শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হত্যার পর আ.লীগ নেতাকে মেসেজ— ‘আনার শেষ, মনোনয়ন কনফার্ম’

শুধু চোরাকারবারি নয় ঝিনাইদহ-৪  আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার পেছনে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল বলেও ধারণা করছে তদন্তকারীরা। এ সম্পর্কিত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহম্মেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে গ্রেপ্তারের পর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে আটক করেছে পুলিশ।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরপরই ঝিনাইদহের কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার মোবাইলে খুনিরা খুদেবার্তা পাঠায়, ‘মিশন সফল’ এটা জানানোর জন্য। আনার হত্যারকাণ্ডের পর সঞ্জীবা গার্ডেন থেকে শিমুল ভূঁইয়া শাহীনের মোবাইলে যেসব ছবি পাঠিয়েছিল সেগুলো শাহীনই প্রথম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টুর মোবাইলে পাঠিয়ে বলে ‘আনার শেষ, মনোনয়ন কনফার্ম’। আর বাবুর সঙ্গে যেদিন ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে শিমুল ভূঁইয়ার দেখা হয় সেদিন শিমুল আনার হত্যার ছবিগুলো বাবুর কাছে পাঠায়। কারণ শাহীন আগে থেকেই শিমুলকে বলেছিল এসব ছবি দেখিয়ে যেন বাবুর কাছ থেকে ২ কোটি টাকা নেয়।

ডিবি বলছে, পলাতক শাহীনের সঙ্গে সবারই যোগাযোগ ছিল। শাহীন খুব ঠাণ্ডা মাথায় সবপক্ষকেই ব্যবহার করেছে। এ ঘটনায় সে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আনার হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীরা এক হলেও তাদের একটি অংশের সঙ্গে মিশন বাস্তবায়নকারীদের যোগাযোগ ছিল না। বিশেষকরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে মিশন বাস্তবায়নকারীদের বিস্তর দূরত্ব ছিল।

শুধুমাত্র কিলার শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে ১৬ই মে বাবুর মোবাইলে কথাবার্তা ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ চালাচালি এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে সাক্ষাৎ হয়। যার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। আসামিরা তার ফোনে আনারের মরদেহের ছবি পাঠায়।

সূত্র আরও জানিয়েছে, কেন খুনিরা কাজী কামাল, মিন্টুসহ অন্যদের এ ধরনের বার্তা পাঠাল, সে বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। হত্যা মিশনে তারা জড়িত ছিল, নাকি ফাঁসানোর জন্য অভিনব কৌশল হিসেবে তাদের খুদেবার্তা দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ে বিরোধের জেরে আজীমকে হত্যা করে ‘এক ঢিলে দুই পাখি মারা’ হলো কি না, তা নিশ্চিত হতে নজর রাখছে গোয়েন্দারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

হত্যার পর আ.লীগ নেতাকে মেসেজ— ‘আনার শেষ, মনোনয়ন কনফার্ম’

প্রকাশিত সময় : ১০:২২:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪

শুধু চোরাকারবারি নয় ঝিনাইদহ-৪  আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার পেছনে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল বলেও ধারণা করছে তদন্তকারীরা। এ সম্পর্কিত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহম্মেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে গ্রেপ্তারের পর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে আটক করেছে পুলিশ।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরপরই ঝিনাইদহের কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার মোবাইলে খুনিরা খুদেবার্তা পাঠায়, ‘মিশন সফল’ এটা জানানোর জন্য। আনার হত্যারকাণ্ডের পর সঞ্জীবা গার্ডেন থেকে শিমুল ভূঁইয়া শাহীনের মোবাইলে যেসব ছবি পাঠিয়েছিল সেগুলো শাহীনই প্রথম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টুর মোবাইলে পাঠিয়ে বলে ‘আনার শেষ, মনোনয়ন কনফার্ম’। আর বাবুর সঙ্গে যেদিন ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে শিমুল ভূঁইয়ার দেখা হয় সেদিন শিমুল আনার হত্যার ছবিগুলো বাবুর কাছে পাঠায়। কারণ শাহীন আগে থেকেই শিমুলকে বলেছিল এসব ছবি দেখিয়ে যেন বাবুর কাছ থেকে ২ কোটি টাকা নেয়।

ডিবি বলছে, পলাতক শাহীনের সঙ্গে সবারই যোগাযোগ ছিল। শাহীন খুব ঠাণ্ডা মাথায় সবপক্ষকেই ব্যবহার করেছে। এ ঘটনায় সে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আনার হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীরা এক হলেও তাদের একটি অংশের সঙ্গে মিশন বাস্তবায়নকারীদের যোগাযোগ ছিল না। বিশেষকরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে মিশন বাস্তবায়নকারীদের বিস্তর দূরত্ব ছিল।

শুধুমাত্র কিলার শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে ১৬ই মে বাবুর মোবাইলে কথাবার্তা ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ চালাচালি এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে সাক্ষাৎ হয়। যার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। আসামিরা তার ফোনে আনারের মরদেহের ছবি পাঠায়।

সূত্র আরও জানিয়েছে, কেন খুনিরা কাজী কামাল, মিন্টুসহ অন্যদের এ ধরনের বার্তা পাঠাল, সে বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। হত্যা মিশনে তারা জড়িত ছিল, নাকি ফাঁসানোর জন্য অভিনব কৌশল হিসেবে তাদের খুদেবার্তা দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ে বিরোধের জেরে আজীমকে হত্যা করে ‘এক ঢিলে দুই পাখি মারা’ হলো কি না, তা নিশ্চিত হতে নজর রাখছে গোয়েন্দারা।