বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিয়ের স্বীকৃতির দাবিতে বরের বাড়িতে স্ত্রীর অনশন

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় বিয়ের স্বীকৃতির দাবিতে স্বামীর বাড়িতে দুইদিন ধরে অনশন শুরু করেছেন লামিয়া আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূ। গত বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত উপজেলার পূর্ব কমলাপুর গ্রামে স্বামী সজিব সরদারের বাড়িতে অনশন করে আসছিলেন লামিয়া। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, লামিয়া ডাসার ইউনিয়নের পূর্ব কমলাপুর গ্রামের খলিল সরদারের মেয়ে।

দীর্ঘ দুই তিন বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর একই এলাকার হাসান সরদারের ছেলে সজিব সরদারের সাথে পালিয়ে বিয়ে হয়। এরপর তারা উভয়েই ঢাকায় ছেলের বোনের পাশের বাসায় বাসা ভাড়া নিয়ে প্রায় দেড় বছরের মতো সংসার করেন। স্বামী সজিব সরদার বিয়ের দেড় বছর যেতে না যেতেই যৌতুকের জন্য প্রতিনিয়ত মারধর করত লামিয়াকে।

লামিয়া সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পরে তাদের উভয়ের পরিবার সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় তারা ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর পালিয়ে বিয়ে করেন। ঢাকায় তারা দীর্ঘ দেড় বছর সংসার করেন। সংসার করার পর স্বামী সজিবের পরিবারের সাথে যোগাযোগ হয় এবং সজিবের পরিবার থেকে সজিবকে বিদেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তাব করে এবং মেয়ের কাছে ২ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবি করেন। পরবর্তীকালে লামিয়া বলেন- আমি আমার মা-বাবা ও পরিবারকে তোমার জন্য ত্যাগ করে আসছি। তাদের সাথে আমার সম্পর্ক নেই। কিভাবে আমি তাদের কাছে থেকে টাকা এনে দিব।পরে সজিব আমাকে গত ২ আগস্ট ঢাকা ভাড়া বাসায় রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়।আমার সাথে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখে। আমি নিরুপায় হয়ে, সজিবের বাড়ীতে আসলে, তার পরিবার আমাকে মেনে বিয়ের সম্পর্ক মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। আমি এখন আমার পরিবারের কাছেও যেতে পারছিনা।এই মুহূর্তে আমি নিরুপায়।

এ দিকে অভিযুক্ত স্বামী সজিব সরদার বাড়িতে এসে ওই মেয়েকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তার স্বামীর বিরুদ্ধে পূর্বে থানায় মামলা থাকায়, গতকাল গ্রেফতার করে পুলিশ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেয়েটিকে ওই স্থান থেকে উদ্ধার করে তার পরিবার বাড়িতে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ডাসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম ভাসাই শিকদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। আমি এলাকার মানুষের কাছে শুনেছি। তারা সম্পর্কে একে অপরের আত্মীয় হয়। আমার কাছে যদি আসে দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করব।

এ বিষয়ে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বিয়ের স্বীকৃতির দাবিতে বরের বাড়িতে স্ত্রীর অনশন

প্রকাশিত সময় : ১২:০৬:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ অগাস্ট ২০২২

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় বিয়ের স্বীকৃতির দাবিতে স্বামীর বাড়িতে দুইদিন ধরে অনশন শুরু করেছেন লামিয়া আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূ। গত বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত উপজেলার পূর্ব কমলাপুর গ্রামে স্বামী সজিব সরদারের বাড়িতে অনশন করে আসছিলেন লামিয়া। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, লামিয়া ডাসার ইউনিয়নের পূর্ব কমলাপুর গ্রামের খলিল সরদারের মেয়ে।

দীর্ঘ দুই তিন বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর একই এলাকার হাসান সরদারের ছেলে সজিব সরদারের সাথে পালিয়ে বিয়ে হয়। এরপর তারা উভয়েই ঢাকায় ছেলের বোনের পাশের বাসায় বাসা ভাড়া নিয়ে প্রায় দেড় বছরের মতো সংসার করেন। স্বামী সজিব সরদার বিয়ের দেড় বছর যেতে না যেতেই যৌতুকের জন্য প্রতিনিয়ত মারধর করত লামিয়াকে।

লামিয়া সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পরে তাদের উভয়ের পরিবার সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় তারা ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর পালিয়ে বিয়ে করেন। ঢাকায় তারা দীর্ঘ দেড় বছর সংসার করেন। সংসার করার পর স্বামী সজিবের পরিবারের সাথে যোগাযোগ হয় এবং সজিবের পরিবার থেকে সজিবকে বিদেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তাব করে এবং মেয়ের কাছে ২ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবি করেন। পরবর্তীকালে লামিয়া বলেন- আমি আমার মা-বাবা ও পরিবারকে তোমার জন্য ত্যাগ করে আসছি। তাদের সাথে আমার সম্পর্ক নেই। কিভাবে আমি তাদের কাছে থেকে টাকা এনে দিব।পরে সজিব আমাকে গত ২ আগস্ট ঢাকা ভাড়া বাসায় রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়।আমার সাথে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখে। আমি নিরুপায় হয়ে, সজিবের বাড়ীতে আসলে, তার পরিবার আমাকে মেনে বিয়ের সম্পর্ক মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। আমি এখন আমার পরিবারের কাছেও যেতে পারছিনা।এই মুহূর্তে আমি নিরুপায়।

এ দিকে অভিযুক্ত স্বামী সজিব সরদার বাড়িতে এসে ওই মেয়েকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তার স্বামীর বিরুদ্ধে পূর্বে থানায় মামলা থাকায়, গতকাল গ্রেফতার করে পুলিশ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেয়েটিকে ওই স্থান থেকে উদ্ধার করে তার পরিবার বাড়িতে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ডাসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম ভাসাই শিকদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। আমি এলাকার মানুষের কাছে শুনেছি। তারা সম্পর্কে একে অপরের আত্মীয় হয়। আমার কাছে যদি আসে দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করব।

এ বিষয়ে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।