সৌদি আরবের মদিনা নবীর শহর, একে আরবিতে বলা হয় ‘মদিনাতুন নবী।’ মদিনার প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে ‘মসজিদে নববি।’ মুসলমানদের পবিত্র স্থানগুলোর মধ্যে মসজিদে নববি অন্যতম। নির্মাণ ও স্থাপত্যশৈলীর কারণেও এই মসজিদ বিখ্যাত। পবিত্র হজ ও ওমরাহ পালনের সময় মসজিদে নববিতে নামাজ পড়তে হয়। তবে পৃথিবীর নানা প্রান্তে থাকা অনেকে ইচ্ছা সত্ত্বেও নিজের চোখে এই মসজিদ দেখার সুযোগ পান না।
বিষয়টি মাথায় রেখে সৌদি সরকার ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের ওয়েবসাইটে ভার্চুয়ালি মসজিদে নববি ঘুরে দেখার সুযোগ চালু করেছে। ঘরে বসে ভার্চুয়ালি মসজিদে নববি ঘুরে দেখার জন্য এই https://vr.qurancomplex.gov.sa/msq/ ওয়েবসাইটে যেতে হবে। ভার্চুয়ালি মসজিদে নববি দেখার সময় আজানসহ পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শোনা যাবে। মসজিদে নববি প্রাঙ্গণে থাকা উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে ত্রিমাত্রিক ছবি দেখা যাবে এবং দরকারি তথ্য পাওয়া যাবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে আরবির পাশাপাশি ইংরেজি, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষাতেও তথ্যগুলো পড়তে পারবেন।
ভার্চুয়াল ভ্রমণে যা দেখা যাবে
বিভিন্ন দিক দিয়ে প্রবেশের পর মসজিদে নববিতে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র রওজা মোবারকের সামনের ও পাশের অংশ দেখতে পাবেন ভার্চুয়াল ভ্রমণকারীরা। মসজিদে নববির বেশ কয়েকটি প্রবেশপথ রয়েছে। আল সালাম গেট, জিবরাইল গেট, আবু বকর সিদ্দিক গেট, আল রাহমাহ গেট, উমর ইবনে আল খাত্তাব গেট ও কিং ফাহাদ গেট। গেট নির্বাচন করে দিলে সেই পথে মসজিদে নববিতে প্রবেশ করা যাবে। পর্দার ওপর মাঝখানে থাকা নির্দেশনাসূচক বাটন থেকে গেটগুলো নির্বাচন করতে হবে। ভার্চুয়াল প্রযুক্তিতে আল সালাম গেট, জিবরাইল গেট, আবু বকর আল সিদ্দিক গেট, আল রহমাহ গেট, উমর ইবনে আল খাত্তাব গেট দিয়ে মসজিদে নববিতে প্রবেশ করা যাবে।
মসজিদে নববির গ্যালারি
দেখা যাবে পাঠাগার, গ্যালারি ও প্রদর্শনী কক্ষ। নবীর তৈরি মসজিদের ওপরের অংশও দেখা যাবে। সবুজ মিনারের বিভিন্ন অংশের পাশাপাশি মসজিদে নববির মিনারও দেখা যাবে এই ভ্রমণে। আরও দেখা যাবে মসজিদে নববির ভেতরের দৃশ্য, মসজিদে নববির ছাদ, লাইব্রেরি ও বাকি গোরস্তানসহ আশপাশের সবকিছুই। ভার্চুয়ালি মসজিদে নববি দেখার সময় কম্পিউটার বা মুঠোফোনের পর্দার আকার ছোট বা বড় করে দেখা যাবে। শুধু তা-ই নয়, পর্দার ডান পাশে থাকা বিভিন্ন অপশন কাজে লাগিয়ে ছবিগুলো টুইটার ও ফেইসবুকে শেয়ারও করা যাবে।
ঘরে বসেই মসজিদে নববির ভেতর-বাহির ঘুরে দেখতে, নবী করিম (সা.)-এর পবিত্র রওজা ও জান্নাতের এক টুকরো ভূমি হিসেবে পরিচিত পবিত্র রিয়াজুল জান্নাহ দেখে মন ভরানোর এই আয়োজনটি করেছে সৌদি আরবের সরকারি সংস্থা ‘কিং ফাহাদ গ্লোরিয়াস কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স’-এর ভার্চুয়াল রিয়েলিটি টিম।
২০০১ সালে কিং ফাহাদ গ্লোরিয়াস কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স কর্র্তৃপক্ষ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন সৌদি আরবের ইসলামবিষয়ক মন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ বিন আবদুল আজিজ আল শায়েখ, নির্বাহী তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন শায়খ তালাল বিন রাজিন আল রেহাইলি এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও ফটোগ্রাফার ছিলেন যথাক্রমে আলি ইবনে আবদুল্লাহ বর্নাভি ও হানি ইবনে জাকি আল ফুল।
২০১০ সালে পবিত্র মসজিদের নববির ভেতর-বাহিরের অর্ধশত উচ্চমানের ছবি যুক্ত করে এই চমৎকার সাইটটি তৈরি করা হয়। ৩৬০ ডিগ্রিতে ছবিগুলো ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।

দৈনিক দেশ নিউজ ডটকম ডেস্ক 

























