শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় নিহতদের মধ্যে নিরীহ ফিলিস্তিনির সংখ্যা ‘অনেক বেশি’ : বাইডেন

হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে টানা চার মাসের বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই হামলায় ভূখণ্ডটিতে ইতোমধ্যেই ২৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নিরীহ বেসামরিক নাগরিকের সংখ্যা ‘অনেক বেশি’ বলে এবার স্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার হোয়াইট হাউসে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, ‘সংঘাতে নিহত ২৭ হাজার ফিলিস্তিনির মধ্যে অনেক নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন, যাদের মধ্যে হাজার হাজার শিশুও রয়েছে। গাজায় লাখ লাখ মানুষ খাদ্য, পানীয় বা অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করতে পারছে না এবং অনেক পরিবার কেবল একজনকে নয়, অনেক আত্মীয়কে হারিয়েছে। এটি হৃদয়বিদারক।’

তিনি বলেন, ‘গাজায় হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি নিরপরাধ জীবন এক একটি ট্র্যাজেডি। ইসরায়েলে হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি নিরপরাধ জীবনও এক একটি ট্র্যাজেডি। ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের যারা নিহত হয়েছেন, আমরা তাদের উভয়ের জন্য এবং শোকার্ত পরিবারের সবার জন্য আমরা প্রার্থনা করি।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তির বিষয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ চুক্তি ‘অন্তত ছয় সপ্তাহ সময়ের জন্য গাজায় টেকসই ও সবার জন্য ভালো সময় নিয়ে আসবে। পরে এটি হয়তো আমরা আরও কিছু সময় স্থায়ী করতে পারি।

পূর্ববর্তী মার্কিন আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বাইডেন বলেন, ‘রাফাহতে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখেরও বেশি মানুষের নিরাপত্তা ও সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা ছাড়া সেখানে বড় সামরিক অভিযান চালানো উচিত নয়।’

সহিংসতা থেকে বাঁচতে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে রাফাহতে অনেক বাস্তুচ্যুত লোক রয়েছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘তাদের রক্ষা করা দরকার।’ তিনি বলেন, ‘আমরাও শুরু থেকেই (নিজেদের অবস্থানে) স্পষ্ট ছিলাম। আমরা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের যে কোনো জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির বিরোধিতা করি।’

সংবাদ সম্মেলনে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ রাফাহ আক্রমণে ইসরায়েলের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি নিশ্চিতভাবে আরেকটি মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাফাহতে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখেরও বেশি মানুষের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই অসহনীয়। এমন পরিস্থিতি চলতি দেওয়া যায় না। গাজায় এখন স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দরকার। এই যুদ্ধের অবসান হওয়া উচিত।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

গাজায় নিহতদের মধ্যে নিরীহ ফিলিস্তিনির সংখ্যা ‘অনেক বেশি’ : বাইডেন

প্রকাশিত সময় : ১১:০১:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে টানা চার মাসের বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই হামলায় ভূখণ্ডটিতে ইতোমধ্যেই ২৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নিরীহ বেসামরিক নাগরিকের সংখ্যা ‘অনেক বেশি’ বলে এবার স্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার হোয়াইট হাউসে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, ‘সংঘাতে নিহত ২৭ হাজার ফিলিস্তিনির মধ্যে অনেক নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন, যাদের মধ্যে হাজার হাজার শিশুও রয়েছে। গাজায় লাখ লাখ মানুষ খাদ্য, পানীয় বা অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করতে পারছে না এবং অনেক পরিবার কেবল একজনকে নয়, অনেক আত্মীয়কে হারিয়েছে। এটি হৃদয়বিদারক।’

তিনি বলেন, ‘গাজায় হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি নিরপরাধ জীবন এক একটি ট্র্যাজেডি। ইসরায়েলে হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি নিরপরাধ জীবনও এক একটি ট্র্যাজেডি। ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের যারা নিহত হয়েছেন, আমরা তাদের উভয়ের জন্য এবং শোকার্ত পরিবারের সবার জন্য আমরা প্রার্থনা করি।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তির বিষয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ চুক্তি ‘অন্তত ছয় সপ্তাহ সময়ের জন্য গাজায় টেকসই ও সবার জন্য ভালো সময় নিয়ে আসবে। পরে এটি হয়তো আমরা আরও কিছু সময় স্থায়ী করতে পারি।

পূর্ববর্তী মার্কিন আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বাইডেন বলেন, ‘রাফাহতে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখেরও বেশি মানুষের নিরাপত্তা ও সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা ছাড়া সেখানে বড় সামরিক অভিযান চালানো উচিত নয়।’

সহিংসতা থেকে বাঁচতে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে রাফাহতে অনেক বাস্তুচ্যুত লোক রয়েছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘তাদের রক্ষা করা দরকার।’ তিনি বলেন, ‘আমরাও শুরু থেকেই (নিজেদের অবস্থানে) স্পষ্ট ছিলাম। আমরা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের যে কোনো জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির বিরোধিতা করি।’

সংবাদ সম্মেলনে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ রাফাহ আক্রমণে ইসরায়েলের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি নিশ্চিতভাবে আরেকটি মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাফাহতে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখেরও বেশি মানুষের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই অসহনীয়। এমন পরিস্থিতি চলতি দেওয়া যায় না। গাজায় এখন স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দরকার। এই যুদ্ধের অবসান হওয়া উচিত।’