রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মমতাজউদ্দিন একাডেমিক ভবনের সামনে এটি ঘটে। শ্লীলতাহানির খবর শুনে ভুক্তভোগীর বন্ধুরা সেখানে গেলে তাদের ওপর হামলা করে নির্যাতনকারীর বন্ধুরা। এতে তিনজন আহত হয়।ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাম নাজমা খাতুন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত রাকিব আল হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।
তার অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, একই জেলায় বাড়ি হওয়ায় রাকিব আল হাসানের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিলো তার। সে তাকে মাঝে মাঝেই বিরক্ত করতো। সে ও তার বান্ধবী বাইরে খেয়ে হলে ফেরার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মমতাজউদ্দিন কলা ভবনের সামনে রাকিবের সঙ্গে তার দেখা হয় এবং রাকিব তাকে কথা বলার জন্য আটকায়। এক পর্যায়ে সে জোর করে চলে আসতে চাইলে রাকিব পেছন থেকে তাকে টেনে ধরে এবং এর ফলে তার জামা ছিড়ে যায়। পরে রাকিব তাকে থাপ্পড় মারে।
এ বিষয়ে শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত রাকিব আল হাসান বলেন, আমার দুইটা পরীক্ষার্থী আসার কথা ছিলো। তাই মমতাজউদ্দিন ভবনের সামনে এক জায়গায় আমার এক মেয়ে বান্ধবীসহ বসে অপেক্ষা করছিলাম। এমন সময় নাজমা তার এক বান্ধবীসহ আমার সামনে এসে জিজ্ঞেস করে আমার সঙ্গে থাকা মেয়েটা কে। আমি বলি আমার বান্ধবী। এরপর সে বলে ‘এর সঙ্গে তোর কি?’৷ আমি বলি যে, আমার দুইটা পরীক্ষার্থী আসবে। তাদেরকে আমার ওই বান্ধবীর কাছে রাখবো। তখন সে বলে যে, ‘এটাতো হতে পারেনা। আমি ওর সঙ্গে কথা বলবো।’
তখন আমি তাকে বলি যে, ‘দেখো, চার-পাচ মাস আগে তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিলো, এখন সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে গেছে। তুমি আমার সঙ্গে কথা বলো।’ একপর্যায়ে, সে আমার গালে থাপ্পড় মারে। তখন, আমিও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে, আমিও তাকে একটা থাপ্পড় মারি। এ সময় রাস্তার বিপরীত দিক থেকে তার চার-পাঁচজন বন্ধু আসে। তারমধ্য থেকে একজন আমাকে চড়-থাপ্পড় মারে। আরেকজন কিল-ঘুষি মারে। এ সময়, ওখানে একজন ভাই ছিলেন, তিনি আমাদের সরিয়ে দেন।
এ সময় নাজমা বলতে থাকে ‘তুই আমাকে মারলি কেনো?’। কিন্তু সেই কিন্তু আমাকে আগে মেরেছিলো। এ সময় নাজমারা ছাত্র উপদেষ্টা স্যারকে কল দেয়। এর দুই-তিন মিনিটের মধ্যে স্যার ওখানে উপস্থিত হন। আশপাশে আমার বন্ধুরা ছিলো, তারা চলে আসে। এর মধ্য থেকে আমার এক বন্ধু স্যারের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় আমি ও আমার এক বন্ধুর ওপর আবার আক্রমণ করা হয়। এ সময় স্যার আক্রমণটা থামানোর চেষ্টা করেন।
ঘটনাস্থলে থাকা তার কয়েকজন বন্ধুর নাম জানতে চাইলে, কিছু না বলে অভিযুক্ত রাকিব কলটি কেটে দেন। এদিকে ছাত্র উপদেষ্টা এম. তারেক নূর বলেন, বিষয়টি শুনে মতিহার থানার ওসিসহ আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। নাজমাকে শান্ত করে তার হলে পাঠিয়ে দেই। এরপর অন্যান্য ছেলেরা যারা ছিলো, তাদের নিয়ে আমার দপ্তরের দিকে রওনা দেই। এ সময় নবাব আব্দুল লতিফ হল ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন ও মতিহার হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে নাজমার বন্ধুদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি আমি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি এবং আজ এসে তাদের প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবো। আমরা যথাযথ এবং কঠোর পদক্ষেপ নেবো।

নিজস্ব প্রতিবেদক: 























