মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র : রাশিয়া

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা গত ২২ ডিসেম্বর মস্কোতে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। আজ রবিবার ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস এই তথ্য জানিয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ব্রিফিংয়ের বিবরণীতে ‌‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা’ শীর্ষক বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সংঘটিত হয়েছে বলে ব্যাপকভাবে প্রচারিত একটি ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। অভিযোগ উঠেছে, ২০১৩ সালে নিখোঁজ একজন বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে তিনি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর একটি সংগঠনের হুমকির মুখে পড়েছিলেন। ’ রাশিয়ার মুখপাত্র বলেন, ‘আমেরিকান একজন কূটনীতিক যখন বাংলাদেশের নাগরিকদের অধিকারের বিষয়ে যত্নবান হওয়ার অজুহাতে ক্রমাগত দেশের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াগুলো প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিলেন তখন এমন ফলাফলই প্রত্যাশিত। ’ রাশিয়ার মুখপাত্র আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্রিটিশ ও জার্মান কূটনৈতিক মিশনের তার (আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের) সহকর্মীরা একই ধরনের কাজ করছেন। তারা বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে সুপারিশ করছেন। ’ মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‌‘আমরা বিশ্বাস করি, সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের মৌলিক নীতিগুলো লঙ্ঘন করে এমন পদক্ষেপগুলো অগ্রহণযোগ্য। ’ তিনি বলেন, “যদি কেউ প্রশ্ন করতে চান- ‘কূটনীতিক, দায়মুক্তি, দূতাবাস, নিরাপত্তা’ শব্দগুলো কেমন হবে? আমরা সব সময় আন্তর্জাতিক আইন এবং কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে এই বিষয়গুলো দেখার আহ্বান জানাই। এগুলোই মৌলিক নীতি। ’ মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্য দেশগুলোকে শুধু তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই যত্নবান এবং মন্তব্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোসহ দেশগুলোর সহকর্মী এবং তাদের প্রতিনিধিরা যখন তাদের দূতাবাসের নিরাপত্তা ও কনস্যুলার সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে, তখন তাদের সমর্থন করার আহ্বান জানাই। ’ মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘অন্য দূতাবাস, কনস্যুলেট জেনারেল, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা করা হচ্ছে বা তারা হুমকি পাচ্ছে-এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় না বা এ কথা শুনতে চায় না। তারা এ বিষয়ে কোনো খেয়ালই করে না। সর্বোপরি, তারা নীরব থাকে এবং সবচেয়ে খারাপভাবে বলতে গেলে, এর মাধ্যমে তারা হামলার ন্যায্যতা দেয়। ’ তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীরা সিরিয়ায় আমাদের দূতাবাসে একের পর এক হামলা চালায়, তখন আমরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে আমেরিকানদের এর জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম। সব কিছু স্পষ্ট ছিল। তবুও জনসমক্ষে অবস্থান নিতে এবং নিরাপত্তা পরিষদের ‘সাধারণ কণ্ঠস্বর’ ব্যবহার করতে তাদের অনিচ্ছার কোনো রাজনৈতিক যুক্তি থাকতে পারে না। ’ রাশিয়ার মুখপাত্র বলেন, ‘কূটনীতিকদের সুরক্ষা এবং দূতাবাস ও কূটনীতিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানানোর বিষয়ে একটি স্পষ্ট অবস্থান নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের প্রস্তাবকে ওয়াশিংটন সমর্থন করেনি। নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী অবস্থান নয়, বরং সমন্বিত অবস্থান প্রয়োজন। সূত্র: কালের কণ্ঠ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন: জয়া আহসান

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র : রাশিয়া

প্রকাশিত সময় : ০৩:২০:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা গত ২২ ডিসেম্বর মস্কোতে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। আজ রবিবার ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস এই তথ্য জানিয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ব্রিফিংয়ের বিবরণীতে ‌‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা’ শীর্ষক বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সংঘটিত হয়েছে বলে ব্যাপকভাবে প্রচারিত একটি ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। অভিযোগ উঠেছে, ২০১৩ সালে নিখোঁজ একজন বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে তিনি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর একটি সংগঠনের হুমকির মুখে পড়েছিলেন। ’ রাশিয়ার মুখপাত্র বলেন, ‘আমেরিকান একজন কূটনীতিক যখন বাংলাদেশের নাগরিকদের অধিকারের বিষয়ে যত্নবান হওয়ার অজুহাতে ক্রমাগত দেশের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াগুলো প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিলেন তখন এমন ফলাফলই প্রত্যাশিত। ’ রাশিয়ার মুখপাত্র আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্রিটিশ ও জার্মান কূটনৈতিক মিশনের তার (আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের) সহকর্মীরা একই ধরনের কাজ করছেন। তারা বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে সুপারিশ করছেন। ’ মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‌‘আমরা বিশ্বাস করি, সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের মৌলিক নীতিগুলো লঙ্ঘন করে এমন পদক্ষেপগুলো অগ্রহণযোগ্য। ’ তিনি বলেন, “যদি কেউ প্রশ্ন করতে চান- ‘কূটনীতিক, দায়মুক্তি, দূতাবাস, নিরাপত্তা’ শব্দগুলো কেমন হবে? আমরা সব সময় আন্তর্জাতিক আইন এবং কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে এই বিষয়গুলো দেখার আহ্বান জানাই। এগুলোই মৌলিক নীতি। ’ মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্য দেশগুলোকে শুধু তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই যত্নবান এবং মন্তব্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোসহ দেশগুলোর সহকর্মী এবং তাদের প্রতিনিধিরা যখন তাদের দূতাবাসের নিরাপত্তা ও কনস্যুলার সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে, তখন তাদের সমর্থন করার আহ্বান জানাই। ’ মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘অন্য দূতাবাস, কনস্যুলেট জেনারেল, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা করা হচ্ছে বা তারা হুমকি পাচ্ছে-এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় না বা এ কথা শুনতে চায় না। তারা এ বিষয়ে কোনো খেয়ালই করে না। সর্বোপরি, তারা নীরব থাকে এবং সবচেয়ে খারাপভাবে বলতে গেলে, এর মাধ্যমে তারা হামলার ন্যায্যতা দেয়। ’ তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীরা সিরিয়ায় আমাদের দূতাবাসে একের পর এক হামলা চালায়, তখন আমরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে আমেরিকানদের এর জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম। সব কিছু স্পষ্ট ছিল। তবুও জনসমক্ষে অবস্থান নিতে এবং নিরাপত্তা পরিষদের ‘সাধারণ কণ্ঠস্বর’ ব্যবহার করতে তাদের অনিচ্ছার কোনো রাজনৈতিক যুক্তি থাকতে পারে না। ’ রাশিয়ার মুখপাত্র বলেন, ‘কূটনীতিকদের সুরক্ষা এবং দূতাবাস ও কূটনীতিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানানোর বিষয়ে একটি স্পষ্ট অবস্থান নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের প্রস্তাবকে ওয়াশিংটন সমর্থন করেনি। নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী অবস্থান নয়, বরং সমন্বিত অবস্থান প্রয়োজন। সূত্র: কালের কণ্ঠ