শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টুইন টাওয়ারে হামলার ২১ বছর আজ

আজ থেকে ২১ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ঘটেছিল এক ভয়াবহ ঘটনা। যে ঘটনায় হতবিহ্বল হয়েছিল ঘোটা বিশ্ব। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবন, পেন্টাগনসহ কয়েকটি স্থানে বিমান হামলা চালানো হয়। যাতে নিহত হন কয়েক হাজার মানুষ।

নিউইয়র্কের প্রাণকেন্দ্রে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার, পেন্টাগন এবং শেঙ্কসভিলে একযোগে স্মরণকালের ভয়াবহ এ হামলা ছিল ইতিহাসে নজিরবিহীন। ওই হামলায় পেন্টাগন এবং শেঙ্কসভিল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মুহূর্তেই ধসে পড়েছিল ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। এতে প্রাণ হারান প্রায় ৩ হাজার মানুষ।

মার্কিন সরকারি ভাষ্যে দাবি করা হয়, চারটি মার্কিন যাত্রিবাহী বিমান ছিনতাই করে এই হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে দুটি বিমান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর ও দক্ষিণ টাওয়ারে ঢুকে পড়ে। গুড়িয়ে যায় ভবন দুটি।

আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ছিনতাই করা আরেকটি বিমান নিয়ে হামলা চালানো হয় মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনে। আর যাত্রীদের চেষ্টায় নির্ধারিত স্থানে হামলা চালাতে ব্যর্থ হয়ে পেনসিলভেনিয়ার আকাশে বিধ্বস্ত হয় চতুর্থ বিমানটি।

এই ভয়াবহতা দেখে কেঁপে ওঠে পুরো বিশ্ব। হামলার সাথে সাথেই যুক্তরাষ্ট্রের সন্দেহ গিয়ে পড়লো আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের ওপর।

একথা বলা যায়, নাইন ইলেভেনের সেই হামলা পুরো পৃথিবীকে বদলে দিয়েছিল। বিশ্ব আর আগের স্থানে থাকেনি। অথচ কারা এই হামলা চালিয়েছিল, কেন চালিয়েছিল, নেপথ্যে কারা ছিল, তা এই ১৫ বছরেও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে বিতর্ক রয়েই গেছে।

ঘটনায় সে সময়ের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ নতুন ‘ক্রুসেড’ শুরুর ঘোষণা দেন। আর এখান থেকেই শুরু হলো যুক্তরাষ্ট্রের বহুল বিতর্কিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান। তাতেও নিহত হয়েছে অনেক মানুষ। অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে পাকিস্তানে লাদেনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শেষ হয় একটি অধ্যায়ের।

নিউইয়র্কে স্থাপিত হয়েছে সেই নাইন-ইলেভেন স্মৃতি বিজড়িত জাদুঘর। টুইন টাওয়ার ভেঙে পড়ার স্থান ট্রিনিটি স্ট্রিটের ‘গ্রাউন্ড জিরো’তে নির্মিত এ জাদুঘরের উদ্বোধন করেন ওবামা। হামলায় নিহত প্রায় তিন হাজার মানুষের অধিকাংশেরই নামসহ ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিস জাদুঘরটিতে রাখা হয়েছে।

এছাড়া এ জাদুঘরে রয়েছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার টাওয়ারের ধ্বংসাবশেষসহ হামলার ঘটনায় নিখোঁজদের পোস্টার এমনকি উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে যারা মারা গেছেন সে সব উদ্ধারকর্মীদের নাম।

নাইন-ইলেভেন আজও রহস্যাবৃত। আজ অবধি জানা যায়নি নাইন-ইলেভেনের প্রকৃত রহস্য। ফলে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি কী ছিল নাইন-ইলেভেনের মনে, আর এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আক্রমণকারীরা আমেরিকাকে কি বার্তাই বা দিতে চেয়েছিলেন- নেপথ্যে কী ছিল আজও তা পরিষ্কার হয়নি। ১৯৪১ সালে মার্কিন পার্ল হার্বার পোর্টে জাপানি হামলার পর এটাই ছিল আমেরিকায় বড়ো ধরনের কোনো হামলা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

টুইন টাওয়ারে হামলার ২১ বছর আজ

প্রকাশিত সময় : ১১:১৬:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২

আজ থেকে ২১ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ঘটেছিল এক ভয়াবহ ঘটনা। যে ঘটনায় হতবিহ্বল হয়েছিল ঘোটা বিশ্ব। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবন, পেন্টাগনসহ কয়েকটি স্থানে বিমান হামলা চালানো হয়। যাতে নিহত হন কয়েক হাজার মানুষ।

নিউইয়র্কের প্রাণকেন্দ্রে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার, পেন্টাগন এবং শেঙ্কসভিলে একযোগে স্মরণকালের ভয়াবহ এ হামলা ছিল ইতিহাসে নজিরবিহীন। ওই হামলায় পেন্টাগন এবং শেঙ্কসভিল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মুহূর্তেই ধসে পড়েছিল ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। এতে প্রাণ হারান প্রায় ৩ হাজার মানুষ।

মার্কিন সরকারি ভাষ্যে দাবি করা হয়, চারটি মার্কিন যাত্রিবাহী বিমান ছিনতাই করে এই হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে দুটি বিমান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর ও দক্ষিণ টাওয়ারে ঢুকে পড়ে। গুড়িয়ে যায় ভবন দুটি।

আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ছিনতাই করা আরেকটি বিমান নিয়ে হামলা চালানো হয় মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনে। আর যাত্রীদের চেষ্টায় নির্ধারিত স্থানে হামলা চালাতে ব্যর্থ হয়ে পেনসিলভেনিয়ার আকাশে বিধ্বস্ত হয় চতুর্থ বিমানটি।

এই ভয়াবহতা দেখে কেঁপে ওঠে পুরো বিশ্ব। হামলার সাথে সাথেই যুক্তরাষ্ট্রের সন্দেহ গিয়ে পড়লো আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের ওপর।

একথা বলা যায়, নাইন ইলেভেনের সেই হামলা পুরো পৃথিবীকে বদলে দিয়েছিল। বিশ্ব আর আগের স্থানে থাকেনি। অথচ কারা এই হামলা চালিয়েছিল, কেন চালিয়েছিল, নেপথ্যে কারা ছিল, তা এই ১৫ বছরেও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে বিতর্ক রয়েই গেছে।

ঘটনায় সে সময়ের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ নতুন ‘ক্রুসেড’ শুরুর ঘোষণা দেন। আর এখান থেকেই শুরু হলো যুক্তরাষ্ট্রের বহুল বিতর্কিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান। তাতেও নিহত হয়েছে অনেক মানুষ। অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে পাকিস্তানে লাদেনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শেষ হয় একটি অধ্যায়ের।

নিউইয়র্কে স্থাপিত হয়েছে সেই নাইন-ইলেভেন স্মৃতি বিজড়িত জাদুঘর। টুইন টাওয়ার ভেঙে পড়ার স্থান ট্রিনিটি স্ট্রিটের ‘গ্রাউন্ড জিরো’তে নির্মিত এ জাদুঘরের উদ্বোধন করেন ওবামা। হামলায় নিহত প্রায় তিন হাজার মানুষের অধিকাংশেরই নামসহ ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিস জাদুঘরটিতে রাখা হয়েছে।

এছাড়া এ জাদুঘরে রয়েছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার টাওয়ারের ধ্বংসাবশেষসহ হামলার ঘটনায় নিখোঁজদের পোস্টার এমনকি উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে যারা মারা গেছেন সে সব উদ্ধারকর্মীদের নাম।

নাইন-ইলেভেন আজও রহস্যাবৃত। আজ অবধি জানা যায়নি নাইন-ইলেভেনের প্রকৃত রহস্য। ফলে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি কী ছিল নাইন-ইলেভেনের মনে, আর এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আক্রমণকারীরা আমেরিকাকে কি বার্তাই বা দিতে চেয়েছিলেন- নেপথ্যে কী ছিল আজও তা পরিষ্কার হয়নি। ১৯৪১ সালে মার্কিন পার্ল হার্বার পোর্টে জাপানি হামলার পর এটাই ছিল আমেরিকায় বড়ো ধরনের কোনো হামলা।