রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোরা ফাতেহিকে আনার নামে প্রতারণা, সেই রাজু গ্রেপ্তার

নোরা ফাতেহির বাংলাদেশ সফর নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার যেন শেষ নেই। তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ১৮ নভেম্বরই বাংলাদেশে আসছেন ভারতীয় আইটেম গার্ল ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নোরা ফাতেহি। এনবিআর বাধা দিলেও সব প্রশাসনিক উইং-কে সহযোগিতার নির্দেশনা দিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

এ নিয়ে জল-ঘোলা ও প্রতারণার দায়ে ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান উইমেন লিডারশীপ করপোরেশনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন মিরর গ্রুপের কর্ণধার শাহ জাহান ভূঁইয়া রাজু।

কানাডিয়ান এই মডেল, অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মূলত উপমহাদেশীয় দর্শকদের অন্তরে ঠাঁই করে নিয়েছেন বিভিন্ন চলচ্চিত্রের হিট আইটেম সংয়ে সরব উপস্থিতি দিয়ে।

জনপ্রিয়তার কারণেই তার চাহিদা বেড়েছে। নোরার কয়েকবার ঢাকায় আসার গুঞ্জন উঠলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। পরে চারটি শর্তে একটি পুরস্কার প্রদান তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে অংশ নেওয়ার অনুমতি মেলে। কিন্তু এনবিআর জানায়, তারা এ নিয়ে উইমেন লিডারশীপ করপোরেশনের কাছ থেকে কোনও চিঠি পায়নি। ফলে আবারও ঝুলে যায় নোরার ঢাকা আসা।

এই নাটকীয়তা নতুন মোড় নেয় যখন মিরর গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠান দাবি করে তারাও নোরাকে আনতে চেয়েছিল। দেওয়া হয়েছে অগ্রিম টাকাও। যা ফেরত চাওয়া হয় আয়োজক উইমেন লিডারশীপ করপোরেশনের কাছে। তাদের নাম ভাঙিয়ে নানাজনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। উপায়ন্তর না পেয়ে বনানী থানায় প্রতারণার মামলা করে আয়োজকরা।

মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করা হয় মিরর গ্রুপের কর্ণধার শাহ জাহান ভূঁইয়া রাজুকে। ডিবি জানায়, তার বিরুদ্ধে আগেও ছিল প্রতারণার অভিযোগ।

বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে উইমেন লিডারশীপ করপোরেশনের থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা এবং ১০ লাখ টাকার একটি চেক হাতিয়ে নিয়েছে একটি বলে জানান ডিএমপি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

জানা গেছে, রাজু বিভিন্ন মেয়েদের মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে ফটোশুটের নামে ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে বাধ্য করে এবং এসমস্ত মেয়েদের অবৈধ অস্ত্র, স্বর্ণ ও মাদক ব্যবসার কাজে ব্যবহার করে এবং এদের ভোগের পণ্য বানিয়ে ব্যবসা করে। এ সব কারণে মিডিয়া জগতের অনেকের কাছে শাজাহান ভূঁইয়া রাজুর অপকর্মের বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেটে পরিণত হয়েছে।

রাজুর এ সমস্ত জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ ধানমন্ডি থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় এবং প্রশাসনে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। যার ভিত্তিতে গত ২০১৭ সালে একবার ধানমন্ডি থানায় রাজু আটক আছে এ খবর পেয়ে কাকলি পারভীন তিনি থানায় গিয়ে পুলিশ এবং রাজুর মুখোমুখি হলে রাজু থানায় পুলিশের সামনে কান্নাকাটি করে দুই মাসের মধ্যে আমার টাকা ফেরত দিবে মর্মে রাজু কাকলি পারভীনকে সাউথইস্ট ব্যাংকের সাতমসজিদ রোড ব্রাঞ্চের একটি ১০ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন। ২০১৭ সালের ১ জুলাই চেক পাশ হবে- একথা বলে থানাকে কৌশলে ম্যানেজ করে পালিয়ে যায় সে।

সেখান থেকে আর রাজুকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আর রাজুর দেওয়া চেকটিও আর পাশ হয়নি। কিছুদিন আগে বনানীর হোটেল শেরাটনে ভারতীয় শিল্পী শিল্পা শেঠিকে এনে দেশি-বিদেশিদের নিয়ে বিজনেজ অ্যাওয়ার্ড ও ফ্যাশন শো করে মিরর ফ্যাশন বিজনেজ ম্যাগাজিনের ব্যানারে। অথচ যার পত্রিকার ডিকলারেশন নেই। প্রতিষ্ঠানের সঠিক অস্তিত্ব নেই। বরং মিথ্যা ও জালিয়াতি করে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নানা ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছে। তার এসমস্ত অপকর্মের জন্য কিছু অসৎ ও কালোটাকার মানুষকে ব্যবহার করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

নোরা ফাতেহিকে আনার নামে প্রতারণা, সেই রাজু গ্রেপ্তার

প্রকাশিত সময় : ০৩:০৫:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২

নোরা ফাতেহির বাংলাদেশ সফর নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার যেন শেষ নেই। তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ১৮ নভেম্বরই বাংলাদেশে আসছেন ভারতীয় আইটেম গার্ল ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নোরা ফাতেহি। এনবিআর বাধা দিলেও সব প্রশাসনিক উইং-কে সহযোগিতার নির্দেশনা দিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

এ নিয়ে জল-ঘোলা ও প্রতারণার দায়ে ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান উইমেন লিডারশীপ করপোরেশনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন মিরর গ্রুপের কর্ণধার শাহ জাহান ভূঁইয়া রাজু।

কানাডিয়ান এই মডেল, অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মূলত উপমহাদেশীয় দর্শকদের অন্তরে ঠাঁই করে নিয়েছেন বিভিন্ন চলচ্চিত্রের হিট আইটেম সংয়ে সরব উপস্থিতি দিয়ে।

জনপ্রিয়তার কারণেই তার চাহিদা বেড়েছে। নোরার কয়েকবার ঢাকায় আসার গুঞ্জন উঠলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। পরে চারটি শর্তে একটি পুরস্কার প্রদান তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে অংশ নেওয়ার অনুমতি মেলে। কিন্তু এনবিআর জানায়, তারা এ নিয়ে উইমেন লিডারশীপ করপোরেশনের কাছ থেকে কোনও চিঠি পায়নি। ফলে আবারও ঝুলে যায় নোরার ঢাকা আসা।

এই নাটকীয়তা নতুন মোড় নেয় যখন মিরর গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠান দাবি করে তারাও নোরাকে আনতে চেয়েছিল। দেওয়া হয়েছে অগ্রিম টাকাও। যা ফেরত চাওয়া হয় আয়োজক উইমেন লিডারশীপ করপোরেশনের কাছে। তাদের নাম ভাঙিয়ে নানাজনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। উপায়ন্তর না পেয়ে বনানী থানায় প্রতারণার মামলা করে আয়োজকরা।

মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করা হয় মিরর গ্রুপের কর্ণধার শাহ জাহান ভূঁইয়া রাজুকে। ডিবি জানায়, তার বিরুদ্ধে আগেও ছিল প্রতারণার অভিযোগ।

বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে উইমেন লিডারশীপ করপোরেশনের থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা এবং ১০ লাখ টাকার একটি চেক হাতিয়ে নিয়েছে একটি বলে জানান ডিএমপি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

জানা গেছে, রাজু বিভিন্ন মেয়েদের মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে ফটোশুটের নামে ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে বাধ্য করে এবং এসমস্ত মেয়েদের অবৈধ অস্ত্র, স্বর্ণ ও মাদক ব্যবসার কাজে ব্যবহার করে এবং এদের ভোগের পণ্য বানিয়ে ব্যবসা করে। এ সব কারণে মিডিয়া জগতের অনেকের কাছে শাজাহান ভূঁইয়া রাজুর অপকর্মের বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেটে পরিণত হয়েছে।

রাজুর এ সমস্ত জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ ধানমন্ডি থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় এবং প্রশাসনে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। যার ভিত্তিতে গত ২০১৭ সালে একবার ধানমন্ডি থানায় রাজু আটক আছে এ খবর পেয়ে কাকলি পারভীন তিনি থানায় গিয়ে পুলিশ এবং রাজুর মুখোমুখি হলে রাজু থানায় পুলিশের সামনে কান্নাকাটি করে দুই মাসের মধ্যে আমার টাকা ফেরত দিবে মর্মে রাজু কাকলি পারভীনকে সাউথইস্ট ব্যাংকের সাতমসজিদ রোড ব্রাঞ্চের একটি ১০ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন। ২০১৭ সালের ১ জুলাই চেক পাশ হবে- একথা বলে থানাকে কৌশলে ম্যানেজ করে পালিয়ে যায় সে।

সেখান থেকে আর রাজুকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আর রাজুর দেওয়া চেকটিও আর পাশ হয়নি। কিছুদিন আগে বনানীর হোটেল শেরাটনে ভারতীয় শিল্পী শিল্পা শেঠিকে এনে দেশি-বিদেশিদের নিয়ে বিজনেজ অ্যাওয়ার্ড ও ফ্যাশন শো করে মিরর ফ্যাশন বিজনেজ ম্যাগাজিনের ব্যানারে। অথচ যার পত্রিকার ডিকলারেশন নেই। প্রতিষ্ঠানের সঠিক অস্তিত্ব নেই। বরং মিথ্যা ও জালিয়াতি করে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নানা ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছে। তার এসমস্ত অপকর্মের জন্য কিছু অসৎ ও কালোটাকার মানুষকে ব্যবহার করেছে।