য ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। খবর আল জাজিরা।

এ সময় তিনি ক্যাথলিক গির্জার গায়ে যে দীর্ঘদিনের কলঙ্কের দাগ লেগে রয়েছে, তা নিয়েও কথা বলেন পোপ ফ্রান্সিস। ১৮০০ শতকের শেষ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত, কানাডায় অন্তত ১৩৯টি স্কুল চলত গির্জার নিয়ন্ত্রণে। এই সব আবাসিক স্কুলে কানাডার আদিবাসী, জনজাতি শিশুদের পাঠিয়ে দিত সরকার। এক রকম কয়েদ করে রাখা হত তাদের। ছোট ছোট বাচ্চাদের বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল তাদের পরিবার থেকে। নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে গিয়েছিল ওরা। সেই সঙ্গে চলত শারীরিক ও যৌন নির্যাতন। অত্যাচার করত এই সব স্কুলের হেডমাস্টার ও অন্য শিক্ষকরা। ফলে অসুস্থ হয়ে হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হয়।

গত বছরও ব্রিটিশ কলম্বিয়া ও সাসকাটচেওয়ানের দু’টি আবাসিক স্কুলে কয়েকশো পরিচয়হীন কবর মিলেছে। কানাডার ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, গির্জার অবহেলা, অত্যাচার, নির্যাতনের শিকার হয়ে এই সব আবাসিক স্কুলে ৪ হাজারেরও বেশি আদিবাসী শিশুর প্রাণ গিয়েছিল। এখন পর্যন্ত ১৩শ’র বেশি কবর মিলেছে। কানাডায় দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, পোপকে ক্ষমা চাইতে হবে। এই অপরাধ স্বীকার করতেই হবে। এ দাবি থেকেই মূলত পোপ কানাডা সফর করেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

কানাডায় গিয়ে ক্ষমা চাইলেন পোপ

প্রকাশিত সময় : ০৪:১৬:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২

দশকের পর দশক ধরে অত্যাচার চলেছে ক্যাথলিক গির্জার নিয়ন্ত্রণাধীন আবাসিক স্কুলগুলোতে। ধর্মের বেড়াজালে কানাডার আদিবাসী শিশুদের উপরে হওয়া সেই নির্যাতনের জন্য ক্ষমা চাইলেন পোপ ফ্রান্সিস।

সোমবার তিনি কানাডার আলবার্ট অঞ্চল পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে পোপ তাদের দুঃখের কথা শুনেন এবং বলেন যারা তাদের উপর এমন নিষ্ঠুর নির্যাতন করেছেন তিনি তাদের জন্য ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। খবর আল জাজিরা।

এ সময় তিনি ক্যাথলিক গির্জার গায়ে যে দীর্ঘদিনের কলঙ্কের দাগ লেগে রয়েছে, তা নিয়েও কথা বলেন পোপ ফ্রান্সিস। ১৮০০ শতকের শেষ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত, কানাডায় অন্তত ১৩৯টি স্কুল চলত গির্জার নিয়ন্ত্রণে। এই সব আবাসিক স্কুলে কানাডার আদিবাসী, জনজাতি শিশুদের পাঠিয়ে দিত সরকার। এক রকম কয়েদ করে রাখা হত তাদের। ছোট ছোট বাচ্চাদের বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল তাদের পরিবার থেকে। নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে গিয়েছিল ওরা। সেই সঙ্গে চলত শারীরিক ও যৌন নির্যাতন। অত্যাচার করত এই সব স্কুলের হেডমাস্টার ও অন্য শিক্ষকরা। ফলে অসুস্থ হয়ে হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হয়।

গত বছরও ব্রিটিশ কলম্বিয়া ও সাসকাটচেওয়ানের দু’টি আবাসিক স্কুলে কয়েকশো পরিচয়হীন কবর মিলেছে। কানাডার ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, গির্জার অবহেলা, অত্যাচার, নির্যাতনের শিকার হয়ে এই সব আবাসিক স্কুলে ৪ হাজারেরও বেশি আদিবাসী শিশুর প্রাণ গিয়েছিল। এখন পর্যন্ত ১৩শ’র বেশি কবর মিলেছে। কানাডায় দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, পোপকে ক্ষমা চাইতে হবে। এই অপরাধ স্বীকার করতেই হবে। এ দাবি থেকেই মূলত পোপ কানাডা সফর করেছেন।