সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাবিতে উর্দু বিভাগের ফলাফল বিপর্যয় তিনমাসেও হয়নি সমাধান, আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগে ‘শিক্ষক রাজনীতির’ কারণে ফল বিপর্যয় হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে প্রশাসনের তদন্ত ও সমাধানের দাবি জানিয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (০৫ ডিসেম্বর) শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে সকাল ১০টা থেকে রোদে বসে তারা অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। এসময় কর্মসূচি থেকে দাবি না মানা পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন।

কর্মসূচিতে উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থীদের হাতে ‘আমরণ অনশন চলবে, প্রাপ্য ফলাফল ফিরিয়ে দিতে হবে, ছাত্রদের উপর হুমকি ধামকির বিচার চাই, ছাত্রবান্ধব বিভাগ চাই সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এসময় ওই বিভাগের ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনশনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে তাদের এই ফল বিপর্যয় হয়েছে। তাদের দাবি, শিক্ষকরা যেপন্থী রাজনীতি করেন তার বিপরীতপন্থি শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক ভালো থাকলে ওই পন্থি শিক্ষক তার সাবজেক্টে (বিষয়) নাম্বার কম দেন। এছাড়াও এক শিক্ষকের কোনো প্রোগামে গেলে অন্য শিক্ষক নাম্বার কমিয়ে দেন বলে দাবি তাদের।

শিক্ষার্থীরা জানান, আজকে আমরা এখানে তীব্র রোদে বসে রয়েছি। কিন্তু আমাদের থাকার কথা ছিল শ্রেণিকক্ষে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ সময় দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে তৃতীয় বর্ষে উঠে গেছে। কিন্তু আমরা এখনো দ্বিতীয় বর্ষের ক্লাস করতে পারিনি প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফল বিপর্যয়ের কারণে। আমাদের প্রথম সেমিস্টারে আমাদের বিভাগে প্রথম স্থান অধিকারকারীর সিজিপিএ ছিল ৩.৯১। কিন্তু দ্বিতীয় সেমিস্টারে তার সিজিপিএ হয়েছে ৩.২৮।

তারা জানান, এছাড়া একজন ৩ পয়েন্টে সিজিপিএ পেয়ে মোট ৬ জন সিজিপিএ ৩ এর উপরে পেয়েছে। কিন্তু প্রথম সেমিস্টারে আমাদের মাত্র ৫ জনের মত শিক্ষার্থী ৩ পয়েন্টের নিচে পেয়েছিল। কিন্তু এবার বিভাগের ৩৮ জন শিক্ষার্থীদের সবারই ফল বিপর্যয় হয়েছে। তার মধ্যে ৮ জন ইয়ার ড্রপ হয়েছে। সর্বনিম্ন সিজিপিএ ২ পয়েন্ট। এত বাজে রেজাল্ট হওয়ার কথা ছিল না।

উর্দু বিভাগের সভাপতি ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, বিষয়টা নিয়ে বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে কয়েকবার সভা করেছি। ভর্তি কমিটি প্রতিবেদনও দাখিল করেছে। প্রতিবেদনেও এই ফলাফল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি।

সার্বিক বিষয়ে রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম  বলেন, আমরা বিভাগের শিক্ষকদেরকে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য সভা করেছি। তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি শিক্ষার্থীদেরকে শ্রেণিকক্ষে ফেরত নিয়ে যেতে। এছাড়া ফল বিপর্যয়ের এই ঘটনা তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।-কালের কণ্ঠ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাবিতে উর্দু বিভাগের ফলাফল বিপর্যয় তিনমাসেও হয়নি সমাধান, আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত সময় : ১১:২০:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগে ‘শিক্ষক রাজনীতির’ কারণে ফল বিপর্যয় হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে প্রশাসনের তদন্ত ও সমাধানের দাবি জানিয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (০৫ ডিসেম্বর) শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে সকাল ১০টা থেকে রোদে বসে তারা অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। এসময় কর্মসূচি থেকে দাবি না মানা পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন।

কর্মসূচিতে উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থীদের হাতে ‘আমরণ অনশন চলবে, প্রাপ্য ফলাফল ফিরিয়ে দিতে হবে, ছাত্রদের উপর হুমকি ধামকির বিচার চাই, ছাত্রবান্ধব বিভাগ চাই সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এসময় ওই বিভাগের ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনশনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে তাদের এই ফল বিপর্যয় হয়েছে। তাদের দাবি, শিক্ষকরা যেপন্থী রাজনীতি করেন তার বিপরীতপন্থি শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক ভালো থাকলে ওই পন্থি শিক্ষক তার সাবজেক্টে (বিষয়) নাম্বার কম দেন। এছাড়াও এক শিক্ষকের কোনো প্রোগামে গেলে অন্য শিক্ষক নাম্বার কমিয়ে দেন বলে দাবি তাদের।

শিক্ষার্থীরা জানান, আজকে আমরা এখানে তীব্র রোদে বসে রয়েছি। কিন্তু আমাদের থাকার কথা ছিল শ্রেণিকক্ষে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ সময় দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে তৃতীয় বর্ষে উঠে গেছে। কিন্তু আমরা এখনো দ্বিতীয় বর্ষের ক্লাস করতে পারিনি প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফল বিপর্যয়ের কারণে। আমাদের প্রথম সেমিস্টারে আমাদের বিভাগে প্রথম স্থান অধিকারকারীর সিজিপিএ ছিল ৩.৯১। কিন্তু দ্বিতীয় সেমিস্টারে তার সিজিপিএ হয়েছে ৩.২৮।

তারা জানান, এছাড়া একজন ৩ পয়েন্টে সিজিপিএ পেয়ে মোট ৬ জন সিজিপিএ ৩ এর উপরে পেয়েছে। কিন্তু প্রথম সেমিস্টারে আমাদের মাত্র ৫ জনের মত শিক্ষার্থী ৩ পয়েন্টের নিচে পেয়েছিল। কিন্তু এবার বিভাগের ৩৮ জন শিক্ষার্থীদের সবারই ফল বিপর্যয় হয়েছে। তার মধ্যে ৮ জন ইয়ার ড্রপ হয়েছে। সর্বনিম্ন সিজিপিএ ২ পয়েন্ট। এত বাজে রেজাল্ট হওয়ার কথা ছিল না।

উর্দু বিভাগের সভাপতি ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, বিষয়টা নিয়ে বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে কয়েকবার সভা করেছি। ভর্তি কমিটি প্রতিবেদনও দাখিল করেছে। প্রতিবেদনেও এই ফলাফল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি।

সার্বিক বিষয়ে রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম  বলেন, আমরা বিভাগের শিক্ষকদেরকে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য সভা করেছি। তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি শিক্ষার্থীদেরকে শ্রেণিকক্ষে ফেরত নিয়ে যেতে। এছাড়া ফল বিপর্যয়ের এই ঘটনা তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।-কালের কণ্ঠ