শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজধানী কান্দাহারে সরিয়ে নেবে তালেবান!

আফগানিস্তানে একটি ‘অন্তর্ভুক্তমূলক’ গঠন নিয়ে আলোচনা শুরুর প্রেক্ষাপটে তালেবান বলেছে, তারা দেশের রাজধানী কাবুল থেকে কান্দাহারে সরিয়ে নেয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করছে।

তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের আবদুল কাহার বালখি শনিবার আলজাজিরার কাছে স্বীকার করেছেন যে কাবুল বিমানবন্দর এখনো ফ্ল্যাশপয়েন্ট হিসেবে রয়ে গেছে। তবে তিনি জানান, যে সমস্যার কারণে বিমানবন্দরের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য দায়ী যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি হাজার হাজার লোককে সরিয়ে নিত তাড়াহুড়া করার কারণেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে লোকজন যেভাবে বিমানবন্দরের দিকে ছুটে যাচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছি। এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীর সিনিয়র সদস্য থেকে জুনিয়র সদস্যের জন্যও সাধারণ ক্ষমার কথা জানিয়েছি। যে ভয়, যে উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে, তার কোনো কারণ নেই।

অন্তর্ভুক্তমূলক ব্যবস্থা
বালখি বলেন, নতুন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে। তিনি আরো বলেন, রাজধানী কাবুলকে তালেবানের জন্মস্থান কান্দাহারে সরিয়ে নেয়ার বিষয় নিয়েও আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, কে সরকার গঠন করবে, কে করবে না, সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। তবে অন্তর্ভুক্তমূলক সরকার গঠনের আলোচনা চলছে।

নতুন সরকার গঠনে বিলম্ব কিংবা কে নতুন তালেবান প্রশাসনের নেতৃত্ব দেবেন, তা ঘোষণা করতে বিলম্ব হওয়ায় আন্দোলনটি এ নিয়ে যে কতটা অপ্রস্তুত ছিল, তাই ফুটে ওঠেছে। পাশ্চাত্য-সমর্থনপুষ্ট বাহিনীর আকস্মিক পতনের কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বালখি বলেন, তালেবান নেতারা শুরুতে কাবুলে প্রবেশ করতে চাননি।
তিনি বলেন, ঘটনাপ্রবাহ এত দ্রুত ঘটে যে সবাই অবাক হয়ে যায়। আমরা যখন কাবুলে প্রবেশ করি, তখন এ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। আমরা শুরুতে ঘোষণা করেছিলাম, আমরা কাবুলে প্রবেশ করতে চাই না। আমরা কাবুলে প্রবেশ করার আগে একটি রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে চেয়েছিলাম। আমরা কাবুলে প্রবেশের আগেই একটি যৌথ ও অন্তর্ভুক্তমূলক সরকার চেয়েছিলাম।
তিনি বলেন, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী তাদের স্থানগুলো থেকে সরে গেলে আমরা আমাদের বাহিনীকে কাবুলে প্রবেশ করে নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করতে বলি।

তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা এখন পর্যন্ত পুরোপুরি নীরব রয়েছেন।

বালখি বলেন, এখন আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে আমাদের বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং অন্যদের ওপর কোনে আইন চাপিয়ে না দেয়া। আমরা আমাদের বাহিনীর মাধ্যমে সমাজের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করতে চাই। আমাদের কোনো সদস্য কোনো কিছু চাপিয়ে দিলে তাকেই আমরা প্রথমে শাস্তি দেব।

সূত্র : আল জাজিরা

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী কান্দাহারে সরিয়ে নেবে তালেবান!

প্রকাশিত সময় : ০৩:০৩:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ অগাস্ট ২০২১

আফগানিস্তানে একটি ‘অন্তর্ভুক্তমূলক’ গঠন নিয়ে আলোচনা শুরুর প্রেক্ষাপটে তালেবান বলেছে, তারা দেশের রাজধানী কাবুল থেকে কান্দাহারে সরিয়ে নেয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করছে।

তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের আবদুল কাহার বালখি শনিবার আলজাজিরার কাছে স্বীকার করেছেন যে কাবুল বিমানবন্দর এখনো ফ্ল্যাশপয়েন্ট হিসেবে রয়ে গেছে। তবে তিনি জানান, যে সমস্যার কারণে বিমানবন্দরের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য দায়ী যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি হাজার হাজার লোককে সরিয়ে নিত তাড়াহুড়া করার কারণেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে লোকজন যেভাবে বিমানবন্দরের দিকে ছুটে যাচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছি। এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীর সিনিয়র সদস্য থেকে জুনিয়র সদস্যের জন্যও সাধারণ ক্ষমার কথা জানিয়েছি। যে ভয়, যে উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে, তার কোনো কারণ নেই।

অন্তর্ভুক্তমূলক ব্যবস্থা
বালখি বলেন, নতুন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে। তিনি আরো বলেন, রাজধানী কাবুলকে তালেবানের জন্মস্থান কান্দাহারে সরিয়ে নেয়ার বিষয় নিয়েও আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, কে সরকার গঠন করবে, কে করবে না, সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। তবে অন্তর্ভুক্তমূলক সরকার গঠনের আলোচনা চলছে।

নতুন সরকার গঠনে বিলম্ব কিংবা কে নতুন তালেবান প্রশাসনের নেতৃত্ব দেবেন, তা ঘোষণা করতে বিলম্ব হওয়ায় আন্দোলনটি এ নিয়ে যে কতটা অপ্রস্তুত ছিল, তাই ফুটে ওঠেছে। পাশ্চাত্য-সমর্থনপুষ্ট বাহিনীর আকস্মিক পতনের কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বালখি বলেন, তালেবান নেতারা শুরুতে কাবুলে প্রবেশ করতে চাননি।
তিনি বলেন, ঘটনাপ্রবাহ এত দ্রুত ঘটে যে সবাই অবাক হয়ে যায়। আমরা যখন কাবুলে প্রবেশ করি, তখন এ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। আমরা শুরুতে ঘোষণা করেছিলাম, আমরা কাবুলে প্রবেশ করতে চাই না। আমরা কাবুলে প্রবেশ করার আগে একটি রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে চেয়েছিলাম। আমরা কাবুলে প্রবেশের আগেই একটি যৌথ ও অন্তর্ভুক্তমূলক সরকার চেয়েছিলাম।
তিনি বলেন, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী তাদের স্থানগুলো থেকে সরে গেলে আমরা আমাদের বাহিনীকে কাবুলে প্রবেশ করে নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করতে বলি।

তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা মোল্লা হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা এখন পর্যন্ত পুরোপুরি নীরব রয়েছেন।

বালখি বলেন, এখন আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে আমাদের বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং অন্যদের ওপর কোনে আইন চাপিয়ে না দেয়া। আমরা আমাদের বাহিনীর মাধ্যমে সমাজের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করতে চাই। আমাদের কোনো সদস্য কোনো কিছু চাপিয়ে দিলে তাকেই আমরা প্রথমে শাস্তি দেব।

সূত্র : আল জাজিরা