বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যত্ন নিতে হবে চোখের

মানুষ তার সারা জীবনের অর্জিত জ্ঞানের ৮৫% লাভ করে দর্শনেন্দ্রিয় অর্থাৎ চোখ দিয়ে। চোখ তাই অমূল্য ধন। একজন শিক্ষার্থীকে শুধু পড়লেই হবে না বরং জ্ঞান অর্জনের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবেও সুস্থ থাকতে হবে। এ কারণেই শরীর, মস্তিষ্ক ও চোখের যত্ন নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে এবং মেনে চলতে হবে।

করণীয়

বই পড়ার জন্য আলোপূর্ণ খোলামেলা পরিবেশ বেছে নিতে হবে। প্রয়োজনীয় আলো-বাতাস যেন আসতে পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

# বেশি বেশি শাকসবজি খেতে হবে। এতে চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার চোখের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবেই চোখের রেটিনায় সমস্যা দেখা দেয়। গাজর, মিষ্টি কুমড়া, লাল ও সবুজ শাকসবজি ভিটামিন ‘এ’ থাকে। চোখের যতেœ এসব খাবার খেতে হবে।

পড়ার সময় একটানা বইয়ের দিকে না তাকিয়ে থেকে মাঝে মাঝে চোখের পাতা ফেলা বা পিটপিট করা ভালো। চোখ শুকিয়ে আসছে বা ঝাপসা দেখছ মনে হলে পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে নাও। এই সমস্যা দীর্ঘদিনের হলে ডাক্তারের পরামর্শ নাও।

চোখের যতেœ পানি পান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিনে কমপক্ষে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে।

ঘুমের ভেতর শরীর চোখসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষয়পূরণের কাজ করে থাকে। তাই পরিপূর্ণ ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চোখের পরিপূর্ণ বিশ্রামের জন্য একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন আট থেকে দশ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

বিস্তৃত খোলা মাঠ, সবুজ, দিগন্ত ইত্যাদি চোখের জন্য ভীষণ উপকারী। তাই সময় পেলেই সবুজের সান্নিধ্যে যাও, সবুজের মাঝে সময় কাটাও।

সুস্থতার জন্য ব্যায়াম অপরিহার্য। চোখের জন্য রয়েছে ব্যায়াম। দিনের যে কোনো সময় চোখের মণি দশ সেকেন্ড ক্লকওয়াইজ এবং দশ সেকেন্ড অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ ঘোরাও। এরপর চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নাও। দিনে চার থেকে পাঁচবার ব্যায়ামটি করতে পারো। কোনো অসুবিধা অনুভূত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নাও।

বর্জনীয়

আমরা যদি সত্যিই চোখের সুস্থতা চাই তাহলে অবশ্যই চোখের জন্য ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে। অল্প আলোতে পড়াশোনা করা, সারাক্ষণ কমম্পিটার, মোবাইল, টেলিভিশনের সামনে বসে থাকা, অহেতুক রাত জাগা, শাকসবজি ফলমূল না খাওয়া ইত্যাদি চোখের জন্য ক্ষতিকর কিছু অভ্যাস। আমরা যখন কম আলো কিংবা অল্প আলোতে পড়ি, তখন রেটিনার রডকোষগুলো আমাদের দেখতে সাহায্য করে। আবার চোখের অ্যাকোমোডেশন ক্ষমতাও ব্যবহৃত হয়। এতে চোখে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এর ফলে দেখা দেয় নানা সমস্যা। চোখ ব্যথা করে, সবকিছু ঝাপসা লাগে। বেশিক্ষণ মোবাইল, কমম্পিটার, টেলিভিশনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়। এটিও নানারূপ সমস্যার সৃষ্টি করে। শাকসবজি বিশেষ করে ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত খাদ্য চোখের জন্য খুবই  প্রয়োজনীয়। চোখের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় শরীর ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত খাবার থেকেই। কিন্তু শাকসবজি কম খেলে চোখের ক্ষয়পূরণ করতে পারে না বলে চোখের স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

যত্ন নিতে হবে চোখের

প্রকাশিত সময় : ১১:৩৭:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪

মানুষ তার সারা জীবনের অর্জিত জ্ঞানের ৮৫% লাভ করে দর্শনেন্দ্রিয় অর্থাৎ চোখ দিয়ে। চোখ তাই অমূল্য ধন। একজন শিক্ষার্থীকে শুধু পড়লেই হবে না বরং জ্ঞান অর্জনের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবেও সুস্থ থাকতে হবে। এ কারণেই শরীর, মস্তিষ্ক ও চোখের যত্ন নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে এবং মেনে চলতে হবে।

করণীয়

বই পড়ার জন্য আলোপূর্ণ খোলামেলা পরিবেশ বেছে নিতে হবে। প্রয়োজনীয় আলো-বাতাস যেন আসতে পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

# বেশি বেশি শাকসবজি খেতে হবে। এতে চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার চোখের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবেই চোখের রেটিনায় সমস্যা দেখা দেয়। গাজর, মিষ্টি কুমড়া, লাল ও সবুজ শাকসবজি ভিটামিন ‘এ’ থাকে। চোখের যতেœ এসব খাবার খেতে হবে।

পড়ার সময় একটানা বইয়ের দিকে না তাকিয়ে থেকে মাঝে মাঝে চোখের পাতা ফেলা বা পিটপিট করা ভালো। চোখ শুকিয়ে আসছে বা ঝাপসা দেখছ মনে হলে পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে নাও। এই সমস্যা দীর্ঘদিনের হলে ডাক্তারের পরামর্শ নাও।

চোখের যতেœ পানি পান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিনে কমপক্ষে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে।

ঘুমের ভেতর শরীর চোখসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষয়পূরণের কাজ করে থাকে। তাই পরিপূর্ণ ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চোখের পরিপূর্ণ বিশ্রামের জন্য একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন আট থেকে দশ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

বিস্তৃত খোলা মাঠ, সবুজ, দিগন্ত ইত্যাদি চোখের জন্য ভীষণ উপকারী। তাই সময় পেলেই সবুজের সান্নিধ্যে যাও, সবুজের মাঝে সময় কাটাও।

সুস্থতার জন্য ব্যায়াম অপরিহার্য। চোখের জন্য রয়েছে ব্যায়াম। দিনের যে কোনো সময় চোখের মণি দশ সেকেন্ড ক্লকওয়াইজ এবং দশ সেকেন্ড অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ ঘোরাও। এরপর চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নাও। দিনে চার থেকে পাঁচবার ব্যায়ামটি করতে পারো। কোনো অসুবিধা অনুভূত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নাও।

বর্জনীয়

আমরা যদি সত্যিই চোখের সুস্থতা চাই তাহলে অবশ্যই চোখের জন্য ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে। অল্প আলোতে পড়াশোনা করা, সারাক্ষণ কমম্পিটার, মোবাইল, টেলিভিশনের সামনে বসে থাকা, অহেতুক রাত জাগা, শাকসবজি ফলমূল না খাওয়া ইত্যাদি চোখের জন্য ক্ষতিকর কিছু অভ্যাস। আমরা যখন কম আলো কিংবা অল্প আলোতে পড়ি, তখন রেটিনার রডকোষগুলো আমাদের দেখতে সাহায্য করে। আবার চোখের অ্যাকোমোডেশন ক্ষমতাও ব্যবহৃত হয়। এতে চোখে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এর ফলে দেখা দেয় নানা সমস্যা। চোখ ব্যথা করে, সবকিছু ঝাপসা লাগে। বেশিক্ষণ মোবাইল, কমম্পিটার, টেলিভিশনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়। এটিও নানারূপ সমস্যার সৃষ্টি করে। শাকসবজি বিশেষ করে ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত খাদ্য চোখের জন্য খুবই  প্রয়োজনীয়। চোখের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় শরীর ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত খাবার থেকেই। কিন্তু শাকসবজি কম খেলে চোখের ক্ষয়পূরণ করতে পারে না বলে চোখের স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যায়।