শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘তাইওয়ানে চীনের ভয়ঙ্কর মহড়াই স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে’

তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে চীন, যা একটি নতুন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে সামনে আসছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, উপকূলে একই ধরনের সশস্ত্র মহড়া ‘নিয়মিত’ করতে পারে চীন বা দ্বীপের খুব কাছাকাছি আরও বেশি আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তাইওয়ানের প্রধান দ্বীপের চারপাশে সমুদ্রে আগুন নির্বাপণের অনুশীলন চালাচ্ছে। মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইপে সফরকে কেন্দ্র করে সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে চীন।

বেইজিং তাইওয়ানকে তাদের একটি প্রদেশ হিসেবে দাবি করে। কিন্তু দ্বীপটির সার্বভৌমত্বের বিষয়ে বিদেশি সমর্থন রয়েছে। দ্বীপটির অভিযোগ, পেলোসির সফরের অজুহাতে চীন আক্রমণের প্রস্তুতি নিয়েছে।

তাইওয়ান উপকূলে চীনের অনুশীলন চলছেই। গত সপ্তাহে সবথেকে বড় সামরিক মহড়া শেষ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এখন বোঝার চেষ্টার করছেন, কীভাবে ওই অঞ্চলের গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন হয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতের জন্য কী অপেক্ষা করছে।

লন্ডনের কিংস কলেজের পূর্ব এশিয়ার যুদ্ধ ও কৌশলের অধ্যাপক অ্যালেসিও পাতালানো বলেন, ‘এটি তাইওয়ানের মানুষের হৃদয়ে তীব্র ভয়ের অনুভূতি তৈরি করেছে। সামরিক উপস্থিতির ফলে রাজনৈতিক যে বার্তা রয়েছে তা হলো, প্রকাশ্যে আরও আক্রমণাত্মক পদক্ষেপগুলো স্বাভাবিকভাবেই ঘটানোর বাস্তব ঝুঁকি রয়েছে।’

কিছু বিশ্লেষক বলেছেন, বেইজিং তার মহড়া দিয়ে কিছু অর্জন করেছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। পেন্টাগনের এক  কর্মকর্তা এ সপ্তাহে বলেন, চীন আগামী দুই বছরের মধ্যে তাইওয়ানকে সামরিকভাবে পুনর্দখল করার চেষ্টা করবে না, সেই চিন্তার ব্যাপারে তাদের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

তাইওয়ান, চীন ও জাপানের সরকারি তথ্য বিশ্লেষণ করে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত সপ্তাহে পিএলএ তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে কমপক্ষে ১৪০টি বিমান পাঠিয়েছে। যার মধ্যে তাইওয়ান প্রণালীর মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করা মধ্যরেখার বরাবর ১০০টি বিমান উড়েছে। এগুলোর মধ্যে ফাইটার জেট, রিকনেসান্স প্লেন, এইচ-৬ বোমারু বিমান এবং একটি জ্বালানি সরবরাহকারী বিমান ছিল।

ওই অঞ্চলের মধ্যরেখা পার হয়ে ৪১টি চীনা জাহাজ চলাচল করেছে। বেইজিং তাইওয়ান ভূখন্ডের জলসীমাকে নিজেদের দাবি করে, যা নিয়ে তাইওয়ানের সঙ্গে বিতর্ক চলে আসছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

‘তাইওয়ানে চীনের ভয়ঙ্কর মহড়াই স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে’

প্রকাশিত সময় : ১১:০৭:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ অগাস্ট ২০২২

তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে চীন, যা একটি নতুন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে সামনে আসছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, উপকূলে একই ধরনের সশস্ত্র মহড়া ‘নিয়মিত’ করতে পারে চীন বা দ্বীপের খুব কাছাকাছি আরও বেশি আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তাইওয়ানের প্রধান দ্বীপের চারপাশে সমুদ্রে আগুন নির্বাপণের অনুশীলন চালাচ্ছে। মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইপে সফরকে কেন্দ্র করে সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে চীন।

বেইজিং তাইওয়ানকে তাদের একটি প্রদেশ হিসেবে দাবি করে। কিন্তু দ্বীপটির সার্বভৌমত্বের বিষয়ে বিদেশি সমর্থন রয়েছে। দ্বীপটির অভিযোগ, পেলোসির সফরের অজুহাতে চীন আক্রমণের প্রস্তুতি নিয়েছে।

তাইওয়ান উপকূলে চীনের অনুশীলন চলছেই। গত সপ্তাহে সবথেকে বড় সামরিক মহড়া শেষ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এখন বোঝার চেষ্টার করছেন, কীভাবে ওই অঞ্চলের গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন হয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতের জন্য কী অপেক্ষা করছে।

লন্ডনের কিংস কলেজের পূর্ব এশিয়ার যুদ্ধ ও কৌশলের অধ্যাপক অ্যালেসিও পাতালানো বলেন, ‘এটি তাইওয়ানের মানুষের হৃদয়ে তীব্র ভয়ের অনুভূতি তৈরি করেছে। সামরিক উপস্থিতির ফলে রাজনৈতিক যে বার্তা রয়েছে তা হলো, প্রকাশ্যে আরও আক্রমণাত্মক পদক্ষেপগুলো স্বাভাবিকভাবেই ঘটানোর বাস্তব ঝুঁকি রয়েছে।’

কিছু বিশ্লেষক বলেছেন, বেইজিং তার মহড়া দিয়ে কিছু অর্জন করেছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। পেন্টাগনের এক  কর্মকর্তা এ সপ্তাহে বলেন, চীন আগামী দুই বছরের মধ্যে তাইওয়ানকে সামরিকভাবে পুনর্দখল করার চেষ্টা করবে না, সেই চিন্তার ব্যাপারে তাদের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

তাইওয়ান, চীন ও জাপানের সরকারি তথ্য বিশ্লেষণ করে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত সপ্তাহে পিএলএ তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে কমপক্ষে ১৪০টি বিমান পাঠিয়েছে। যার মধ্যে তাইওয়ান প্রণালীর মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করা মধ্যরেখার বরাবর ১০০টি বিমান উড়েছে। এগুলোর মধ্যে ফাইটার জেট, রিকনেসান্স প্লেন, এইচ-৬ বোমারু বিমান এবং একটি জ্বালানি সরবরাহকারী বিমান ছিল।

ওই অঞ্চলের মধ্যরেখা পার হয়ে ৪১টি চীনা জাহাজ চলাচল করেছে। বেইজিং তাইওয়ান ভূখন্ডের জলসীমাকে নিজেদের দাবি করে, যা নিয়ে তাইওয়ানের সঙ্গে বিতর্ক চলে আসছে।