বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামবাসী ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ

একদিকে তীব্র তাপদাহ অন্যদিকে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চট্টগ্রামের মানুষ। বিদ্যুৎ সংকটের কারণে ঠিক মতো মিলছে না পানি সরবরাহও। এদিকে, শহরের চেয়ে গ্রামের অবস্থা আরও ভয়াবহ বলে জানা গেছে। গ্রামে দিনের ২৪ ঘণ্টায় ৩/৪ ঘণ্টাও ঠিকভাবে বিদ্যুৎ মিলছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । 

চট্টগ্রাম মহানগরীর অক্সিজেন এলাকার গৃহিনী আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। একদিকে প্রচন্ড গরম এর মধ্যে দিনের অধিকাংশ সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না। ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে। এই অবস্থায় পানির স্বাভাবিক সরবরাহও মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে জীবন যাপন করা দুঃসহ হয়ে উঠেছে।

চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি সুয়াবিল গ্রামের এয়াকুব আলী বলেন, ‘শহরে দুই এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের পর বিদ্যুতের দেখা পাওয়া গেলেও গ্রামের চিত্র ভয়াবহ। গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ মেলে দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৫/২০ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই।’

চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকার একটি বাড়ির মালিক খোরশেদ আলম বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় পানির সংকট চরমে পৌঁছেছে। আমরা সংকটময় পরিস্থিতি অতিক্রম করছি। পানির সরবরাহ মাঝে মধ্যে পাওয়া গেলেও সেই পানি বাড়ির ছাদের ট্যাঙ্কিতে তোলার জন্য মোটর চালানো যায় না বিদ্যুৎ না থাকায়। ফলে বিদ্যুৎ ও পানি না পেয়ে বাড়ির ভাড়াটিয়ারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।’

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক চৌধুরী বলেন, ‘তীব্র গরমের কারণে বিদ্যুৎতের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে দৈনিক (অফপিক আওয়ারে) ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে, পিক আওয়ারে এই চাহিদা আরও ৫০০-৬০০ মেগাওয়াট বেশি। কিন্তু চাহিদার বিপরীতে ১০০০ মেগাওয়াটের বেশি সরবরাহ মিলছে না। ফলে দিনে ৩০০ থেকে ৬০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। বৃষ্টিপাত শুরু হলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পূর্ণ ক্ষমতায় উৎপাদনে যাবে। তখন বিদ্যুতের চাহিদাও কমে আসবে। ফলে লোডশেডিং আর থাকবে না।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

চট্টগ্রামবাসী ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ

প্রকাশিত সময় : ১১:১৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩

একদিকে তীব্র তাপদাহ অন্যদিকে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চট্টগ্রামের মানুষ। বিদ্যুৎ সংকটের কারণে ঠিক মতো মিলছে না পানি সরবরাহও। এদিকে, শহরের চেয়ে গ্রামের অবস্থা আরও ভয়াবহ বলে জানা গেছে। গ্রামে দিনের ২৪ ঘণ্টায় ৩/৪ ঘণ্টাও ঠিকভাবে বিদ্যুৎ মিলছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । 

চট্টগ্রাম মহানগরীর অক্সিজেন এলাকার গৃহিনী আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। একদিকে প্রচন্ড গরম এর মধ্যে দিনের অধিকাংশ সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না। ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে। এই অবস্থায় পানির স্বাভাবিক সরবরাহও মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে জীবন যাপন করা দুঃসহ হয়ে উঠেছে।

চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি সুয়াবিল গ্রামের এয়াকুব আলী বলেন, ‘শহরে দুই এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের পর বিদ্যুতের দেখা পাওয়া গেলেও গ্রামের চিত্র ভয়াবহ। গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ মেলে দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৫/২০ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই।’

চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকার একটি বাড়ির মালিক খোরশেদ আলম বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় পানির সংকট চরমে পৌঁছেছে। আমরা সংকটময় পরিস্থিতি অতিক্রম করছি। পানির সরবরাহ মাঝে মধ্যে পাওয়া গেলেও সেই পানি বাড়ির ছাদের ট্যাঙ্কিতে তোলার জন্য মোটর চালানো যায় না বিদ্যুৎ না থাকায়। ফলে বিদ্যুৎ ও পানি না পেয়ে বাড়ির ভাড়াটিয়ারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।’

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক চৌধুরী বলেন, ‘তীব্র গরমের কারণে বিদ্যুৎতের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে দৈনিক (অফপিক আওয়ারে) ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে, পিক আওয়ারে এই চাহিদা আরও ৫০০-৬০০ মেগাওয়াট বেশি। কিন্তু চাহিদার বিপরীতে ১০০০ মেগাওয়াটের বেশি সরবরাহ মিলছে না। ফলে দিনে ৩০০ থেকে ৬০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। বৃষ্টিপাত শুরু হলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পূর্ণ ক্ষমতায় উৎপাদনে যাবে। তখন বিদ্যুতের চাহিদাও কমে আসবে। ফলে লোডশেডিং আর থাকবে না।’