রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশের বিশেষ অভিযান: তিন দিনে ঢাকায় গ্রেপ্তার ৭৫৫

রাজধানীতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষ অভিযানে আরও ২৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে তিন দিনে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫৫।

ডিএমপির গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, মেস, বাসা–বাড়িতে যে অভিযান চালানো হয়েছে তাতে আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, কেবল যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে, তাদেরই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ 

কেউ যেন অহেতুক হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়টি পুলিশকে সতর্কভাবে দেখভাল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিসি মিডিয়া। 

এদিকে, বিএনপিকে মাঠ ছাড়া রাস্তা-ঘাটে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। 

আজ সোমবার বিকেলে গণমাধ্যমে তিনি জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাদে অন্য কোনো স্থানের নাম এখনো বিএনপি প্রস্তাব করেনি বিএনপি। আমরা তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে রেখেছি। 

রোববার (৪ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে আলোচনা করতে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে। সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম এবং বিএনপির পক্ষে প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানিকে বিকল্প সমাবেশস্থল নির্ধারণে আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

ওই দিনই রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, ১০ তারিখ বিএনপির সমাবেশে কোনো অসাধুচক্র মানে তৃতীয় পক্ষ কোনো ধরনের সমস্যা যেন না করতে পারে সে জন্য আমরা কাজ করছি। রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে কি না সে বিষয়ে আগাম তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। 

এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সমাবেশের আগে সমাবেশস্থলে এসে বিএনপির নেতা-কর্মীদের জড়ো হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। 

গত ২৯ নভেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরের অপারেশন শাখার পাঠানো এক আদেশে দেশের সব পুলিশ ইউনিটের প্রধান ও সব জেলার পুলিশ সুপারদের ১ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অভিযান চালাতে বলা হয়েছে। 

আদেশে বলা হয়, অন্যান্য স্থানের পাশাপাশি আবাসিক হোটেল, মেস, হোস্টেল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টারসহ অপরাধীদের লুকিয়ে থাকার সম্ভাব্য স্থানগুলোতে কার্যকর অভিযান পরিচালনা করতে হবে। পরিচালিত অভিযানে জঙ্গি, সন্ত্রাসী, মাদকসেবী ও কারবারি, অবৈধ অস্ত্রধারী, পরোয়ানাভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। 

পুলিশের টার্গেট বিএনপির সমাবেশ জমানো শীর্ষ নেতা বিএনপির যে সকল নেতাদের ডাকে সমাবেশে শত শত কর্মীরা আসেন, এমন অন্তত শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের মধ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপির তিনজন, যুবদলের দুজন, স্বেচ্ছাসেবক দলের দুজন এবং ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তারের জন্য খুঁজছে ডিবি। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত শনিবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশ কয়েকজন নেতার বাসায় গিয়ে তাদের খুঁজে এসেছেন। তবে তাদের বাসায় পাওয়া যায়নি। দুই একদিনের মধ্যে এ সকল নেতাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে। 

কমিশনার কার্যালয় থেকে ডিবি পুলিশকে শীর্ষ নেতা এবং থানা-পুলিশকে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশনা এসেছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আবাসিক হোটেলগুলোতে বোর্ডার (অতিথি) না রাখার বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মৌখিক নির্দেশনা এসেছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

পুলিশের বিশেষ অভিযান: তিন দিনে ঢাকায় গ্রেপ্তার ৭৫৫

প্রকাশিত সময় : ১০:৩০:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

রাজধানীতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষ অভিযানে আরও ২৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে তিন দিনে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫৫।

ডিএমপির গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, মেস, বাসা–বাড়িতে যে অভিযান চালানো হয়েছে তাতে আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, কেবল যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে, তাদেরই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ 

কেউ যেন অহেতুক হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়টি পুলিশকে সতর্কভাবে দেখভাল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিসি মিডিয়া। 

এদিকে, বিএনপিকে মাঠ ছাড়া রাস্তা-ঘাটে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। 

আজ সোমবার বিকেলে গণমাধ্যমে তিনি জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাদে অন্য কোনো স্থানের নাম এখনো বিএনপি প্রস্তাব করেনি বিএনপি। আমরা তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে রেখেছি। 

রোববার (৪ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে আলোচনা করতে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে। সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম এবং বিএনপির পক্ষে প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানিকে বিকল্প সমাবেশস্থল নির্ধারণে আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

ওই দিনই রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, ১০ তারিখ বিএনপির সমাবেশে কোনো অসাধুচক্র মানে তৃতীয় পক্ষ কোনো ধরনের সমস্যা যেন না করতে পারে সে জন্য আমরা কাজ করছি। রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে কি না সে বিষয়ে আগাম তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। 

এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সমাবেশের আগে সমাবেশস্থলে এসে বিএনপির নেতা-কর্মীদের জড়ো হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। 

গত ২৯ নভেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরের অপারেশন শাখার পাঠানো এক আদেশে দেশের সব পুলিশ ইউনিটের প্রধান ও সব জেলার পুলিশ সুপারদের ১ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অভিযান চালাতে বলা হয়েছে। 

আদেশে বলা হয়, অন্যান্য স্থানের পাশাপাশি আবাসিক হোটেল, মেস, হোস্টেল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টারসহ অপরাধীদের লুকিয়ে থাকার সম্ভাব্য স্থানগুলোতে কার্যকর অভিযান পরিচালনা করতে হবে। পরিচালিত অভিযানে জঙ্গি, সন্ত্রাসী, মাদকসেবী ও কারবারি, অবৈধ অস্ত্রধারী, পরোয়ানাভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। 

পুলিশের টার্গেট বিএনপির সমাবেশ জমানো শীর্ষ নেতা বিএনপির যে সকল নেতাদের ডাকে সমাবেশে শত শত কর্মীরা আসেন, এমন অন্তত শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের মধ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপির তিনজন, যুবদলের দুজন, স্বেচ্ছাসেবক দলের দুজন এবং ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তারের জন্য খুঁজছে ডিবি। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত শনিবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশ কয়েকজন নেতার বাসায় গিয়ে তাদের খুঁজে এসেছেন। তবে তাদের বাসায় পাওয়া যায়নি। দুই একদিনের মধ্যে এ সকল নেতাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে। 

কমিশনার কার্যালয় থেকে ডিবি পুলিশকে শীর্ষ নেতা এবং থানা-পুলিশকে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশনা এসেছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আবাসিক হোটেলগুলোতে বোর্ডার (অতিথি) না রাখার বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মৌখিক নির্দেশনা এসেছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র।