শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারী সাংবাদিককে হুমকি তালেবানের, অল্পের জন্য রক্ষা আলোকচিত্রীর

আফগানদের দুর্দশার কথা শুনছিলেন এক নারী সাংবাদিক। পাশ থেকে এসে একজন বলে গেলেন, আপনাকে মুখ ঢাকতে বলা হচ্ছে। বক্তা একজন দোভাষী। তবে যাদের নির্দেশে তিনি এই বার্তা পৌঁছে দিলেন, তারা সশস্ত্র তালেবান।

সিএনএনের ওই সাংবাদিক বোরখায় আপাদমস্তক আগে থেকেই ঢেকে ছিলেন। শুধু মুখের অংশটুকুই নিরাবরণ ছিল। তাতেই আপত্তি তালেবানের।

সাংবাদিক অবশ্য অবাধ্য হননি। তালেবানের ফতোয়া মেনে মুখ ঢেকেই কাজ শুরু করেন তিনি। দোভাষীকে জানান, সংবাদ সংগ্রহের অনুমতি নেওয়া আছে তাদের। তাছাড়া তিনি তালেবান নয় আমেরিকারই সমালোচনা করছেন। কিন্তু সেই পাল্টা যুক্তি দিতে যাওয়াই কাল হল। সমস্যার সমাধানের বদলে দেখা গেল বন্দুকের বাট উঁচিয়ে মারতে আসছে তালেবান। সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা আলোকচিত্রীকে মারতে যাওয়ার মুহূর্তে কোনও মতে গাড়িতে উঠে পালাতে বাধ্য হন দু’জনে। পুরো ঘটনাটিই ধরা পড়েছে সাংবাদিকের ভিডিও ক্যামেরায়। তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, অনুমতি নেওয়ার পরও সংবাদমাধ্যমকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে, তা হলে ভাবুন এখানকার সাধারণ মানুষের কী অবস্থা!

 

ওই নারী সাংবাদিকের নাম ক্লারিসা ওয়ার্ড। আর তার আলোকচিত্রী এবং প্রোডিউসার ব্রেন্ট সোয়াইলস। বিমানবন্দর চত্বরে দেশ ছেড়ে পালাতে চাওয়া আফগানদের বক্তব্য শুনছিলেন তিনি। আমেরিকার শিবিরে কাজ করা এক ব্যক্তির বিমানবন্দরে ঢুকতে না পারার অভিজ্ঞতা শুনছিলেন। সেই সময়েই আসে তালেবানের ফতোয়া।

অনুমতির কথা জানিয়ে মুখ ঢেকে রিপোর্ট করতে করতে ক্ল্যারিসাকে বলতে শোনা যায়, পরিস্থিতি ভাল ঠেকছে না। আমার মনে হয় গাড়িতে ফিরে যাওয়া উচিত। ঠিক সেই মুহূর্তেই ক্যামেরায় বন্দুকের বাঁট উঁচিয়ে আক্রমণ করতে আসা এক তালেবান যোদ্ধাকে দেখা যায়।

পরে নিরাপদ দূরত্বে পৌঁছে ক্লারিসা ভিডিও ক্যামেরাতেই বলেন, ভাবুন, আমরা সংবাদ সংগ্রহ করতে এসেছি। আমাদের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। তারপরও এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তাহলে সাধারণ মানুষ, যাদের তেমন কোনও উচ্চমহলে যোগাযোগ নেই, তারা কী অবস্থায় রয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

নারী সাংবাদিককে হুমকি তালেবানের, অল্পের জন্য রক্ষা আলোকচিত্রীর

প্রকাশিত সময় : ০৩:২৪:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ অগাস্ট ২০২১

আফগানদের দুর্দশার কথা শুনছিলেন এক নারী সাংবাদিক। পাশ থেকে এসে একজন বলে গেলেন, আপনাকে মুখ ঢাকতে বলা হচ্ছে। বক্তা একজন দোভাষী। তবে যাদের নির্দেশে তিনি এই বার্তা পৌঁছে দিলেন, তারা সশস্ত্র তালেবান।

সিএনএনের ওই সাংবাদিক বোরখায় আপাদমস্তক আগে থেকেই ঢেকে ছিলেন। শুধু মুখের অংশটুকুই নিরাবরণ ছিল। তাতেই আপত্তি তালেবানের।

সাংবাদিক অবশ্য অবাধ্য হননি। তালেবানের ফতোয়া মেনে মুখ ঢেকেই কাজ শুরু করেন তিনি। দোভাষীকে জানান, সংবাদ সংগ্রহের অনুমতি নেওয়া আছে তাদের। তাছাড়া তিনি তালেবান নয় আমেরিকারই সমালোচনা করছেন। কিন্তু সেই পাল্টা যুক্তি দিতে যাওয়াই কাল হল। সমস্যার সমাধানের বদলে দেখা গেল বন্দুকের বাট উঁচিয়ে মারতে আসছে তালেবান। সাংবাদিকের সঙ্গে থাকা আলোকচিত্রীকে মারতে যাওয়ার মুহূর্তে কোনও মতে গাড়িতে উঠে পালাতে বাধ্য হন দু’জনে। পুরো ঘটনাটিই ধরা পড়েছে সাংবাদিকের ভিডিও ক্যামেরায়। তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, অনুমতি নেওয়ার পরও সংবাদমাধ্যমকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে, তা হলে ভাবুন এখানকার সাধারণ মানুষের কী অবস্থা!

 

ওই নারী সাংবাদিকের নাম ক্লারিসা ওয়ার্ড। আর তার আলোকচিত্রী এবং প্রোডিউসার ব্রেন্ট সোয়াইলস। বিমানবন্দর চত্বরে দেশ ছেড়ে পালাতে চাওয়া আফগানদের বক্তব্য শুনছিলেন তিনি। আমেরিকার শিবিরে কাজ করা এক ব্যক্তির বিমানবন্দরে ঢুকতে না পারার অভিজ্ঞতা শুনছিলেন। সেই সময়েই আসে তালেবানের ফতোয়া।

অনুমতির কথা জানিয়ে মুখ ঢেকে রিপোর্ট করতে করতে ক্ল্যারিসাকে বলতে শোনা যায়, পরিস্থিতি ভাল ঠেকছে না। আমার মনে হয় গাড়িতে ফিরে যাওয়া উচিত। ঠিক সেই মুহূর্তেই ক্যামেরায় বন্দুকের বাঁট উঁচিয়ে আক্রমণ করতে আসা এক তালেবান যোদ্ধাকে দেখা যায়।

পরে নিরাপদ দূরত্বে পৌঁছে ক্লারিসা ভিডিও ক্যামেরাতেই বলেন, ভাবুন, আমরা সংবাদ সংগ্রহ করতে এসেছি। আমাদের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। তারপরও এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তাহলে সাধারণ মানুষ, যাদের তেমন কোনও উচ্চমহলে যোগাযোগ নেই, তারা কী অবস্থায় রয়েছেন।