শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় মানবিক সহায়তায় ডব্লিউএইচও’র বিরল পদক্ষেপ

দুই মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর অবিরাম হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে ৫০ হাজারের বেশি। গাজায় আর কোনো নিরাপদ জায়গা নেই বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ

গতকাল জাতিসংঘের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘গাজায় এখনো যুদ্ধ চলছে, এবং সেখানকার অর্ধেক জনগোষ্ঠীই প্রচণ্ড খাদ্যাভাবে আছে।’ জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর কার্ল স্কাউ বলেন, ‘এখানে প্রতিদিন মোট যে পরিমাণ খাদ্য সাহায্য দরকার তার খুব সামান্য পরিমাণই কেবল এখানে প্রবেশ করতে পারছে। গাজায় প্রতি ১০ জনের নয়জনই দৈনিক ঠিকমতো খাবার পাচ্ছেন না।’

এবার সেই গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বিরল পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল রবিবার এক বৈঠকে এ বিষয়ক প্রস্তাব পাস করে ডব্লিউএইচও’র ৩৪ সদস্যের নির্বাহী বোর্ড। ওই প্রস্তাবে গাজায় অবিলম্বে, টেকসই এবং অবাধ মানবিক ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের আহ্বান জানানো হয়েছে। এসবের মধ্যে মেডিকেল কর্মীরাও যেন সেখানে প্রবেশ করতে পারে তার আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংস্থাটির ৭৫ বছরের ইতিহাসে সপ্তমবারের মতো নির্বাহী বোর্ড এ ধরণের বৈঠক করল।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় ৮০ শতাংশ জনসংখ্যা বাস্তুচ্যুত এবং তারা খাবার, পানি এবং ওষুধের সংকটে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কাদরা টেলিফোনে আল জাজিরাকে বলেছেন, গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৫৫০ জনের বেশি।

Image not found

অধিকৃত পশ্চিম জেরুজালেমে বাব আস-সিসিলিয়ায় ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বাব আস-সিসিলিয়া আল-আকসা মসজিদের একটি প্রধান প্রবেশপথ। খবর আল জাজিরার।

গতকাল রোববার ইসরায়েলি বাহিনী আল-আকসা ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে, মসল্লিদের মসজিদ প্রবেশে বাঁধা দিয়েছে। ৫০ বছরের নিচে কোনো ফিলিস্তিনিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ইহুদি নববর্ষ রোশ হাশানাতে ইসরায়েলি বসতিদের পথ সেখানে সুগম করে দিতে এ পদক্ষেপ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নববর্ষ উদযাপনে শত শত ইসরায়েলি সেনাদের সুরক্ষায় মরক্কো গেট দিয়ে আল-আকসা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। সেইসময় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হয়রানি ও অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে ভোরের নামাজের পরে অনেক মুসল্লি সেখানে জড়ো হয়েছিল।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ডব্লিউএএফএ বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী তিনজন ফিলিস্তিনি মুসল্লিতেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং পিটিয়েছে। যার মধ্যে একজন বয়স্ক নারী ও পুরুষ আছে। এ ছাড়া আল-আকসা প্রাঙ্গণে তিনজনকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের অজ্ঞাত জায়গায় পাঠানো হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

গাজায় মানবিক সহায়তায় ডব্লিউএইচও’র বিরল পদক্ষেপ

প্রকাশিত সময় : ১১:১৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

দুই মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর অবিরাম হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে ৫০ হাজারের বেশি। গাজায় আর কোনো নিরাপদ জায়গা নেই বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ

গতকাল জাতিসংঘের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘গাজায় এখনো যুদ্ধ চলছে, এবং সেখানকার অর্ধেক জনগোষ্ঠীই প্রচণ্ড খাদ্যাভাবে আছে।’ জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর কার্ল স্কাউ বলেন, ‘এখানে প্রতিদিন মোট যে পরিমাণ খাদ্য সাহায্য দরকার তার খুব সামান্য পরিমাণই কেবল এখানে প্রবেশ করতে পারছে। গাজায় প্রতি ১০ জনের নয়জনই দৈনিক ঠিকমতো খাবার পাচ্ছেন না।’

এবার সেই গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বিরল পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল রবিবার এক বৈঠকে এ বিষয়ক প্রস্তাব পাস করে ডব্লিউএইচও’র ৩৪ সদস্যের নির্বাহী বোর্ড। ওই প্রস্তাবে গাজায় অবিলম্বে, টেকসই এবং অবাধ মানবিক ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের আহ্বান জানানো হয়েছে। এসবের মধ্যে মেডিকেল কর্মীরাও যেন সেখানে প্রবেশ করতে পারে তার আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংস্থাটির ৭৫ বছরের ইতিহাসে সপ্তমবারের মতো নির্বাহী বোর্ড এ ধরণের বৈঠক করল।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় ৮০ শতাংশ জনসংখ্যা বাস্তুচ্যুত এবং তারা খাবার, পানি এবং ওষুধের সংকটে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কাদরা টেলিফোনে আল জাজিরাকে বলেছেন, গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৫৫০ জনের বেশি।

Image not found

অধিকৃত পশ্চিম জেরুজালেমে বাব আস-সিসিলিয়ায় ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বাব আস-সিসিলিয়া আল-আকসা মসজিদের একটি প্রধান প্রবেশপথ। খবর আল জাজিরার।

গতকাল রোববার ইসরায়েলি বাহিনী আল-আকসা ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে, মসল্লিদের মসজিদ প্রবেশে বাঁধা দিয়েছে। ৫০ বছরের নিচে কোনো ফিলিস্তিনিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ইহুদি নববর্ষ রোশ হাশানাতে ইসরায়েলি বসতিদের পথ সেখানে সুগম করে দিতে এ পদক্ষেপ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নববর্ষ উদযাপনে শত শত ইসরায়েলি সেনাদের সুরক্ষায় মরক্কো গেট দিয়ে আল-আকসা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। সেইসময় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হয়রানি ও অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে ভোরের নামাজের পরে অনেক মুসল্লি সেখানে জড়ো হয়েছিল।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ডব্লিউএএফএ বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী তিনজন ফিলিস্তিনি মুসল্লিতেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং পিটিয়েছে। যার মধ্যে একজন বয়স্ক নারী ও পুরুষ আছে। এ ছাড়া আল-আকসা প্রাঙ্গণে তিনজনকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের অজ্ঞাত জায়গায় পাঠানো হয়েছে।