বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিছিলে ‘ডিসি-এসপির চামড়া তুলে নেওয়ার’ স্লোগান কাদের মির্জার

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা তার অনুসারীদের নিয়ে মিছিল করেছেন। মিছিল থেকে ডিসি,এএসপি, ইউএনও ও ওসির চামড়া তুলে নেওয়ার স্লোগান দেন তিনি।

রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মেয়র কাদের মির্জার নেতৃত্বে মিছিলটি বসুরহাট বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সভায় মিলিত হয়।

মিছিলটি বসুরহাট বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণের সময় কাদের মির্জাকে লাঠি হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

মিছিল পরবর্তী সভায় কোম্পানীগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শামিম কবির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউল হক মীর, সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) সুপ্রভাত চাকমা ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনির প্রত্যাহার দাবি করেন তিনি।

বড় ভাই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় পৌরসভা চত্বরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।

কাদের মির্জা বলেন, এখানে প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। ডিসি-এসপির নির্দেশে টাকার জন্য প্রশাসন তাদেরকে সমর্থন দিচ্ছে। ওরা এমপি একরামের রাজত্ব এখানে কায়েম করতে চায়।

এ সময় তিনি মাইকে অনুসারীদের নিয়ে স্লোগান দেন- ‘ওসি রইন্যার (ওসি মীর জাহেদুল হক রনি) চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘শামিমের (এএসপি শামিম কবির) চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘ইউএনওর চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘ডিসির চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘এসপির চামড়া তুলে নেব আমরা’।

কাদের মির্জা তার প্রতিপক্ষের কয়েকজন নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ করে অনুসারীদের নিজ নিজ এলাকায় সংগঠিত হয়ে মিছিল সমাবেশ করার নির্দেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথা এখন বললাম না। আমার সঙ্গে যে সব ওয়াদা করেছেন, সেগুলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূরণ করেন। না হলে আপনার বিরুদ্ধেও চলবে, আপনার বউয়ের বিরুদ্ধেও চলবে। ছাড়ি (ছেড়ে) দেব না।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের সঙ্গে আমার কিছু দূরত্ব ছিল তাও কেটে গেছে। প্রশাসন আমাকে ও আমার ভাই ওবায়দুল কাদের সাহেবকে সরিয়ে কোম্পানীগঞ্জে একরামের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। প্রশাসন একতরফা তাণ্ডব চালাচ্ছে। আমরা রক্ত দিয়ে হলেও প্রতিরোধ করবো।’

এ সময় তিনি বলেন,  গতকাল (শনিবার) বসুরহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে প্রশাসনের সামনে বহিরাগত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দ্বারা আমার নেতাকর্মীদের ওপর গুলি বর্ষণ করা হয়। এতে আমার ১৫ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। আমার দুজন নেতাকর্মী ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অনতিবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি (আমার) আমেরিকায় ৯ তারিখে যাওয়ার কথা ছিল। আমি মরে গেলে, এ দেশে চিকিৎসা করে মরে যাব। দরকার হলে আমেরিকা যাব না, তাও এর শেষ দেখে ছাড়বো।’

এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বসুরহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে কাদের মির্জার অনুসারীরা পৌরসভা অভিমুখে মিছিল নিয়ে আসার প্রস্তুতির সময় প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের লোকজন গুলিবর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কাদের মির্জার ছয় অনুসারী গুলিবিদ্ধ হন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মিছিলে ‘ডিসি-এসপির চামড়া তুলে নেওয়ার’ স্লোগান কাদের মির্জার

প্রকাশিত সময় : ০৩:১৪:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ মে ২০২১

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা তার অনুসারীদের নিয়ে মিছিল করেছেন। মিছিল থেকে ডিসি,এএসপি, ইউএনও ও ওসির চামড়া তুলে নেওয়ার স্লোগান দেন তিনি।

রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মেয়র কাদের মির্জার নেতৃত্বে মিছিলটি বসুরহাট বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সভায় মিলিত হয়।

মিছিলটি বসুরহাট বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণের সময় কাদের মির্জাকে লাঠি হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

মিছিল পরবর্তী সভায় কোম্পানীগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শামিম কবির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউল হক মীর, সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) সুপ্রভাত চাকমা ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনির প্রত্যাহার দাবি করেন তিনি।

বড় ভাই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় পৌরসভা চত্বরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।

কাদের মির্জা বলেন, এখানে প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। ডিসি-এসপির নির্দেশে টাকার জন্য প্রশাসন তাদেরকে সমর্থন দিচ্ছে। ওরা এমপি একরামের রাজত্ব এখানে কায়েম করতে চায়।

এ সময় তিনি মাইকে অনুসারীদের নিয়ে স্লোগান দেন- ‘ওসি রইন্যার (ওসি মীর জাহেদুল হক রনি) চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘শামিমের (এএসপি শামিম কবির) চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘ইউএনওর চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘ডিসির চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘এসপির চামড়া তুলে নেব আমরা’।

কাদের মির্জা তার প্রতিপক্ষের কয়েকজন নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ করে অনুসারীদের নিজ নিজ এলাকায় সংগঠিত হয়ে মিছিল সমাবেশ করার নির্দেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথা এখন বললাম না। আমার সঙ্গে যে সব ওয়াদা করেছেন, সেগুলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূরণ করেন। না হলে আপনার বিরুদ্ধেও চলবে, আপনার বউয়ের বিরুদ্ধেও চলবে। ছাড়ি (ছেড়ে) দেব না।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের সঙ্গে আমার কিছু দূরত্ব ছিল তাও কেটে গেছে। প্রশাসন আমাকে ও আমার ভাই ওবায়দুল কাদের সাহেবকে সরিয়ে কোম্পানীগঞ্জে একরামের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। প্রশাসন একতরফা তাণ্ডব চালাচ্ছে। আমরা রক্ত দিয়ে হলেও প্রতিরোধ করবো।’

এ সময় তিনি বলেন,  গতকাল (শনিবার) বসুরহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে প্রশাসনের সামনে বহিরাগত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দ্বারা আমার নেতাকর্মীদের ওপর গুলি বর্ষণ করা হয়। এতে আমার ১৫ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। আমার দুজন নেতাকর্মী ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অনতিবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি (আমার) আমেরিকায় ৯ তারিখে যাওয়ার কথা ছিল। আমি মরে গেলে, এ দেশে চিকিৎসা করে মরে যাব। দরকার হলে আমেরিকা যাব না, তাও এর শেষ দেখে ছাড়বো।’

এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বসুরহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে কাদের মির্জার অনুসারীরা পৌরসভা অভিমুখে মিছিল নিয়ে আসার প্রস্তুতির সময় প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের লোকজন গুলিবর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কাদের মির্জার ছয় অনুসারী গুলিবিদ্ধ হন।