বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী মোদি, চীনকে যে বার্তা দিলো ভারত

বিশ্বের যে কটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ রয়েছে তার মধ্যে ভারত ও চীন অন্যতম। দেশ দুটির পরস্পরের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে এবং সীমান্ত বিরোধও রয়েছে।

ভারত ও চীনের মধ্যে মোট ২,১০০ মাইল সীমান্ত রয়েছে, যা বহু জায়গাতেই সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত নয়। কিছুদিন পরপরই সীমান্ত নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দুই দেশের রাজনীতি। বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিবেশী এই দুটি দেশ বন্ধুর বদলে ঘোর শত্রুতে পরিণত হয়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত কয়েক বছর ধরে সীমান্ত বিরোধের জেরে ভারত ও চিনের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বেশ কয়েকবার দেশ দুুটির মধ্যে আলোচনা হলেও এই ইস্যুতে কোনো সমাধানা হয়নি।

এদিকে গত দুই দশক ধরে ভারতের ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনেও সবচেয়ে বেশি আসন জিতেছে। এর ফলে টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। এমন প্রেক্ষাপটে ভারত-চিন সম্পর্কের ভবিষ্যত কোন দিকে গড়াবে, তা নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণও চলছে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, আজ রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বার শপথ নিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে ৫৪৩ আসনের মধ্যে নরেদ্র মোদির বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ২৯৩টি আসনে জয় পাওয়ায় গত ৫ জুন চীনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এর জবাবে শনিবার (৭ জুন) ভারতের পক্ষ থেকেও দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে বড় বার্তা দেওয়া হয়েছে চীনকে। বেইজিংকে দেওয়া বার্তায় দিল্লি বলেছে, ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক স্বার্থ এবং পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চালাবে ভারত সরকার’।

চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ৫ জুন সামাজিক যোগাযাগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট করে নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। যদিও চিনের শীর্ষ নেতাদের কেউই এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে মোদিকে শুভেচ্ছা জানাননি। তবে মোদির উদ্দেশে চিনা প্রশাসনের শুভেচ্ছা বার্তার জবাব দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জয়সওয়াল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ট্যাগ করে রন্ধীর জয়সওয়াল লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী জয়তে শুভেচ্ছা জানানোয় চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক স্বার্থ এবং পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে ভারত সরকার।’

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে লাদাখের গালওয়ানে সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীন সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। এতে ভারতের ২০ ও চীনের চার সেনা নিহত হয়। এরপরও আরও দুইবার লাদাখে চীন ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এই সময়কালে লাদাখে প্রায় ২০ দফায় সীমান্ত বিবাদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে ভারত ও চিনের সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে। তবে কোনো সমাধানসূত্র এখনও বেরিয়ে আসেনি। বরং সীমান্তে উত্তেজনা এতটাই বেড়েছে যে, ১৯৯৩, ১৯৯৬ ও ২০০৫ সালে চীন ও ভারত চুক্তির মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে যে স্থিতিশীলতা এনেছিল, তা ভেঙে দিয়েছে। এছাড়া কিছুদিন আগেই অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত ইস্যুতেও দেশ দুটি বিবাদে জড়িয়েছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী মোদি, চীনকে যে বার্তা দিলো ভারত

প্রকাশিত সময় : ০৩:২১:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪

বিশ্বের যে কটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ রয়েছে তার মধ্যে ভারত ও চীন অন্যতম। দেশ দুটির পরস্পরের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে এবং সীমান্ত বিরোধও রয়েছে।

ভারত ও চীনের মধ্যে মোট ২,১০০ মাইল সীমান্ত রয়েছে, যা বহু জায়গাতেই সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত নয়। কিছুদিন পরপরই সীমান্ত নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দুই দেশের রাজনীতি। বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিবেশী এই দুটি দেশ বন্ধুর বদলে ঘোর শত্রুতে পরিণত হয়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত কয়েক বছর ধরে সীমান্ত বিরোধের জেরে ভারত ও চিনের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বেশ কয়েকবার দেশ দুুটির মধ্যে আলোচনা হলেও এই ইস্যুতে কোনো সমাধানা হয়নি।

এদিকে গত দুই দশক ধরে ভারতের ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনেও সবচেয়ে বেশি আসন জিতেছে। এর ফলে টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। এমন প্রেক্ষাপটে ভারত-চিন সম্পর্কের ভবিষ্যত কোন দিকে গড়াবে, তা নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণও চলছে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, আজ রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বার শপথ নিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে ৫৪৩ আসনের মধ্যে নরেদ্র মোদির বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ২৯৩টি আসনে জয় পাওয়ায় গত ৫ জুন চীনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এর জবাবে শনিবার (৭ জুন) ভারতের পক্ষ থেকেও দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে বড় বার্তা দেওয়া হয়েছে চীনকে। বেইজিংকে দেওয়া বার্তায় দিল্লি বলেছে, ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক স্বার্থ এবং পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চালাবে ভারত সরকার’।

চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ৫ জুন সামাজিক যোগাযাগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট করে নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। যদিও চিনের শীর্ষ নেতাদের কেউই এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে মোদিকে শুভেচ্ছা জানাননি। তবে মোদির উদ্দেশে চিনা প্রশাসনের শুভেচ্ছা বার্তার জবাব দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জয়সওয়াল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ট্যাগ করে রন্ধীর জয়সওয়াল লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী জয়তে শুভেচ্ছা জানানোয় চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক স্বার্থ এবং পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে ভারত সরকার।’

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে লাদাখের গালওয়ানে সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীন সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। এতে ভারতের ২০ ও চীনের চার সেনা নিহত হয়। এরপরও আরও দুইবার লাদাখে চীন ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এই সময়কালে লাদাখে প্রায় ২০ দফায় সীমান্ত বিবাদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে ভারত ও চিনের সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে। তবে কোনো সমাধানসূত্র এখনও বেরিয়ে আসেনি। বরং সীমান্তে উত্তেজনা এতটাই বেড়েছে যে, ১৯৯৩, ১৯৯৬ ও ২০০৫ সালে চীন ও ভারত চুক্তির মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে যে স্থিতিশীলতা এনেছিল, তা ভেঙে দিয়েছে। এছাড়া কিছুদিন আগেই অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত ইস্যুতেও দেশ দুটি বিবাদে জড়িয়েছিল।