শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাঞ্জশিরে বেসামরিক জনগণকেও হত্যা করছে তালেবান

পাঞ্জশির উপত্যকায় কমপক্ষে ২০ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে তালেবান। সেইসাথে এই উপত্যকার সাথে সবরকমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ অবস্থায় সংবাদ সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়লেও, তালেবানের মানুষ হত্যার প্রমাণ রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বিবিসির তথ্য মতে, উপত্যকার একটি রাস্তার ধারের ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে, যেখানে দেখা যায়, একজন সাধারণ ব্যক্তিকে ঘিরে রেখেছে সশস্ত্র তালেবান সদস্যরা। এরপর গুলির শব্দ এবং দেখা যায় লোকটি মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। নিহত ওই ব্যক্তি সেনাবাহিনীর সদস্য কিনা তা ভিডিওতে স্পষ্ট বোঝা না গেলেও একজন প্রত্যক্ষদর্শী জোর দাবি জানিয়েছেন যে, ওই ব্যাক্তি সাধারণ মানুষ।

এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, এলাকার এক দোকানদারেরও মৃত্যু হয়েছে তালেবানের নির্যাতনে। আবদুল সামি নামের ওই দোকানদার ভেবেছিলেন, সাধারণ দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ, যার সাথে যুদ্ধের কোন সম্পর্ক নেই, তাকে কেন হত্যা করবে তালেবান? কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কাছে মোবাইল ফোনের সিম কার্ড বিক্রি করার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির মরদেহে নৃশংস নির্যাতনের চিহ্ন দেখেছেন তারা।

পাঞ্জশিরে এ ধরণের কমপক্ষে ২০টি হত্যার প্রমাণ রয়েছে বিবিসি’র কাছে।

তালেবান আফগানিস্তানের দখল নিলেও শুধুমাত্র এই উপত্যকাটিই এর বাইরে ছিল। আর এই পাঞ্জশির উপত্যকা বরাবরই প্রতিরোধের কেন্দ্রবিন্দু। এখানকার নেতা আহমদ শাহ মাসউদের অধীনে গড়ে ওঠা তালেবান প্রতিরোধ বাহিনী এর আগে ২০০১ সালেও একইভাবে তালেবান প্রতিরোধ করেছিল। শুধু তাই নয়, তার আগে সোভিয়েত বাহিনীর আগ্রাসনের সময়ও এই উপত্যকা থেকে জোর প্রতিরোধ ছিল তাদের। উপত্যকাটি পুরোটাই ঘিরে রেখেছে পাহাড়। যেকারণে কারও পক্ষেই এই অঞ্চলের দখল নেয়া সহজ নয়। এখন দেখার বিষয় এবারে কী হতে চলেছে।

এদিকে পাঞ্জশিরের সাধারণ জনগণকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের পরামর্শ দিচ্ছেন তালেবান শীর্ষ নেতারা। যদিও বাস্তবের চিত্র অনেকটাই আলাদা। এখন এই উপত্যকার বেশিরভাগ রাস্তা-ঘাট ফাঁকা, হাট-বাজারেও মানুষের ভিড় নেই। লোকজন এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছে। এরইমধ্যে এই উপত্যকায় খাদ্য ও খাবারের ঘাটতি হতে পারে বলেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

পাঞ্জশিরে বেসামরিক জনগণকেও হত্যা করছে তালেবান

প্রকাশিত সময় : ১০:৩৪:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

পাঞ্জশির উপত্যকায় কমপক্ষে ২০ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে তালেবান। সেইসাথে এই উপত্যকার সাথে সবরকমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ অবস্থায় সংবাদ সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়লেও, তালেবানের মানুষ হত্যার প্রমাণ রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বিবিসির তথ্য মতে, উপত্যকার একটি রাস্তার ধারের ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে, যেখানে দেখা যায়, একজন সাধারণ ব্যক্তিকে ঘিরে রেখেছে সশস্ত্র তালেবান সদস্যরা। এরপর গুলির শব্দ এবং দেখা যায় লোকটি মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। নিহত ওই ব্যক্তি সেনাবাহিনীর সদস্য কিনা তা ভিডিওতে স্পষ্ট বোঝা না গেলেও একজন প্রত্যক্ষদর্শী জোর দাবি জানিয়েছেন যে, ওই ব্যাক্তি সাধারণ মানুষ।

এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, এলাকার এক দোকানদারেরও মৃত্যু হয়েছে তালেবানের নির্যাতনে। আবদুল সামি নামের ওই দোকানদার ভেবেছিলেন, সাধারণ দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ, যার সাথে যুদ্ধের কোন সম্পর্ক নেই, তাকে কেন হত্যা করবে তালেবান? কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কাছে মোবাইল ফোনের সিম কার্ড বিক্রি করার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির মরদেহে নৃশংস নির্যাতনের চিহ্ন দেখেছেন তারা।

পাঞ্জশিরে এ ধরণের কমপক্ষে ২০টি হত্যার প্রমাণ রয়েছে বিবিসি’র কাছে।

তালেবান আফগানিস্তানের দখল নিলেও শুধুমাত্র এই উপত্যকাটিই এর বাইরে ছিল। আর এই পাঞ্জশির উপত্যকা বরাবরই প্রতিরোধের কেন্দ্রবিন্দু। এখানকার নেতা আহমদ শাহ মাসউদের অধীনে গড়ে ওঠা তালেবান প্রতিরোধ বাহিনী এর আগে ২০০১ সালেও একইভাবে তালেবান প্রতিরোধ করেছিল। শুধু তাই নয়, তার আগে সোভিয়েত বাহিনীর আগ্রাসনের সময়ও এই উপত্যকা থেকে জোর প্রতিরোধ ছিল তাদের। উপত্যকাটি পুরোটাই ঘিরে রেখেছে পাহাড়। যেকারণে কারও পক্ষেই এই অঞ্চলের দখল নেয়া সহজ নয়। এখন দেখার বিষয় এবারে কী হতে চলেছে।

এদিকে পাঞ্জশিরের সাধারণ জনগণকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের পরামর্শ দিচ্ছেন তালেবান শীর্ষ নেতারা। যদিও বাস্তবের চিত্র অনেকটাই আলাদা। এখন এই উপত্যকার বেশিরভাগ রাস্তা-ঘাট ফাঁকা, হাট-বাজারেও মানুষের ভিড় নেই। লোকজন এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছে। এরইমধ্যে এই উপত্যকায় খাদ্য ও খাবারের ঘাটতি হতে পারে বলেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি