শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজধানীতে গণপরিবহন কম, বিপাকে সাধারণ মানুষ

বিএনপি-জামায়াত ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচী চলাকালে সকাল থেকেই রাজধানীতে গণ পরিবহন সংকটে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে যাত্রী সংকটের কারণে লঞ্চ ও বাসের সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।  হরতাল ও অবরোধের প্রথম দিনের তুলনায় গাড়ির সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অনেক কম। এর ফলে অফিসগামী মানুষদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। যাত্রী সংকটে ঢাকা ছাড়ছে না কোনো দূরপাল্লার বাসও।

বুধবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর পলাশী, উত্তরা, বাড্ডা, গাবতলী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব এলাকায় ঢাকার আন্তঃনগর পরিবহনের বাসগুলো অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলতে দেখা গেলেও সংখ্যায় অনেক কম। তবে বাসে যেসব যাত্রী উঠছেন তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।

বিজয়নগর যাওয়ার জন্য উত্তরা জসিম উদ্দিন রোডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, যানজটের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিদিন সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বাসা থেকে বের হই। অবরোধে সড়ক ফাঁকা থাকবে জেনে আজ আটটার পর বের হয়েছি। কিছুক্ষণ আগে এসে দাঁড়ালাম। সড়কে গাড়ি কম চলছে। তবে আশা করছি গাড়িতে উঠতে পারব।

 

 

অবরোধের কারণে মনে কোনো আতঙ্ক কাজ করছে কিনা জানতে চাইলে আমিনুল বলেন, ‘যেভাবে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয় তাতে আতঙ্ক থাকাটা স্বাভাবিক। অফিস কাছাকাছি হলে হেঁটেই যেতাম। আমার অনুরোধ দলগুলো যেন একসঙ্গে বসে সমস্যা সমাধান করে। কেননা এভাবে হরতাল অবরোধ দিলে তাতে তো দেশেরই ক্ষতি হয়। আমাদের ভোগান্তি তো আছেই।’

জমিস উদ্দিন রোড এলাকায় গণপরিবহন কম চলতে দেখা গেলেও প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা ছিল বেশি। তবে এই সংখ্যাটাও অন্যান্য দিনের তুলনায় কম।

 

 

গণপরিবহন কম থাকায় অটোরিকশা চালকরা অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। এতে অনেক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে উত্তর বাড্ডা যাওয়ার জন্য জসিম উদ্দিন রোডে এক অটোচালকের সঙ্গে দর কষাকষি করছিলেন সুলতান আহমেদ। একপর্যায়ে ফিরে এসে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুর্বলতার সুযোগ সবাই কাজে লাগায়। পুরো সড়ক ফাঁকা। অথচ আগের তুলনায় দাম বেশি চাচ্ছে। এজন্য বাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

গাবতলীতেও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ঢাকায় চলাচল করা গণপরিবহন কম দেখা গেছে। ফাঁকা সড়ক পেয়ে গাড়িগুলো দ্রুত গন্তব্যস্থলে যাচ্ছে। গাবতলী থেকে দূরপাল্লার বাস চলছে না বললেই চলে।

 

হানিফ পরিবহনের এক কর্মী বলেন, আতঙ্কের কারণে যাত্রী না আসায় আমরা বাস ছাড়ছি না। অথচ প্রতি ঘণ্টায় আমাদের বাস ছেড়ে যায়। তাছাড়া কোনো গাড়ি ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলে মালিক কিংবা শ্রমিকদের অনেক ক্ষতি হয়। সেই আতঙ্ক থেকেও বাস ছাড়ছে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

রাজধানীতে গণপরিবহন কম, বিপাকে সাধারণ মানুষ

প্রকাশিত সময় : ১০:৩৬:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩

বিএনপি-জামায়াত ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচী চলাকালে সকাল থেকেই রাজধানীতে গণ পরিবহন সংকটে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে যাত্রী সংকটের কারণে লঞ্চ ও বাসের সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।  হরতাল ও অবরোধের প্রথম দিনের তুলনায় গাড়ির সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অনেক কম। এর ফলে অফিসগামী মানুষদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। যাত্রী সংকটে ঢাকা ছাড়ছে না কোনো দূরপাল্লার বাসও।

বুধবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর পলাশী, উত্তরা, বাড্ডা, গাবতলী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব এলাকায় ঢাকার আন্তঃনগর পরিবহনের বাসগুলো অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলতে দেখা গেলেও সংখ্যায় অনেক কম। তবে বাসে যেসব যাত্রী উঠছেন তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।

বিজয়নগর যাওয়ার জন্য উত্তরা জসিম উদ্দিন রোডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, যানজটের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিদিন সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বাসা থেকে বের হই। অবরোধে সড়ক ফাঁকা থাকবে জেনে আজ আটটার পর বের হয়েছি। কিছুক্ষণ আগে এসে দাঁড়ালাম। সড়কে গাড়ি কম চলছে। তবে আশা করছি গাড়িতে উঠতে পারব।

 

 

অবরোধের কারণে মনে কোনো আতঙ্ক কাজ করছে কিনা জানতে চাইলে আমিনুল বলেন, ‘যেভাবে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয় তাতে আতঙ্ক থাকাটা স্বাভাবিক। অফিস কাছাকাছি হলে হেঁটেই যেতাম। আমার অনুরোধ দলগুলো যেন একসঙ্গে বসে সমস্যা সমাধান করে। কেননা এভাবে হরতাল অবরোধ দিলে তাতে তো দেশেরই ক্ষতি হয়। আমাদের ভোগান্তি তো আছেই।’

জমিস উদ্দিন রোড এলাকায় গণপরিবহন কম চলতে দেখা গেলেও প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা ছিল বেশি। তবে এই সংখ্যাটাও অন্যান্য দিনের তুলনায় কম।

 

 

গণপরিবহন কম থাকায় অটোরিকশা চালকরা অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। এতে অনেক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে উত্তর বাড্ডা যাওয়ার জন্য জসিম উদ্দিন রোডে এক অটোচালকের সঙ্গে দর কষাকষি করছিলেন সুলতান আহমেদ। একপর্যায়ে ফিরে এসে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুর্বলতার সুযোগ সবাই কাজে লাগায়। পুরো সড়ক ফাঁকা। অথচ আগের তুলনায় দাম বেশি চাচ্ছে। এজন্য বাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

গাবতলীতেও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ঢাকায় চলাচল করা গণপরিবহন কম দেখা গেছে। ফাঁকা সড়ক পেয়ে গাড়িগুলো দ্রুত গন্তব্যস্থলে যাচ্ছে। গাবতলী থেকে দূরপাল্লার বাস চলছে না বললেই চলে।

 

হানিফ পরিবহনের এক কর্মী বলেন, আতঙ্কের কারণে যাত্রী না আসায় আমরা বাস ছাড়ছি না। অথচ প্রতি ঘণ্টায় আমাদের বাস ছেড়ে যায়। তাছাড়া কোনো গাড়ি ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলে মালিক কিংবা শ্রমিকদের অনেক ক্ষতি হয়। সেই আতঙ্ক থেকেও বাস ছাড়ছে না।