সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৯ দফা দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীর মানববন্ধন

৯ দফা দাবিতে  ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। রোবাবর (২৩ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মেইনগেটের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করে তারা।

শিক্ষার্থীদের ৯দফা দাবি হলো: শাহরিয়ারের মৃতদেহের পাশে অবস্থানকালে তার সহপাঠীদের ওপর নৃশংস হামলা, হত্যাচেষ্টা এবং শিক্ষক লাঞ্ছনায় জড়িত ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় এবং আনসারদের দ্রুত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে এবং তাদের প্রত্যেককেই তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনতে হবে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানীর অসংলগ্ন আচরণ ও প্রত্যক্ষ মদদে বর্বরোচিত হামলার ঘটনাটি ঘটে। কুখ্যাত এই পরিচালককে অপসারণ করতে হবে।  অব্যবস্থাপনা ও জরুরি মুহূর্তে ফরমালিটিজের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি, চাঁদাবাজি এবং ক্লিনিকগুলোর সঙ্গে যোগসাজশ বন্ধ করতে হবে।

রামেকে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। ডাক্তারদের দোষ ওয়ার্ডবয়দের ওপর, ওয়ার্ডবয়দের দোষ ডাক্তারদের ওপর চাপিয়ে দেবার সংস্কৃতি আর চলবে না।

এমপি বাদশার বেশামাল, অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। অসংলগ্ন কথাবার্তার তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

ইন্টার্ন ডাক্তারনের স্বেচ্ছাচারীতা, রোগী এবং রোগীর অভিভাবকদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, অভিযোগ জানাতে গেলে অভিবাবকদের উপর অস্ত্রোপাচার সামগ্রী দিয়ে আক্রমণের বসোভ্যাস পরিহার করতে হবে। সর্বোপরি তাদের মানবিক ও আন্তরিক হতে হবে।

জরুরি বিভাগে সিনিয়র ডাক্তারদের উপস্থিতিতে জরুরি চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। ডাক্তারদের দায়িত্ব চলাকালে নার্স/ওয়ার্ডবয় দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া চলবে না। আইসিউ ব্যবস্থা সহজ করতে হবে।

শাহরিয়ারের চিকিৎসায় ভিসি এবং প্রক্টরের স্বাক্ষরের নামে টালবাহানা করে যে কালক্ষেপণ করা হলো, তা দ্বিতীয় কারা সঙ্গে করা হবে না- এই নিশ্চয়তা দিতে হবে।

অনতিবিলম্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতির কাছে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে হবে। রামেকের ডাক্তার-নার্সরা মনগড়া, বানোয়াট, কাল্পনিক, অসভ্য যে ঘটনা সাজিয়েছে তার চিত্র প্রকাশ করে সবাইকে প্রকৃত সত্য ঘটনা জানার সুযোগ করে দিতে হবে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘অবহেলার কারণে আমরা আর কোনো শহরিয়ারকে হারাতে চাই না। আর কোনো ভাইকে অকালে চলে যেতে দিতে পারি না। কোনো বাবার স্বপ্ন ভেঙে যেতে দিতে পারি না।’

চিকিৎসকদের উদ্দেশে তারা বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে; সেটি ধামাচাপা দেওয়া জন্য একের পর এক নাটক সাজান। আপনাদের বিবেককে প্রশ্ন করেন, আপনাদের বিবেক লজ্জা পেয়ে যাবে।’

উল্লেখ্য, এর আগে গত বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৮টায় শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার পিলার বেয়ে পাশের ব্লকে যাওয়ার সময় পা পিছলে অসাবধানতায় নিচে পড়ে যান শাহরিয়ার। এতে গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান বন্ধু ও সহপাঠীরা। রাত ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলায় সহপাঠী মারা গেছেন–এমন অভিযোগে হাসপাতাল ভাঙচুর করেন রাবির শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগে কর্মবিরতিতে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

৯ দফা দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীর মানববন্ধন

প্রকাশিত সময় : ০৮:১৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২২

৯ দফা দাবিতে  ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। রোবাবর (২৩ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মেইনগেটের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করে তারা।

শিক্ষার্থীদের ৯দফা দাবি হলো: শাহরিয়ারের মৃতদেহের পাশে অবস্থানকালে তার সহপাঠীদের ওপর নৃশংস হামলা, হত্যাচেষ্টা এবং শিক্ষক লাঞ্ছনায় জড়িত ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় এবং আনসারদের দ্রুত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে এবং তাদের প্রত্যেককেই তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনতে হবে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানীর অসংলগ্ন আচরণ ও প্রত্যক্ষ মদদে বর্বরোচিত হামলার ঘটনাটি ঘটে। কুখ্যাত এই পরিচালককে অপসারণ করতে হবে।  অব্যবস্থাপনা ও জরুরি মুহূর্তে ফরমালিটিজের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি, চাঁদাবাজি এবং ক্লিনিকগুলোর সঙ্গে যোগসাজশ বন্ধ করতে হবে।

রামেকে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। ডাক্তারদের দোষ ওয়ার্ডবয়দের ওপর, ওয়ার্ডবয়দের দোষ ডাক্তারদের ওপর চাপিয়ে দেবার সংস্কৃতি আর চলবে না।

এমপি বাদশার বেশামাল, অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। অসংলগ্ন কথাবার্তার তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

ইন্টার্ন ডাক্তারনের স্বেচ্ছাচারীতা, রোগী এবং রোগীর অভিভাবকদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, অভিযোগ জানাতে গেলে অভিবাবকদের উপর অস্ত্রোপাচার সামগ্রী দিয়ে আক্রমণের বসোভ্যাস পরিহার করতে হবে। সর্বোপরি তাদের মানবিক ও আন্তরিক হতে হবে।

জরুরি বিভাগে সিনিয়র ডাক্তারদের উপস্থিতিতে জরুরি চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। ডাক্তারদের দায়িত্ব চলাকালে নার্স/ওয়ার্ডবয় দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া চলবে না। আইসিউ ব্যবস্থা সহজ করতে হবে।

শাহরিয়ারের চিকিৎসায় ভিসি এবং প্রক্টরের স্বাক্ষরের নামে টালবাহানা করে যে কালক্ষেপণ করা হলো, তা দ্বিতীয় কারা সঙ্গে করা হবে না- এই নিশ্চয়তা দিতে হবে।

অনতিবিলম্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতির কাছে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে হবে। রামেকের ডাক্তার-নার্সরা মনগড়া, বানোয়াট, কাল্পনিক, অসভ্য যে ঘটনা সাজিয়েছে তার চিত্র প্রকাশ করে সবাইকে প্রকৃত সত্য ঘটনা জানার সুযোগ করে দিতে হবে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘অবহেলার কারণে আমরা আর কোনো শহরিয়ারকে হারাতে চাই না। আর কোনো ভাইকে অকালে চলে যেতে দিতে পারি না। কোনো বাবার স্বপ্ন ভেঙে যেতে দিতে পারি না।’

চিকিৎসকদের উদ্দেশে তারা বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে; সেটি ধামাচাপা দেওয়া জন্য একের পর এক নাটক সাজান। আপনাদের বিবেককে প্রশ্ন করেন, আপনাদের বিবেক লজ্জা পেয়ে যাবে।’

উল্লেখ্য, এর আগে গত বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৮টায় শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার পিলার বেয়ে পাশের ব্লকে যাওয়ার সময় পা পিছলে অসাবধানতায় নিচে পড়ে যান শাহরিয়ার। এতে গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান বন্ধু ও সহপাঠীরা। রাত ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলায় সহপাঠী মারা গেছেন–এমন অভিযোগে হাসপাতাল ভাঙচুর করেন রাবির শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগে কর্মবিরতিতে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।