বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএম ডিপোর আগুনে পুড়েছে ২১২ কোটি টাকার রপ্তানি পণ্য

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় দুই কোটি ডলার বা ২১২ কোটি টাকার রপ্তানি পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিএম ডিপোতে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে রপ্তানি পণ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ বিষয়ক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রস্তুত করা ওই প্রতিবেদন গত ৪ এপ্রিল এনবিআরে দাখিল করা হয়েছে। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রতিবেদনে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ও অক্ষত- এ তিন ভাগে রপ্তানি পণ্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে। মোট রপ্তানির জন্য প্রস্তুত পণ্যের তথ্যে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার ৬২১ ডলারের পণ্য সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। যার মধ্যে সিএফএস-১ শেডে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ইনভয়েস মূল্য ১ কোটি ৭ লাখ ৭৮ হাজার ১০৩ ডলার। স্টাফড কন্টেইনারে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ইনভয়েস মূল্য ৭৮ লাখ ১৫ হাজার ৫১৭ ডলার। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ইনভয়েস মূল্য ৭ লাখ ৭০ হাজার ৮৪৮ ডলার। সিএফএস-২ শেডে মজুতকৃত ৬২ লাখ ৩২ হাজার ১৭১ ডলারের পণ্য সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছে। এছাড়া স্টাফড কন্টেইনারে ২ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪২ ডলারের পণ্য এবং কাভার্ডভ্যানের ২৬ লাখ ২০ হাজার ৬৫০ ডলারের পণ্য অক্ষত দেখানো হয়েছে। তদন্তে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার ৬২১ ডলারের পণ্য সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত দেখানো হয়েছে। এতে ১ হাজার ২৩২টি শিপিং বিলের বিপরীতে ২ লাখ ৩২ হাজার ৩৯২ কার্টুন পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর মধ্যে ডিপোর সিএফএস-১ শেডে ১ কোটি ৭ লাখ ৭৮ হাজার ১০০ ডলার মূল্যের পণ্য নিরূপণ করা হয়েছে। এতে ৮১৯টি শিপিং বিলের বিপরীতে ১ লাখ ২৬ হাজার ৬২৫ কার্টুন পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া স্টাফড কন্টেইনারে ৭৮ লাখ ১৫ হাজার ৫১৭ ডলার মূল্যের পণ্য নিরূপণ করা হয়েছে। এতে ৪৯৩টি শিপিং বিলের বিপরীতে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৬৮ কার্টুন পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া তদন্তে ৭ লাখ ৭০ হাজার ৮৪৮ ডলার সমমূল্যের পণ্য আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে পণ্য অক্ষত কিন্তু ধোঁয়ার গন্ধ বিদ্যমান এমন পণ্যের মূল্য ৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৮৫ ডলার এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেখানো হয়েছে ৯৭ হাজার ৪৬৩ ডলারের পণ্য। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের পাশাপাশি অক্ষত পণ্যের তথ্যও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। সম্পূর্ণ শার্ট আউট দেখানো হয়েছে ৬৪ লাখ ৭ হাজার ৪৬৯ ডলারের পণ্য। আংশিক শার্ট আউট দেখানো হয়েছে ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৪১৪ ডলারের পণ্য। এছাড়া বিএম ডিপোর মাধ্যমে রপ্তানিকৃত পণ্য দেখানো হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৯৪ হাজার ৩৩৭ ডলারের। রপ্তানির অপেক্ষায় বিএম ডিপোতে মজুতকৃত পণ্য দেখানো হয়েছে ৯২ লাখ ৭৩ হাজার ৭০০ ডলারের পণ্য। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের ফলে ডিপোতে রক্ষিত কন্টেইনারজাত পণ্যের কিছু সম্পূর্ণ এবং কিছু আংশিক পুড়ে গেছে। অন্যদিকে ডিপোর সিএফএস-১ শেডে রক্ষিত সব পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সিএফএস-২ শেডে রক্ষিত পণ্য অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৪ জুন রাতে এ কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৫০ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন দুই শতাধিক মানুষ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

বিএম ডিপোর আগুনে পুড়েছে ২১২ কোটি টাকার রপ্তানি পণ্য

প্রকাশিত সময় : ০৫:৪৭:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় দুই কোটি ডলার বা ২১২ কোটি টাকার রপ্তানি পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিএম ডিপোতে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে রপ্তানি পণ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ বিষয়ক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রস্তুত করা ওই প্রতিবেদন গত ৪ এপ্রিল এনবিআরে দাখিল করা হয়েছে। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রতিবেদনে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ও অক্ষত- এ তিন ভাগে রপ্তানি পণ্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে। মোট রপ্তানির জন্য প্রস্তুত পণ্যের তথ্যে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার ৬২১ ডলারের পণ্য সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। যার মধ্যে সিএফএস-১ শেডে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ইনভয়েস মূল্য ১ কোটি ৭ লাখ ৭৮ হাজার ১০৩ ডলার। স্টাফড কন্টেইনারে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ইনভয়েস মূল্য ৭৮ লাখ ১৫ হাজার ৫১৭ ডলার। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ইনভয়েস মূল্য ৭ লাখ ৭০ হাজার ৮৪৮ ডলার। সিএফএস-২ শেডে মজুতকৃত ৬২ লাখ ৩২ হাজার ১৭১ ডলারের পণ্য সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছে। এছাড়া স্টাফড কন্টেইনারে ২ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪২ ডলারের পণ্য এবং কাভার্ডভ্যানের ২৬ লাখ ২০ হাজার ৬৫০ ডলারের পণ্য অক্ষত দেখানো হয়েছে। তদন্তে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার ৬২১ ডলারের পণ্য সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত দেখানো হয়েছে। এতে ১ হাজার ২৩২টি শিপিং বিলের বিপরীতে ২ লাখ ৩২ হাজার ৩৯২ কার্টুন পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর মধ্যে ডিপোর সিএফএস-১ শেডে ১ কোটি ৭ লাখ ৭৮ হাজার ১০০ ডলার মূল্যের পণ্য নিরূপণ করা হয়েছে। এতে ৮১৯টি শিপিং বিলের বিপরীতে ১ লাখ ২৬ হাজার ৬২৫ কার্টুন পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া স্টাফড কন্টেইনারে ৭৮ লাখ ১৫ হাজার ৫১৭ ডলার মূল্যের পণ্য নিরূপণ করা হয়েছে। এতে ৪৯৩টি শিপিং বিলের বিপরীতে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৬৮ কার্টুন পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া তদন্তে ৭ লাখ ৭০ হাজার ৮৪৮ ডলার সমমূল্যের পণ্য আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে পণ্য অক্ষত কিন্তু ধোঁয়ার গন্ধ বিদ্যমান এমন পণ্যের মূল্য ৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৮৫ ডলার এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেখানো হয়েছে ৯৭ হাজার ৪৬৩ ডলারের পণ্য। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের পাশাপাশি অক্ষত পণ্যের তথ্যও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। সম্পূর্ণ শার্ট আউট দেখানো হয়েছে ৬৪ লাখ ৭ হাজার ৪৬৯ ডলারের পণ্য। আংশিক শার্ট আউট দেখানো হয়েছে ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৪১৪ ডলারের পণ্য। এছাড়া বিএম ডিপোর মাধ্যমে রপ্তানিকৃত পণ্য দেখানো হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৯৪ হাজার ৩৩৭ ডলারের। রপ্তানির অপেক্ষায় বিএম ডিপোতে মজুতকৃত পণ্য দেখানো হয়েছে ৯২ লাখ ৭৩ হাজার ৭০০ ডলারের পণ্য। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের ফলে ডিপোতে রক্ষিত কন্টেইনারজাত পণ্যের কিছু সম্পূর্ণ এবং কিছু আংশিক পুড়ে গেছে। অন্যদিকে ডিপোর সিএফএস-১ শেডে রক্ষিত সব পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সিএফএস-২ শেডে রক্ষিত পণ্য অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৪ জুন রাতে এ কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৫০ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন দুই শতাধিক মানুষ।