মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

করোনা মহামারিতে অনেক প্রতিষ্ঠান সচল থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে প্রায় ১৪ মাস ধরে।  অনলাইন এবং বিকল্প পদ্ধতিতে উদ্যোগ থাকলেও তা শহরকেন্দ্রিক এবং অপ্রতুল। দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকা শিক্ষার্থীরা ভুগছেন নানাবিধ মানসিক ও পারিবারিক সমস্যায়।
করোনাময় জীবনকাল আজ শুধু কয়েকটি দিন কিংবা মাসেই সীমাবদ্ধ নয়,গড়াতে চললো প্রায় দুইটি বছর।এ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি  বাড়ানো হয়েছে ২২ দফা,এই দফা কতকাল পর্যন্ত এভাবে বাড়তেই থাকবে তা প্রশ্নবিদ্ধ।
দিও আমরা দেখে যাচ্ছি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে, বাজার  এবং রাস্তাঘাটেও বহু আগে থেকেই বিরাজ করছে স্বাভাবিকতা,অথচ কি এক অজানা কারণে প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা আজও বন্ধ রাখা হয়েছে।
এর ফলে ঝড়ে যাচ্ছে অগনিত শিক্ষার্থী,বেড়ে যাচ্ছে বাল্যবিবাহ,বাড়ছে হতাশা-আত্মহত্যা, এমনকি সেশন জটের ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীরা কলম ছেড়ে হাতে নিয়ে নিচ্ছে সংসারের জোয়াল অথচ আমরা এখনও দেখতে পাচ্ছি না কোনো যৌক্তিক পদক্ষেপ নেবার তাড়া কিংবা দেখছি না শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো সিদ্ধান্ত।
তারউপর অনলাইন ক্লাসের প্রতি শিক্ষকদের অনাগ্রহ,ধীরগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থা,প্রযুক্তির অপ্রতুলতা সবমিলিয়ে অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা পরিণত হয়েছে এক নামমাত্র পাঠদান পদ্ধতিতে।শিক্ষাক্ষেত্রে কিভাবে,কোন প্রক্রিয়ায় এবং কোন রোডম্যাপ অনুসরণ করা প্রয়োজন তা কেবলই বারবার সময়ের দাবি হিসেবে থেকে যাচ্ছে।আজ শিক্ষার্থীদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়,অত্যন্ত নাজুক। হয়তো খুব শীঘ্রই এ রাষ্ট্র আমাদের পেতে যাচ্ছে এক দূর্বল মানবসম্পদ হিসেবে। এ দায় কার কিংবা কাদের এমন প্রশ্ন বোধহয় উত্তরহীনই রয়ে যাবে।
লেখক:নুসরাত জাহান তানজিলা
আইন বিভাগ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইতোমধ্যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তবুও মহামারী মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণে না আসায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে চলছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব। এমতাবস্থায় অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা চালু থাকলেও তা শতভাগ কার্যকরী নয়। শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক বিপর্যয় এর পাশাপাশি প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সংবাদে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশের পরিবেশ, হয়ে পড়ছদ অমনোযোগী এবং হতাশ।
এছাড়াও লোডশেডিং, দু্র্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ও ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ডজনিত সমস্যার কারণে সার্বক্ষণিক অনলাইনে যুক্ত থাকায় বিপাকে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। সে অবস্থায় অনলাইন এক্সাম শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন সংযোজন যা কিনা শিক্ষার্থীদের জন্য উদ্বিগ্ন ও দুর্ভোগের কারণ ও হতে পারে।
সেক্ষেত্রে যতদ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি।
সুমাইয়া আক্তার ইপ্তি
ইংরেজি ডিসিপ্লিন,খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
কোভিড ১৯ মহামারীর কারণে আমাদের  সবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান  গুলো  গত ২০২০ সালের    মার্চ  থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়  ।  পরবর্তীতে  পড়াশুনা  অব্যাহত রাখার জন্য  আমাদের অনলাইনে  পাঠদান শুরু হয়  ।
অনলাইনে  পাঠদান শুরু  হয় ঠিকই কিন্তু  আমাদের ফাইনাল   পরীক্ষা  দিতে পারি নি, এজন্য  আমরা অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী  সেশনজটে পড়েছি ।   ফলে আমরা  এক বছর আট মাস  ধরে  একই  বর্ষে আছি  ।
এই সেশনজট  কমানোর জন্য  আমাদের   অনতিবিলম্বে  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং  স্নাতক ও স্নাতকোত্তর  এর পরীক্ষাগুলো  নিতে হবে অনতিবিলম্বে  ।  এবার আসি অনলাইনে শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ।
 অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা  কতটুকু   উপকার আমাদের জন্য!!!!  আমরা  বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা  অনেকেই  গ্রাম থেকে আসি পড়াশুনা করতে ।
গ্রামে বসে অনেকের নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সময় আমরা  ডিসকানেক্ট হয়ে যাই  ।  এটা  অনলাইন পরীক্ষা বা অনলাইন ক্লাসের  মারাত্মক ক্ষতি  আমাদের জন্য ।এজন্য আমি একথাটাই বলব যে,আর দেরি না করে আমাদের অনতিবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া  হোক ।
লেখক:নাজিয়া তাসনীম
গনিত বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
মেধাবী সন্তানদের শিক্ষার বাতিঘর হলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যখন অনলাইন মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনা শুরু করে, তখন দেশের শীর্ষস্থানীয়  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হয়।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইন পাঠ কার্যক্রমের বিষয়টি একটি ভুল ব্যাখ্যার সৃষ্টি করেছে আমার মতে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের তাণ্ডবে জীবন ও জীবিকা নিয়ে সবাই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দেশের চার কোটি শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার মধ্যে থাকাই তাদের জীবন ও জীবিকা। প্রায় ১৫ মাস ধরে তাদের স্বাভাবিক জীবন হারিয়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ক্ষেত্রে ১৫ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার একটি শর্ত রাখা হয়েছে। আমি মনে করি এটি শতভাগ নিশ্চিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া জরুরি। এতে  শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যত পরিকল্পনা। উদ্বিঘ্নতা, মানুষিক দুশ্চিন্তা, পারিবারিক সমস্যার সমাধানে নিজেদের  আবার সচল রাখার চেষ্টা করবে আগের মতো।
লেখক: তানভীর হোসেন 
শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
দেশে করোনা  প্রাদুর্ভাবের পর প্রায় ১৭ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ সরকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। সম্প্রতি এই বন্ধ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
যার ফলে পরীক্ষাগুলো বাতিল হয়েছে এবং একাডেমিক ক্যালেন্ডার আর মেনে চলা হচ্ছে না।অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা খুব একটা কাজে আসেনি। অনলাইনভিত্তিক সেসব গবেষণায় সীমাবদ্ধতা থাকলেও, প্রায় সকল জরিপেই উঠে এসেছে এদেশের ছাত্র-ছাত্রীরা বিষণ্নতা, উদ্বেগ আর মানসিক চাপে ভুগছে।
মহামারী পরিস্থিতি ‘খুব বেশি প্রতিকূল না হলে’মধ্য অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সবাইকে টিকা দেয়া নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে । আমি মনে করি এই সিদ্ধান্তটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার।
লেখক:নিসাত তাসনিম
এগ্ৰিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্ববিদ্যালয় খোলা অত্যন্ত জরুরি। বাসায় থেকে পড়াশোনা হচ্ছেনা, শুয়ে বসে থেকে ওজন বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে চাকরি আর বিয়ের বয়স নিজস্ব গতিতে পার হয়ে যাচ্ছে। বাসায় থাকার জন্য বাবা মা হাতখরচ ও দেন না, যার ফলে একদম অসহায় অবস্থায় আছি। অনেকে নিজের ভবিষ্যৎ এ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের প্রভাব নিয়ে ভেবে ভেবে হতাশ হয়ে যাচ্ছেন।
এতকিছুর পর ও যদি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে না দেওয়া হয় তাহলে একটা পুরো জেনারেশন শেষ হয়ে যাবে। আবাসিক অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীদের শতভাগ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করে শিক্ষাব্যবস্থা পূনরায় সুষ্ঠ গতিতে ফিরিয়ে আনা হোক।
লেখক:পারিজাত
ফোকলোর স্টাডিজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, ঝুলন্ত  লাশ উদ্ধার

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

প্রকাশিত সময় : ০৪:২৮:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১
করোনা মহামারিতে অনেক প্রতিষ্ঠান সচল থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে প্রায় ১৪ মাস ধরে।  অনলাইন এবং বিকল্প পদ্ধতিতে উদ্যোগ থাকলেও তা শহরকেন্দ্রিক এবং অপ্রতুল। দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকা শিক্ষার্থীরা ভুগছেন নানাবিধ মানসিক ও পারিবারিক সমস্যায়।
করোনাময় জীবনকাল আজ শুধু কয়েকটি দিন কিংবা মাসেই সীমাবদ্ধ নয়,গড়াতে চললো প্রায় দুইটি বছর।এ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি  বাড়ানো হয়েছে ২২ দফা,এই দফা কতকাল পর্যন্ত এভাবে বাড়তেই থাকবে তা প্রশ্নবিদ্ধ।
দিও আমরা দেখে যাচ্ছি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে, বাজার  এবং রাস্তাঘাটেও বহু আগে থেকেই বিরাজ করছে স্বাভাবিকতা,অথচ কি এক অজানা কারণে প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা আজও বন্ধ রাখা হয়েছে।
এর ফলে ঝড়ে যাচ্ছে অগনিত শিক্ষার্থী,বেড়ে যাচ্ছে বাল্যবিবাহ,বাড়ছে হতাশা-আত্মহত্যা, এমনকি সেশন জটের ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীরা কলম ছেড়ে হাতে নিয়ে নিচ্ছে সংসারের জোয়াল অথচ আমরা এখনও দেখতে পাচ্ছি না কোনো যৌক্তিক পদক্ষেপ নেবার তাড়া কিংবা দেখছি না শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো সিদ্ধান্ত।
তারউপর অনলাইন ক্লাসের প্রতি শিক্ষকদের অনাগ্রহ,ধীরগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থা,প্রযুক্তির অপ্রতুলতা সবমিলিয়ে অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা পরিণত হয়েছে এক নামমাত্র পাঠদান পদ্ধতিতে।শিক্ষাক্ষেত্রে কিভাবে,কোন প্রক্রিয়ায় এবং কোন রোডম্যাপ অনুসরণ করা প্রয়োজন তা কেবলই বারবার সময়ের দাবি হিসেবে থেকে যাচ্ছে।আজ শিক্ষার্থীদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়,অত্যন্ত নাজুক। হয়তো খুব শীঘ্রই এ রাষ্ট্র আমাদের পেতে যাচ্ছে এক দূর্বল মানবসম্পদ হিসেবে। এ দায় কার কিংবা কাদের এমন প্রশ্ন বোধহয় উত্তরহীনই রয়ে যাবে।
লেখক:নুসরাত জাহান তানজিলা
আইন বিভাগ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইতোমধ্যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তবুও মহামারী মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণে না আসায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে চলছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব। এমতাবস্থায় অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা চালু থাকলেও তা শতভাগ কার্যকরী নয়। শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক বিপর্যয় এর পাশাপাশি প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সংবাদে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশের পরিবেশ, হয়ে পড়ছদ অমনোযোগী এবং হতাশ।
এছাড়াও লোডশেডিং, দু্র্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ও ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ডজনিত সমস্যার কারণে সার্বক্ষণিক অনলাইনে যুক্ত থাকায় বিপাকে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। সে অবস্থায় অনলাইন এক্সাম শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন সংযোজন যা কিনা শিক্ষার্থীদের জন্য উদ্বিগ্ন ও দুর্ভোগের কারণ ও হতে পারে।
সেক্ষেত্রে যতদ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি।
সুমাইয়া আক্তার ইপ্তি
ইংরেজি ডিসিপ্লিন,খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
কোভিড ১৯ মহামারীর কারণে আমাদের  সবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান  গুলো  গত ২০২০ সালের    মার্চ  থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়  ।  পরবর্তীতে  পড়াশুনা  অব্যাহত রাখার জন্য  আমাদের অনলাইনে  পাঠদান শুরু হয়  ।
অনলাইনে  পাঠদান শুরু  হয় ঠিকই কিন্তু  আমাদের ফাইনাল   পরীক্ষা  দিতে পারি নি, এজন্য  আমরা অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী  সেশনজটে পড়েছি ।   ফলে আমরা  এক বছর আট মাস  ধরে  একই  বর্ষে আছি  ।
এই সেশনজট  কমানোর জন্য  আমাদের   অনতিবিলম্বে  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং  স্নাতক ও স্নাতকোত্তর  এর পরীক্ষাগুলো  নিতে হবে অনতিবিলম্বে  ।  এবার আসি অনলাইনে শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ।
 অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা  কতটুকু   উপকার আমাদের জন্য!!!!  আমরা  বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা  অনেকেই  গ্রাম থেকে আসি পড়াশুনা করতে ।
গ্রামে বসে অনেকের নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সময় আমরা  ডিসকানেক্ট হয়ে যাই  ।  এটা  অনলাইন পরীক্ষা বা অনলাইন ক্লাসের  মারাত্মক ক্ষতি  আমাদের জন্য ।এজন্য আমি একথাটাই বলব যে,আর দেরি না করে আমাদের অনতিবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া  হোক ।
লেখক:নাজিয়া তাসনীম
গনিত বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
মেধাবী সন্তানদের শিক্ষার বাতিঘর হলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যখন অনলাইন মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনা শুরু করে, তখন দেশের শীর্ষস্থানীয়  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হয়।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইন পাঠ কার্যক্রমের বিষয়টি একটি ভুল ব্যাখ্যার সৃষ্টি করেছে আমার মতে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের তাণ্ডবে জীবন ও জীবিকা নিয়ে সবাই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দেশের চার কোটি শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার মধ্যে থাকাই তাদের জীবন ও জীবিকা। প্রায় ১৫ মাস ধরে তাদের স্বাভাবিক জীবন হারিয়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ক্ষেত্রে ১৫ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার একটি শর্ত রাখা হয়েছে। আমি মনে করি এটি শতভাগ নিশ্চিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া জরুরি। এতে  শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যত পরিকল্পনা। উদ্বিঘ্নতা, মানুষিক দুশ্চিন্তা, পারিবারিক সমস্যার সমাধানে নিজেদের  আবার সচল রাখার চেষ্টা করবে আগের মতো।
লেখক: তানভীর হোসেন 
শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
দেশে করোনা  প্রাদুর্ভাবের পর প্রায় ১৭ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ সরকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। সম্প্রতি এই বন্ধ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
যার ফলে পরীক্ষাগুলো বাতিল হয়েছে এবং একাডেমিক ক্যালেন্ডার আর মেনে চলা হচ্ছে না।অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা খুব একটা কাজে আসেনি। অনলাইনভিত্তিক সেসব গবেষণায় সীমাবদ্ধতা থাকলেও, প্রায় সকল জরিপেই উঠে এসেছে এদেশের ছাত্র-ছাত্রীরা বিষণ্নতা, উদ্বেগ আর মানসিক চাপে ভুগছে।
মহামারী পরিস্থিতি ‘খুব বেশি প্রতিকূল না হলে’মধ্য অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সবাইকে টিকা দেয়া নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে । আমি মনে করি এই সিদ্ধান্তটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার।
লেখক:নিসাত তাসনিম
এগ্ৰিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্ববিদ্যালয় খোলা অত্যন্ত জরুরি। বাসায় থেকে পড়াশোনা হচ্ছেনা, শুয়ে বসে থেকে ওজন বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে চাকরি আর বিয়ের বয়স নিজস্ব গতিতে পার হয়ে যাচ্ছে। বাসায় থাকার জন্য বাবা মা হাতখরচ ও দেন না, যার ফলে একদম অসহায় অবস্থায় আছি। অনেকে নিজের ভবিষ্যৎ এ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের প্রভাব নিয়ে ভেবে ভেবে হতাশ হয়ে যাচ্ছেন।
এতকিছুর পর ও যদি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে না দেওয়া হয় তাহলে একটা পুরো জেনারেশন শেষ হয়ে যাবে। আবাসিক অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীদের শতভাগ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করে শিক্ষাব্যবস্থা পূনরায় সুষ্ঠ গতিতে ফিরিয়ে আনা হোক।
লেখক:পারিজাত
ফোকলোর স্টাডিজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়