মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, ক্ষুব্ধ চীন

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ স্পর্শকাতর তাইওয়ান প্রণালীর মধ্য দিয়ে যাত্রা করে। মার্কিন সামরিক বাহিনী বিষয়টিকে রুটিন কার্যক্রমের অংশ বলে অভিহিত করলেও এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে চীন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, মার্কিন যুদ্ধজাহাজ এবং সময়ে সময়ে তার মিত্র ব্রিটেন এবং ক্যানাডার যুদ্ধজাহাজ এই প্রণালীর মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছে, যা চীনের ক্রোধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক বিবৃতিতে মার্কিন সামরিক বাহিনী বলেছে, আরলেই বার্ক-শ্রেণির গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার চুং-হুন তাইওয়ান প্রণালীর মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছে। ‘তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে চুং-হুন যুদ্ধজাহাজের ট্রানজিট মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিকেই তুলে ধরে,’ বিবৃতিতে বলা হয়। তবে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি করেনি চীন। ওয়াশিংটনে চীনের দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ এক বিবৃতিতে দৃঢ়ভাবে এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে “সমস্যা উস্কে দেয়া, উত্তেজনা বৃদ্ধি করা ও তাইওয়ান প্রণালী জুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার মত কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে”। বিবৃতিতে বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজগুলো চলাচলের স্বাধীনতা ভোগের নামে প্রায়ই শক্তি প্রদর্শন করে। এটা এই অঞ্চলকে মুক্ত ও অবাধ রাখার কোন বিষয়ে নয়।” “চীন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবে এবং সব ধরনের হুমকি ও উস্কানির বিরুদ্ধে জবাব দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। একই সাথে নিজ সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা দৃঢ়ভাবে রক্ষা করবে চীন,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে। এদিকে চাইনিজ পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মার্কিন যুদ্ধজাহাজের চলাচল পর্যবেক্ষণ ও পাহারা দেওয়ার জন্য তারা সৈন্যদের নিয়োজিত করে এবং “সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে ছিল”। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কিন যুদ্ধজাহাজটি প্রণালী দিয়ে উত্তর দিকে যাত্রা করে। তাইওয়ানের বাহিনী জাহাজটির চলাচল পর্যবেক্ষণ করেছে, যা নিতান্তই সাধারণ একটি ঘটনা ছাড়া ভিন্ন কিছু না। উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে প্রজাতন্ত্রী চীন সরকার কমিউনিস্টদের সাথে গৃহযুদ্ধে হেরে তাইওয়ানে পালিয়ে যাওয়ার পর গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠা হয়। তখন থেকেই তাইওয়ান প্রণালী সামরিক উত্তেজনার একটি বিষয় হয়ে উঠে। তাইওয়ানের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, তবে দ্বীপটিকে আত্মরক্ষা করতে সাহায্য করার জন্য আইনত বাধ্য। চীন তাইওয়ানকে মুল ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে দাবী করে আসছে। নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চীন কখনোই শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি। তবে আক্রমণ করা হলে নিজেকে রক্ষা করার জন্য তাইওয়ান প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাইওয়ান বলেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন কখনো দ্বীপটি শাসন করেনি, তাদের দাবী তাই ভিত্তিহীন। সূত্র: ডয়চে ভেলে

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, ক্ষুব্ধ চীন

প্রকাশিত সময় : ০৮:২১:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৩

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ স্পর্শকাতর তাইওয়ান প্রণালীর মধ্য দিয়ে যাত্রা করে। মার্কিন সামরিক বাহিনী বিষয়টিকে রুটিন কার্যক্রমের অংশ বলে অভিহিত করলেও এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে চীন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, মার্কিন যুদ্ধজাহাজ এবং সময়ে সময়ে তার মিত্র ব্রিটেন এবং ক্যানাডার যুদ্ধজাহাজ এই প্রণালীর মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছে, যা চীনের ক্রোধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক বিবৃতিতে মার্কিন সামরিক বাহিনী বলেছে, আরলেই বার্ক-শ্রেণির গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার চুং-হুন তাইওয়ান প্রণালীর মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছে। ‘তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে চুং-হুন যুদ্ধজাহাজের ট্রানজিট মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিকেই তুলে ধরে,’ বিবৃতিতে বলা হয়। তবে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি করেনি চীন। ওয়াশিংটনে চীনের দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ এক বিবৃতিতে দৃঢ়ভাবে এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে “সমস্যা উস্কে দেয়া, উত্তেজনা বৃদ্ধি করা ও তাইওয়ান প্রণালী জুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার মত কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে”। বিবৃতিতে বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজগুলো চলাচলের স্বাধীনতা ভোগের নামে প্রায়ই শক্তি প্রদর্শন করে। এটা এই অঞ্চলকে মুক্ত ও অবাধ রাখার কোন বিষয়ে নয়।” “চীন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবে এবং সব ধরনের হুমকি ও উস্কানির বিরুদ্ধে জবাব দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। একই সাথে নিজ সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা দৃঢ়ভাবে রক্ষা করবে চীন,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে। এদিকে চাইনিজ পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মার্কিন যুদ্ধজাহাজের চলাচল পর্যবেক্ষণ ও পাহারা দেওয়ার জন্য তারা সৈন্যদের নিয়োজিত করে এবং “সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে ছিল”। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কিন যুদ্ধজাহাজটি প্রণালী দিয়ে উত্তর দিকে যাত্রা করে। তাইওয়ানের বাহিনী জাহাজটির চলাচল পর্যবেক্ষণ করেছে, যা নিতান্তই সাধারণ একটি ঘটনা ছাড়া ভিন্ন কিছু না। উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে প্রজাতন্ত্রী চীন সরকার কমিউনিস্টদের সাথে গৃহযুদ্ধে হেরে তাইওয়ানে পালিয়ে যাওয়ার পর গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠা হয়। তখন থেকেই তাইওয়ান প্রণালী সামরিক উত্তেজনার একটি বিষয় হয়ে উঠে। তাইওয়ানের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, তবে দ্বীপটিকে আত্মরক্ষা করতে সাহায্য করার জন্য আইনত বাধ্য। চীন তাইওয়ানকে মুল ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে দাবী করে আসছে। নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চীন কখনোই শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি। তবে আক্রমণ করা হলে নিজেকে রক্ষা করার জন্য তাইওয়ান প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাইওয়ান বলেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন কখনো দ্বীপটি শাসন করেনি, তাদের দাবী তাই ভিত্তিহীন। সূত্র: ডয়চে ভেলে