বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিল্লিতে গোপন আশ্রয়ে শেখ হাসিনা, ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববার সময় দিয়েছে ভারত

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে সামরিক হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। আপাতত তিনি আশ্রয় নিয়েছেন বন্ধু-প্রতিম দেশ ভারতের দিল্লিতে। আপাতত তাকে দিল্লিতে থাকার অনুমতি দিলেও স্থায়ীভাবে তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে কিনা ভারত সেই সিদ্ধান্ত হবে দিল্লিতে হতে যাওয়া সর্বদলীয় বৈঠকে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে এমনটিই।

মঙ্গলবার বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সব দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন দেশটির বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই বৈঠকে ছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজেজুরাও।

আনন্দবাজার তাদের সূত্রের বরাত দিয়ে বলছে, বাংলাদেশে প্রবাসী ভারতীয় নাগরিকদের পরিস্থিতি নিয়েও ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে নয়াদিল্লি। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, তা দেখা হচ্ছে।

এছাড়া সর্বদলীয় বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের কী অবস্থান, তা সব সংসদ সদস্যদের জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তার বক্তব্য অনুযায়ী, আপাতত ভারত হাসিনাকে কিছু দিন সময় দিতে চায়। এরপর শেখ হাসিনা তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, তা তিনি ভারত সরকারকে জানাবেন। সেই ভাবনাচিন্তার জন্য তিনি সময় নিচ্ছেন। হাসিনার পরিকল্পনা জানার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে নয়াদিল্লি।

এছাড়া বাংলাদেশে পরিস্থিতি ভারতীয় নাগরিকদের প্রসঙ্গও নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেই বৈঠকে। সর্বদলীয় বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখনই জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে আনা হচ্ছে না। তবে প্রয়োজনে যে কোনো সময় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে তাদের দেশে আনতে প্রস্তুত ভারত।

সর্বদলীয় বৈঠকে সংসদ সদস্যদের জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘যে পরিস্থিতি বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে, তার দিকে আমরা নজর রাখছি। সঠিক সময় এলে ভারত সরকার সঠিক পদক্ষেপ নেবে।’

এর আগে, সোমবার বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গাজিয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেসে নামেন হাসিনা। সেখানে তার সঙ্গে দেখা করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সূত্রের খবর, এয়ারবেসেই রাত কাটিয়েছেন হাসিনা। তাকে যে বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেটি মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশে উড়ে গিয়েছে বলে জানায় সংবাদ সংস্থা এএনআই। কোথায় গিয়েছে, তা স্পষ্ট নয় এখনও।

সূত্রের খবর, হাসিনা লন্ডনে যেতে চান, কিন্তু ব্রিটেন থেকে এখনও মেলেনি সবুজ সঙ্কেত। অন্য কোনো দেশে তিনি যাবেন কি না, সেই ভাবনাচিন্তা চলছে। আপাতত সে জন্যই ভারত তাকে সময় দিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

দিল্লিতে গোপন আশ্রয়ে শেখ হাসিনা, ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববার সময় দিয়েছে ভারত

প্রকাশিত সময় : ০৩:২৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে সামরিক হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। আপাতত তিনি আশ্রয় নিয়েছেন বন্ধু-প্রতিম দেশ ভারতের দিল্লিতে। আপাতত তাকে দিল্লিতে থাকার অনুমতি দিলেও স্থায়ীভাবে তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে কিনা ভারত সেই সিদ্ধান্ত হবে দিল্লিতে হতে যাওয়া সর্বদলীয় বৈঠকে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে এমনটিই।

মঙ্গলবার বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সব দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন দেশটির বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই বৈঠকে ছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজেজুরাও।

আনন্দবাজার তাদের সূত্রের বরাত দিয়ে বলছে, বাংলাদেশে প্রবাসী ভারতীয় নাগরিকদের পরিস্থিতি নিয়েও ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে নয়াদিল্লি। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, তা দেখা হচ্ছে।

এছাড়া সর্বদলীয় বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের কী অবস্থান, তা সব সংসদ সদস্যদের জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তার বক্তব্য অনুযায়ী, আপাতত ভারত হাসিনাকে কিছু দিন সময় দিতে চায়। এরপর শেখ হাসিনা তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, তা তিনি ভারত সরকারকে জানাবেন। সেই ভাবনাচিন্তার জন্য তিনি সময় নিচ্ছেন। হাসিনার পরিকল্পনা জানার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে নয়াদিল্লি।

এছাড়া বাংলাদেশে পরিস্থিতি ভারতীয় নাগরিকদের প্রসঙ্গও নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেই বৈঠকে। সর্বদলীয় বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখনই জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে আনা হচ্ছে না। তবে প্রয়োজনে যে কোনো সময় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে তাদের দেশে আনতে প্রস্তুত ভারত।

সর্বদলীয় বৈঠকে সংসদ সদস্যদের জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘যে পরিস্থিতি বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে, তার দিকে আমরা নজর রাখছি। সঠিক সময় এলে ভারত সরকার সঠিক পদক্ষেপ নেবে।’

এর আগে, সোমবার বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গাজিয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেসে নামেন হাসিনা। সেখানে তার সঙ্গে দেখা করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সূত্রের খবর, এয়ারবেসেই রাত কাটিয়েছেন হাসিনা। তাকে যে বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেটি মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশে উড়ে গিয়েছে বলে জানায় সংবাদ সংস্থা এএনআই। কোথায় গিয়েছে, তা স্পষ্ট নয় এখনও।

সূত্রের খবর, হাসিনা লন্ডনে যেতে চান, কিন্তু ব্রিটেন থেকে এখনও মেলেনি সবুজ সঙ্কেত। অন্য কোনো দেশে তিনি যাবেন কি না, সেই ভাবনাচিন্তা চলছে। আপাতত সে জন্যই ভারত তাকে সময় দিয়েছে।