বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলে সরাসরি হামলার নির্দেশ খামেনির: রিপোর্ট

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, তিনজন অজ্ঞাতনামা ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানে নিজ বাসভবনে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করা হয়। ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মঙ্গলবার কাতার থেকে তেহরানে গিয়েছিলেন হানিয়া। ইসরায়েল গুপ্তহত্যা চালিয়ে হানিয়াকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে ইরান ও হামাস। তবে এ নিয়ে তেল আবিবের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অবশ্য ইসরায়েল এর আগে, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার ঘটনায় গাজা যুদ্ধ শুরুর সময় ইসমাইল হানিয়া এবং অন্যান্য হামাস নেতাদের হত্যা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানে হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় বুধবার সকালে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল জরুরি বৈঠকে বসে। ইরানি কর্মকর্তাদের মতে, বৈঠকে ইসরায়েলে হামলা চালানোর নিদের্শ দেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।

ইরানে এই ধরনের বৈঠক কেবল বিশেষ পরিস্থিতিতে ডাকা হয়। এর আগে গত এপ্রিলে সিরিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের দুই শীর্ষ সামরিক কমান্ডার নিহত হওয়ার পর একই ধরনের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ইরানি কর্মকর্তারা জানান, ইরান কত জোরালো হামলা চালাবে তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। ইরানের সামরিক কমান্ডাররা তেল আবিব এবং হাইফার আশপাশে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বয়ে হামলার কথা বিবেচনা করছেন। তবে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা এড়ানোর জোর চেষ্টা করা হবে। ইরান এবং এর অন্যান্য ফ্রন্ট থেকে সমন্বিত আক্রমণের কথা বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইরাক থেকেও হামলা চালানো হতে পারে। এদিকে ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, তেল আবিব কূটনৈতিক ব্যাকচ্যানেলের মাধ্যমে ইরানকে বার্তা পাঠিয়েছে যে, ইরান এবং তার প্রক্সিরা যদি দেশটির বিরুদ্ধে কোনও আক্রমণ চালায় তাহলে ইসরায়েল পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধে চলে যাবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইসরায়েল যেকোনো ফ্রন্ট থেকে হামলার ঘটনায় খুব ভারী মূল্য নির্ধারণ করবে।’ তেহরানে হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘হামাস নেতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া তেহরানের কর্তব্য। আমাদের প্রিয় অতিথিকে হত্যা করে ইসরায়েল নিজের জন্য কঠোর শাস্তি প্রস্তুত করেছে।’ তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার ঘটনাটি ইরানি কর্মকর্তাদের হতবাক করেছে, তারা এটিকে রেড লাইন ক্রসিং বলে অভিহিত করেছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় প্রেস টিভি জানিয়েছে, আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার জানাজায় ইমামতি করবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

ইসরায়েলে সরাসরি হামলার নির্দেশ খামেনির: রিপোর্ট

প্রকাশিত সময় : ১১:১৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, তিনজন অজ্ঞাতনামা ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানে নিজ বাসভবনে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করা হয়। ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মঙ্গলবার কাতার থেকে তেহরানে গিয়েছিলেন হানিয়া। ইসরায়েল গুপ্তহত্যা চালিয়ে হানিয়াকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে ইরান ও হামাস। তবে এ নিয়ে তেল আবিবের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অবশ্য ইসরায়েল এর আগে, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার ঘটনায় গাজা যুদ্ধ শুরুর সময় ইসমাইল হানিয়া এবং অন্যান্য হামাস নেতাদের হত্যা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানে হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় বুধবার সকালে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল জরুরি বৈঠকে বসে। ইরানি কর্মকর্তাদের মতে, বৈঠকে ইসরায়েলে হামলা চালানোর নিদের্শ দেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।

ইরানে এই ধরনের বৈঠক কেবল বিশেষ পরিস্থিতিতে ডাকা হয়। এর আগে গত এপ্রিলে সিরিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের দুই শীর্ষ সামরিক কমান্ডার নিহত হওয়ার পর একই ধরনের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ইরানি কর্মকর্তারা জানান, ইরান কত জোরালো হামলা চালাবে তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। ইরানের সামরিক কমান্ডাররা তেল আবিব এবং হাইফার আশপাশে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বয়ে হামলার কথা বিবেচনা করছেন। তবে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা এড়ানোর জোর চেষ্টা করা হবে। ইরান এবং এর অন্যান্য ফ্রন্ট থেকে সমন্বিত আক্রমণের কথা বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইরাক থেকেও হামলা চালানো হতে পারে। এদিকে ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, তেল আবিব কূটনৈতিক ব্যাকচ্যানেলের মাধ্যমে ইরানকে বার্তা পাঠিয়েছে যে, ইরান এবং তার প্রক্সিরা যদি দেশটির বিরুদ্ধে কোনও আক্রমণ চালায় তাহলে ইসরায়েল পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধে চলে যাবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইসরায়েল যেকোনো ফ্রন্ট থেকে হামলার ঘটনায় খুব ভারী মূল্য নির্ধারণ করবে।’ তেহরানে হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘হামাস নেতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া তেহরানের কর্তব্য। আমাদের প্রিয় অতিথিকে হত্যা করে ইসরায়েল নিজের জন্য কঠোর শাস্তি প্রস্তুত করেছে।’ তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার ঘটনাটি ইরানি কর্মকর্তাদের হতবাক করেছে, তারা এটিকে রেড লাইন ক্রসিং বলে অভিহিত করেছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় প্রেস টিভি জানিয়েছে, আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার জানাজায় ইমামতি করবেন।