বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করতে ইউক্রেনকে গোপনে উৎসাহ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আপাতদৃষ্টিতে এক দীর্ঘ যুদ্ধের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। গোটা বিশ্বেই কমবেশি এর প্রভাব পড়ছে। কোভিডের পর এমন একটি যুদ্ধ অর্থনীতির ক্ষত পূরণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে একটি বিষয় ক্রমেই পরিষ্কার হয়ে উঠছে যে, যুদ্ধে সব পক্ষই হাঁপিয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলো যেন কিয়েভকে সহায়তা অব্যাহত রাখে সেজন্য ইউক্রেনকে কৌশলী হতে পরামর্শ দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ইউক্রেনের নেতাদের উৎসাহিত করছে, কিয়েভ যেন রাশিয়াকে ইঙ্গিত দেয় যে তারা শান্তি আলোচনায় আগ্রহী। তবে প্রকাশ্যে অন্য কথা বলতে বলছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শ, প্রকাশ্যে ইউক্রেন যেন বলে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আলোচনায় বসবে না তারা। ওয়াশিংটন পোস্টকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা এসব কথা বলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের কিয়েভের নেতাদের এমন পরামর্শের মধ্য দিয়ে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে, ইউক্রেন প্রশ্নে বাইডেন প্রশাসন একটা জটিল অবস্থান নিয়েছে। একদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে যতোদিন প্রয়োজন ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে চাইছেন, অপরদিকে আট মাসের এ যুদ্ধ বন্ধের আশাও রয়েছে বাইডেন প্রশাসনের।

ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের যে মূল্যায়ন, সেটা তারা ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। তাদের মতে, পুতিন আলোচনার ব্যাপারে এখন অতটা আগ্রহী নন। কিন্তু তারা স্বীকার করেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় না বসার কথা বলছেন, তা ইউরোপ, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার কিছু দেশে উদ্বেগ তৈরি করেছে। কারণ, এ যুদ্ধের ফলে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এসব দেশকে ভুগতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘ইউক্রেন নিয়ে আমাদের অনেক মিত্রদেশ যে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, এটা সত্যিকার উদ্বেগের বিষয়।’

তবে ওয়াশিংটন পোস্টের ওই প্রতিবেদন নিয়ে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ইউক্রেনে এক রুশ জেনারেলকে সরিয়ে নতুন একজনকে নিয়োগ দিয়েছে ক্রেমলিন। এতদিন রাশিয়ার সেন্ট্রাল মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের কমান্ডার ছিলেন কর্নেল জেনারেল আলেক্সান্দার লাপিন। মেজর জেনারেল আলেক্সান্দার লিনকভকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করতে ইউক্রেনকে গোপনে উৎসাহ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত সময় : ১১:৩০:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২

আপাতদৃষ্টিতে এক দীর্ঘ যুদ্ধের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। গোটা বিশ্বেই কমবেশি এর প্রভাব পড়ছে। কোভিডের পর এমন একটি যুদ্ধ অর্থনীতির ক্ষত পূরণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে একটি বিষয় ক্রমেই পরিষ্কার হয়ে উঠছে যে, যুদ্ধে সব পক্ষই হাঁপিয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলো যেন কিয়েভকে সহায়তা অব্যাহত রাখে সেজন্য ইউক্রেনকে কৌশলী হতে পরামর্শ দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ইউক্রেনের নেতাদের উৎসাহিত করছে, কিয়েভ যেন রাশিয়াকে ইঙ্গিত দেয় যে তারা শান্তি আলোচনায় আগ্রহী। তবে প্রকাশ্যে অন্য কথা বলতে বলছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শ, প্রকাশ্যে ইউক্রেন যেন বলে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আলোচনায় বসবে না তারা। ওয়াশিংটন পোস্টকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা এসব কথা বলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের কিয়েভের নেতাদের এমন পরামর্শের মধ্য দিয়ে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে, ইউক্রেন প্রশ্নে বাইডেন প্রশাসন একটা জটিল অবস্থান নিয়েছে। একদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে যতোদিন প্রয়োজন ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে চাইছেন, অপরদিকে আট মাসের এ যুদ্ধ বন্ধের আশাও রয়েছে বাইডেন প্রশাসনের।

ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের যে মূল্যায়ন, সেটা তারা ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। তাদের মতে, পুতিন আলোচনার ব্যাপারে এখন অতটা আগ্রহী নন। কিন্তু তারা স্বীকার করেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় না বসার কথা বলছেন, তা ইউরোপ, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার কিছু দেশে উদ্বেগ তৈরি করেছে। কারণ, এ যুদ্ধের ফলে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এসব দেশকে ভুগতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘ইউক্রেন নিয়ে আমাদের অনেক মিত্রদেশ যে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, এটা সত্যিকার উদ্বেগের বিষয়।’

তবে ওয়াশিংটন পোস্টের ওই প্রতিবেদন নিয়ে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ইউক্রেনে এক রুশ জেনারেলকে সরিয়ে নতুন একজনকে নিয়োগ দিয়েছে ক্রেমলিন। এতদিন রাশিয়ার সেন্ট্রাল মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের কমান্ডার ছিলেন কর্নেল জেনারেল আলেক্সান্দার লাপিন। মেজর জেনারেল আলেক্সান্দার লিনকভকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।