রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিকিম বন্যা নিহত ১৪, নিখোঁজ ১০২, আটকা ৩ হাজারেরও বেশি পর্যটক

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমের লোনাক হ্রদে মেঘভাঙা (ক্লাউড বার্স্ট) বৃষ্টিতে তিস্তা নদীতে আকস্মিক বন্যার কারণে ভেসে গেছে আশেপাশের ৭০ভাগ এলাকা। প্রবল বৃষ্টিপাত থেকে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার ফলে ১৪ জন বেসামরিক লোক মারা গেছে এবং ২২ সেনা সদস্যসহ ১০২ জন নিখোঁজ রয়েছে।

সরকারি এক কর্মকর্তার বরাতে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

সরকারী কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন যে, বন্যার পানির তোড়ে ১৪টি সেতু ভেঙে পড়েছে এবং রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ৩ হাজারেরও বেশি পর্যটক আটকা পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সময় বুধবার ভোররাতে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সিকিমের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় অবস্থিত দক্ষিণ লোনক হ্রদের পানি উপচে এই বন্যার সৃষ্টি হয়। পানি উপচে চুংথাং বাঁধের কিছু অংশ ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

সিকিম সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের অধীনে এই বিপর্যয়কে দুর্যোগ ঘোষণা করেছে।

এদিকে বুধবার সিংটাম শহরের কাছে বারডাং থেকে পানির স্রোতে নিখোঁজ হওয়া ২৩ জন সেনা সদস্যের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে সিকিম সেনাবাহিনী।

এদিকে চুংথাংয়ের তিস্তা বাঁধে কাজ করা প্রায় ১৪ জন শ্রমিক এখনও টানেলে আটকা পড়ে আছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। বাঁধের কিছু অংশ ভেসে যাওয়ায় আটকা পড়েন তারা।

এ ছাড়া মাঙ্গান জেলার চুংথাং, গ্যাংটক জেলার ডিকচু ও সিংটাম এবং পাকিয়ং জেলার রংপো থেকে আহত ও নিখোঁজদের খবর পাওয়া গেছে। ২৫ জনেরও বেশি লোককে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি কর্মকর্তা।

এদিকে মাঙ্গান জেলার সাংকালান এবং টুং-এ আকস্মিক বন্যায় ফাইবার ক্যাবল লাইন ধ্বংস হওয়ার কারণে চুংথাং এবং উত্তর সিকিমের বেশিরভাগ অংশে মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ব্রডব্যান্ড সংযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। চুংথাংয়ের পুলিশ স্টেশনটিও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এনডিটিভি জানায়, সিকিম রাজ্য সরকার উদ্ধার অভিযানের জন্য জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া দলের কাছে তিনটি অতিরিক্ত প্লাটুনের জন্য অনুরোধ করেছে, যা কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন করেছে। এছাড়া এনডিআরএফ-এর এক প্লাটুন ইতিমধ্যেই রংপো এবং সিংটাম শহরে ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।

সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে সিংটাম পরিদর্শন করেছেন এবং রাজ্যের সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সিকিম বন্যা নিহত ১৪, নিখোঁজ ১০২, আটকা ৩ হাজারেরও বেশি পর্যটক

প্রকাশিত সময় : ১২:৩০:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমের লোনাক হ্রদে মেঘভাঙা (ক্লাউড বার্স্ট) বৃষ্টিতে তিস্তা নদীতে আকস্মিক বন্যার কারণে ভেসে গেছে আশেপাশের ৭০ভাগ এলাকা। প্রবল বৃষ্টিপাত থেকে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার ফলে ১৪ জন বেসামরিক লোক মারা গেছে এবং ২২ সেনা সদস্যসহ ১০২ জন নিখোঁজ রয়েছে।

সরকারি এক কর্মকর্তার বরাতে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

সরকারী কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন যে, বন্যার পানির তোড়ে ১৪টি সেতু ভেঙে পড়েছে এবং রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ৩ হাজারেরও বেশি পর্যটক আটকা পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সময় বুধবার ভোররাতে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সিকিমের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় অবস্থিত দক্ষিণ লোনক হ্রদের পানি উপচে এই বন্যার সৃষ্টি হয়। পানি উপচে চুংথাং বাঁধের কিছু অংশ ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

সিকিম সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের অধীনে এই বিপর্যয়কে দুর্যোগ ঘোষণা করেছে।

এদিকে বুধবার সিংটাম শহরের কাছে বারডাং থেকে পানির স্রোতে নিখোঁজ হওয়া ২৩ জন সেনা সদস্যের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে সিকিম সেনাবাহিনী।

এদিকে চুংথাংয়ের তিস্তা বাঁধে কাজ করা প্রায় ১৪ জন শ্রমিক এখনও টানেলে আটকা পড়ে আছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। বাঁধের কিছু অংশ ভেসে যাওয়ায় আটকা পড়েন তারা।

এ ছাড়া মাঙ্গান জেলার চুংথাং, গ্যাংটক জেলার ডিকচু ও সিংটাম এবং পাকিয়ং জেলার রংপো থেকে আহত ও নিখোঁজদের খবর পাওয়া গেছে। ২৫ জনেরও বেশি লোককে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি কর্মকর্তা।

এদিকে মাঙ্গান জেলার সাংকালান এবং টুং-এ আকস্মিক বন্যায় ফাইবার ক্যাবল লাইন ধ্বংস হওয়ার কারণে চুংথাং এবং উত্তর সিকিমের বেশিরভাগ অংশে মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ব্রডব্যান্ড সংযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। চুংথাংয়ের পুলিশ স্টেশনটিও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এনডিটিভি জানায়, সিকিম রাজ্য সরকার উদ্ধার অভিযানের জন্য জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া দলের কাছে তিনটি অতিরিক্ত প্লাটুনের জন্য অনুরোধ করেছে, যা কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন করেছে। এছাড়া এনডিআরএফ-এর এক প্লাটুন ইতিমধ্যেই রংপো এবং সিংটাম শহরে ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।

সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে সিংটাম পরিদর্শন করেছেন এবং রাজ্যের সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।