সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্বমন্দার শঙ্কায় বিশ্বব্যাংক

বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী বছর বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির হার প্রায় ৫ শতাংশে পৌঁছতে পারে, যা মহামারি বা বিশ্বমন্দার কারণ হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশে মন্দার কারণে তা আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়তে গিয়ে দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো যেভাবে একই সময়ে সুদের হার বাড়ানো শুরু করেছে, তার প্রতিক্রিয়ায় আগামী বছর বিশ্বে মন্দা পরিস্থিতি হতে পারে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো একইসঙ্গে যে মাত্রায় সুদের হার বাড়িয়েছে, গত পাঁচ দশকে তা দেখা যায়নি।

নতুন প্রতিবেদনে আর্থিক খাতের এই সংস্থা বলছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো একই সময়ে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় তিন অর্থনীতির অঞ্চল যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রবৃদ্ধির গতি অনেকটা শ্লথ হয়ে এসেছে। এ অবস্থায় ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতি সামান্য ঝাঁকি খেলেই সেটা বিশ্ব মন্দার কারণ হতে পারে। ১৯৭০ সালে মন্দার ধকল কাটিয়ে ওঠার পর এবারই প্রথম বিশ্ব প্রবৃদ্ধি এত দ্রুত হারে কমছে। সেই মন্দার আগে ভোক্তারা যেভাবে বাজারের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছিলেন, এবার তার চেয়ে অনেক দ্রুত গতিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই প্রবণতা আগামী বছর পর্যন্ত চলতে পারে। এর দীর্ঘস্থায়ী ফল উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির মানুষের জন্য ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠবে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর চেষ্টা অব্যাহত রাখা উচিত এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার ঝুঁকি না বাড়িয়েই সেটা করা সম্ভব। সেজন্য বিভিন্ন নীতিনির্ধারকদের সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। উৎপাদন বৃদ্ধি, উদীয়মান বাজার সৃষ্টি ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঝুঁকি মোকাবিলার কৌশল শক্তিশালী করার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরির পরামর্শ দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

জুলাই মাসের প্রাক্কলনে আইএমএফ বলেছিল, ২০২২ সালে বিশ্বের মোট জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.২ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ২.৯ শতাংশ বাড়তে পারে। আগামী মাসে নতুন প্রতিবেদনে সংশোধিত হার প্রকাশ করবে তারা। তবে আইএমএফ এর মুখপাত্র গেরি রাইস বলেছেন, কিছু দেশ আগামী বছর মন্দার কবলে পড়লেও সেটা বিশ্ব মন্দার রূপ পাবে কিনা, তা বলার সময় এখনো আসেনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বিশ্বমন্দার শঙ্কায় বিশ্বব্যাংক

প্রকাশিত সময় : ০৯:৫৮:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী বছর বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির হার প্রায় ৫ শতাংশে পৌঁছতে পারে, যা মহামারি বা বিশ্বমন্দার কারণ হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশে মন্দার কারণে তা আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়তে গিয়ে দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো যেভাবে একই সময়ে সুদের হার বাড়ানো শুরু করেছে, তার প্রতিক্রিয়ায় আগামী বছর বিশ্বে মন্দা পরিস্থিতি হতে পারে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো একইসঙ্গে যে মাত্রায় সুদের হার বাড়িয়েছে, গত পাঁচ দশকে তা দেখা যায়নি।

নতুন প্রতিবেদনে আর্থিক খাতের এই সংস্থা বলছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো একই সময়ে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় তিন অর্থনীতির অঞ্চল যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রবৃদ্ধির গতি অনেকটা শ্লথ হয়ে এসেছে। এ অবস্থায় ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতি সামান্য ঝাঁকি খেলেই সেটা বিশ্ব মন্দার কারণ হতে পারে। ১৯৭০ সালে মন্দার ধকল কাটিয়ে ওঠার পর এবারই প্রথম বিশ্ব প্রবৃদ্ধি এত দ্রুত হারে কমছে। সেই মন্দার আগে ভোক্তারা যেভাবে বাজারের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছিলেন, এবার তার চেয়ে অনেক দ্রুত গতিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই প্রবণতা আগামী বছর পর্যন্ত চলতে পারে। এর দীর্ঘস্থায়ী ফল উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির মানুষের জন্য ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠবে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর চেষ্টা অব্যাহত রাখা উচিত এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার ঝুঁকি না বাড়িয়েই সেটা করা সম্ভব। সেজন্য বিভিন্ন নীতিনির্ধারকদের সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। উৎপাদন বৃদ্ধি, উদীয়মান বাজার সৃষ্টি ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঝুঁকি মোকাবিলার কৌশল শক্তিশালী করার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরির পরামর্শ দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

জুলাই মাসের প্রাক্কলনে আইএমএফ বলেছিল, ২০২২ সালে বিশ্বের মোট জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.২ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ২.৯ শতাংশ বাড়তে পারে। আগামী মাসে নতুন প্রতিবেদনে সংশোধিত হার প্রকাশ করবে তারা। তবে আইএমএফ এর মুখপাত্র গেরি রাইস বলেছেন, কিছু দেশ আগামী বছর মন্দার কবলে পড়লেও সেটা বিশ্ব মন্দার রূপ পাবে কিনা, তা বলার সময় এখনো আসেনি।