রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হামাস আসলে কী চায়

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে টানা সাতদিন ধরে চলছে তুমুল লড়াই। গত শনিবার গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে পাঁচ হাজার রকেট ছুড়ে হামাস। এরপর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীও পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। ইতিমধ্যে উভয়পক্ষে নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস ইসরায়েলে ঢুকে দেশটির সেনাবাহিনীকে পরাজিত করবে এমন সক্ষমতা তাদের নেই। আবার ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকা দখল করে দিনের পর দিন সেটা ধরে রাখবে হামাসের পক্ষে সেটাও সম্ভব না। বাস্তবে সেটা হয়ওনি। এমনকি ইসরায়েলের বিমান হামলা মোকাবেলা করার ক্ষমতাও হামাসের নেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, হামাস তাহলে এতো সুচিন্তিতভাবে ইসরায়েলে এমন একটি হামলা কেন করতে গেল? এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করছেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা। প্রথমত, গত রমজানে আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিশোধ। দ্বিতীয়ত, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী যে অজেয় নয়, সেটা প্রমাণ করা। তবে হামাসের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ভিন্ন। মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো খালেদ এনগিন্দি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলছেন, হামাস মূলত, চায় ফিলিস্তিনের ইস্যুগুলোকে আবারও আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে। তিনি বলেন, গাজার পরিস্থিতি মাঝেমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। রকেট হামলা হবে-এরপর হবে পাল্টা বিমান হামলা। কয়েকদিন পর আবার যুদ্ধ বন্ধ হবে। কিন্তু গাজাবাসীর বাস্তবতার পরিবর্তন হবে না। বছরের পর বছর ধরে এই যে একটা খেলা, হামাস সেটা বদলে দিতে চায়। তারা চায়, গাজার চিরস্থায়ী অবরুদ্ধ দশার সমাধান হোক। এমন একটা উপায় বের করা হোক যেটা ইসরায়েলের দখলদারিত্বের সমাপ্তি টানবে, নতুন বসতি স্থাপন বন্ধ করবে। একই মত দিচ্ছেন ইসরায়েল ভিত্তিক থিংক ট্যাংক দ্য ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ (আইএনএসএস) এর জ্যেষ্ঠ গবেষক ইয়োহানা জোরেফ। তবে তার মতে, ফিলিস্তিন ইস্যুকে আবারো আলোচনায় আনার পাশাপাশি আরো দুটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করতে চায় হামাস। সেটা হচ্ছে, জিম্মিদের ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী হামাস নেতাদের মুক্ত করা এবং আল আকসা মসজিদে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপ বন্ধ করা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

হামাস আসলে কী চায়

প্রকাশিত সময় : ০৯:০৪:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে টানা সাতদিন ধরে চলছে তুমুল লড়াই। গত শনিবার গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে পাঁচ হাজার রকেট ছুড়ে হামাস। এরপর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীও পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। ইতিমধ্যে উভয়পক্ষে নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস ইসরায়েলে ঢুকে দেশটির সেনাবাহিনীকে পরাজিত করবে এমন সক্ষমতা তাদের নেই। আবার ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকা দখল করে দিনের পর দিন সেটা ধরে রাখবে হামাসের পক্ষে সেটাও সম্ভব না। বাস্তবে সেটা হয়ওনি। এমনকি ইসরায়েলের বিমান হামলা মোকাবেলা করার ক্ষমতাও হামাসের নেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, হামাস তাহলে এতো সুচিন্তিতভাবে ইসরায়েলে এমন একটি হামলা কেন করতে গেল? এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করছেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা। প্রথমত, গত রমজানে আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিশোধ। দ্বিতীয়ত, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী যে অজেয় নয়, সেটা প্রমাণ করা। তবে হামাসের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ভিন্ন। মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো খালেদ এনগিন্দি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলছেন, হামাস মূলত, চায় ফিলিস্তিনের ইস্যুগুলোকে আবারও আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে। তিনি বলেন, গাজার পরিস্থিতি মাঝেমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। রকেট হামলা হবে-এরপর হবে পাল্টা বিমান হামলা। কয়েকদিন পর আবার যুদ্ধ বন্ধ হবে। কিন্তু গাজাবাসীর বাস্তবতার পরিবর্তন হবে না। বছরের পর বছর ধরে এই যে একটা খেলা, হামাস সেটা বদলে দিতে চায়। তারা চায়, গাজার চিরস্থায়ী অবরুদ্ধ দশার সমাধান হোক। এমন একটা উপায় বের করা হোক যেটা ইসরায়েলের দখলদারিত্বের সমাপ্তি টানবে, নতুন বসতি স্থাপন বন্ধ করবে। একই মত দিচ্ছেন ইসরায়েল ভিত্তিক থিংক ট্যাংক দ্য ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ (আইএনএসএস) এর জ্যেষ্ঠ গবেষক ইয়োহানা জোরেফ। তবে তার মতে, ফিলিস্তিন ইস্যুকে আবারো আলোচনায় আনার পাশাপাশি আরো দুটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করতে চায় হামাস। সেটা হচ্ছে, জিম্মিদের ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী হামাস নেতাদের মুক্ত করা এবং আল আকসা মসজিদে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপ বন্ধ করা।