শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আফগানিস্তানের অর্ধশত শহর তালেবান নিয়ন্ত্রণে

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের দুটি প্রাদেশিক রাজধানী নিজেদের দখলে নিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এর মধ্য দিয়ে সব মিলে অন্তত ৫০টি জেলায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সমর্থ হয়েছে তারা।
এদিকে আগামী ২৫ জুন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার শুরু হওয়ার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি আফগান বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের সংঘর্ষ অনেক বেড়ে গেছে। হোয়াইট হাউসের সেই বৈঠকে তালেবান নিয়ন্ত্রণের উপায় নিয়েই বাইডেনের সঙ্গে কথা বলবেন ঘানি।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০ জুন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে তারা অনেক প্রত্যন্ত জেলায় আক্রমণ চালিয়েছে। আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছে সরকারি বাহিনীর শত শত সেনা। কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানীর প্রবেশপথ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে তালেবান। এর আগেও ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কিছুক্ষণের জন্য তারা এই শহরের দখল নিয়েছিল। পরে মার্কিন বিমান হামলায় পিছু হটতে বাধ্য হয় তারা। কুন্দুজ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য আমরুদ্দিন ওয়ালি বলেন, এখনও আমি গুলির শব্দ পাচ্ছি। আমাদের গলিতে গলিতে ঢুকে পড়েছে তালেবান। সারা শহরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের জন্য এমন পরিস্থিতি বিব্রতকর। মার্কিনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সেনাদের এখন বেশিরভাগই রাজধানী কাবুলে অবস্থান করছে।
কুন্দুজের পশ্চিম দিকে ফারিয়াব প্রদেশের রাজধানী মাইমাতেও অবস্থান করছে তালেবানরা। সেখানে রোববার রাতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাদের সংঘাত হয়। বিগত দিনগুলোতে তারা আশপাশের জেলাগুলো দখলে নিয়েছিল। সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছে সরকারি এলিট বাহিনীর অন্তত ২০ সদস্য। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ১ মে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫০টি জেলা দখলে নিয়েছে তারা। এর মধ্যে খুবই অল্পসংখ্যক জেলা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হলে আফগান বাহিনী দুর্বল হয়ে পড়বে। ফারিয়াব রাজধানীন উপপ্রধান সেবঘাতুল্লাহ সেলাব বলেন, কাবুল থেকে যদি সহযোগিতা আসত তাহলে তালেবানরা আমাদের শহরে প্রবেশ করতে পারত না। বিগত সপ্তাহগুলোতে মার্কিন বিমান হামলার পরিমাণ অনেক কমে গেছে। তবে আফগান বিমানবাহিনী হামলা অব্যাহত রেখেছে।
আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রুহুল্লাহ আহমেদের দাবি, তারা নতুন পরিকল্পনা করছে। কৌশলগত কারণে নিজেদের সেনা সরিয়ে নিয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন আগামী ২৫ জুন শুক্রবার আফগান প্রেসিডেন্ট ঘানি ও জাতীয় ঐকমত্যের জন্য গঠিত শীর্ষ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সামনাসামনি অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে বাইডেন ঘানি ও আবদুল্লাহকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করবেন যে, যুক্তরাষ্ট্র আফগান জনগণের জন্য কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে। এ ছাড়া দেশটি সশস্ত্র গোষ্ঠীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠবে না বলেও নিশ্চিয়তা দেবেন বাইডেন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

আফগানিস্তানের অর্ধশত শহর তালেবান নিয়ন্ত্রণে

প্রকাশিত সময় : ১০:২৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের দুটি প্রাদেশিক রাজধানী নিজেদের দখলে নিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এর মধ্য দিয়ে সব মিলে অন্তত ৫০টি জেলায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সমর্থ হয়েছে তারা।
এদিকে আগামী ২৫ জুন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার শুরু হওয়ার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি আফগান বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের সংঘর্ষ অনেক বেড়ে গেছে। হোয়াইট হাউসের সেই বৈঠকে তালেবান নিয়ন্ত্রণের উপায় নিয়েই বাইডেনের সঙ্গে কথা বলবেন ঘানি।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০ জুন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে তারা অনেক প্রত্যন্ত জেলায় আক্রমণ চালিয়েছে। আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছে সরকারি বাহিনীর শত শত সেনা। কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানীর প্রবেশপথ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে তালেবান। এর আগেও ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কিছুক্ষণের জন্য তারা এই শহরের দখল নিয়েছিল। পরে মার্কিন বিমান হামলায় পিছু হটতে বাধ্য হয় তারা। কুন্দুজ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য আমরুদ্দিন ওয়ালি বলেন, এখনও আমি গুলির শব্দ পাচ্ছি। আমাদের গলিতে গলিতে ঢুকে পড়েছে তালেবান। সারা শহরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের জন্য এমন পরিস্থিতি বিব্রতকর। মার্কিনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সেনাদের এখন বেশিরভাগই রাজধানী কাবুলে অবস্থান করছে।
কুন্দুজের পশ্চিম দিকে ফারিয়াব প্রদেশের রাজধানী মাইমাতেও অবস্থান করছে তালেবানরা। সেখানে রোববার রাতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাদের সংঘাত হয়। বিগত দিনগুলোতে তারা আশপাশের জেলাগুলো দখলে নিয়েছিল। সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছে সরকারি এলিট বাহিনীর অন্তত ২০ সদস্য। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ১ মে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫০টি জেলা দখলে নিয়েছে তারা। এর মধ্যে খুবই অল্পসংখ্যক জেলা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হলে আফগান বাহিনী দুর্বল হয়ে পড়বে। ফারিয়াব রাজধানীন উপপ্রধান সেবঘাতুল্লাহ সেলাব বলেন, কাবুল থেকে যদি সহযোগিতা আসত তাহলে তালেবানরা আমাদের শহরে প্রবেশ করতে পারত না। বিগত সপ্তাহগুলোতে মার্কিন বিমান হামলার পরিমাণ অনেক কমে গেছে। তবে আফগান বিমানবাহিনী হামলা অব্যাহত রেখেছে।
আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রুহুল্লাহ আহমেদের দাবি, তারা নতুন পরিকল্পনা করছে। কৌশলগত কারণে নিজেদের সেনা সরিয়ে নিয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন আগামী ২৫ জুন শুক্রবার আফগান প্রেসিডেন্ট ঘানি ও জাতীয় ঐকমত্যের জন্য গঠিত শীর্ষ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সামনাসামনি অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে বাইডেন ঘানি ও আবদুল্লাহকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করবেন যে, যুক্তরাষ্ট্র আফগান জনগণের জন্য কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে। এ ছাড়া দেশটি সশস্ত্র গোষ্ঠীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠবে না বলেও নিশ্চিয়তা দেবেন বাইডেন।