শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

নোয়াখালীর ৯টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে জেলার অনেক এলাকা নতুন করে পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ফলে ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। গ্রামীণ সব সড়ক ও ফসলি মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুর ও খামারের মাছ।

এদিকে, নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলা আবহওয়া অফিস।

নতুন করে যে সব এলাকার প্লাবিত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- সেনবাগ উপজেলার ছমিরমুন্সির হাট, কল্যাণদি, সেবার হাট, কুতুবের হাট গ্রাম। বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়ারপুর, শরীফপুর, মীরওয়ারিশপুর, রাজগঞ্জ ইউনিয়ন। সদর উপজেলার চরমটুয়া, আন্ডারচর, কালাদরাপ, কাদির হানিফ ইউনিয়ন। চাটখিল উপজেলার রামনারায়নপুর, নাহারখিল ইউনিয়ন। কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট পৌরসভা, ঘোষবাগ, ধানসিঁড়ি, ধানশালিক ইউনিয়ন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর, চর পার্বতী, চর হাজারী, সিরাজপুর ইউনিয়ন এবং সুবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা, চর জুবলী, চর জব্বর, মোহাম্মদপুর, চর ক্লার্ক ইউনিয়ন।

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা জানান, পানি বাড়ছে। এই পানি বন্যায় রূপ নিচ্ছে। আমরা পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকাগুলোর মানুষদের স্কুল ও মাদরাসায় আশ্রয় নিতে বলেছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন প্রস্তুত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃষ্টিতে জেলা শহর মাইজদীসহ ৯টি উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতি জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। পানিতে ডুবে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। নোয়াখালী পৌরসভার বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করায় মানুষজন ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে।

সরেজমিন বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অনেকের ঘরে হাঁটু পরিমাণ পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে রান্নাঘরও। নালায় জমে থাকা আবর্জনা বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে পানিবাহিত রোগে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন। গ্রামীণ সড়ক পানিতে তলিয়ে থাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসন  সূত্রে জানা গেছে, ফেনীর মহুরী নদীর পানি নোয়াাখালীতে প্রবেশ করছে। এই নদীর পানি লক্ষ্মীপুর হয়ে নেমে যাবে। যারা আক্রান্ত তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের আশ্রয় দিতে উপজেলা পর্যায়ের সব মাধ্যমিক, প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদরাসা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

প্রকাশিত সময় : ১১:৩৪:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪

নোয়াখালীর ৯টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে জেলার অনেক এলাকা নতুন করে পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ফলে ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। গ্রামীণ সব সড়ক ও ফসলি মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুর ও খামারের মাছ।

এদিকে, নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলা আবহওয়া অফিস।

নতুন করে যে সব এলাকার প্লাবিত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- সেনবাগ উপজেলার ছমিরমুন্সির হাট, কল্যাণদি, সেবার হাট, কুতুবের হাট গ্রাম। বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়ারপুর, শরীফপুর, মীরওয়ারিশপুর, রাজগঞ্জ ইউনিয়ন। সদর উপজেলার চরমটুয়া, আন্ডারচর, কালাদরাপ, কাদির হানিফ ইউনিয়ন। চাটখিল উপজেলার রামনারায়নপুর, নাহারখিল ইউনিয়ন। কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট পৌরসভা, ঘোষবাগ, ধানসিঁড়ি, ধানশালিক ইউনিয়ন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর, চর পার্বতী, চর হাজারী, সিরাজপুর ইউনিয়ন এবং সুবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা, চর জুবলী, চর জব্বর, মোহাম্মদপুর, চর ক্লার্ক ইউনিয়ন।

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা জানান, পানি বাড়ছে। এই পানি বন্যায় রূপ নিচ্ছে। আমরা পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকাগুলোর মানুষদের স্কুল ও মাদরাসায় আশ্রয় নিতে বলেছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন প্রস্তুত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃষ্টিতে জেলা শহর মাইজদীসহ ৯টি উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতি জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। পানিতে ডুবে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। নোয়াখালী পৌরসভার বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করায় মানুষজন ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে।

সরেজমিন বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অনেকের ঘরে হাঁটু পরিমাণ পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে রান্নাঘরও। নালায় জমে থাকা আবর্জনা বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে পানিবাহিত রোগে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন। গ্রামীণ সড়ক পানিতে তলিয়ে থাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসন  সূত্রে জানা গেছে, ফেনীর মহুরী নদীর পানি নোয়াাখালীতে প্রবেশ করছে। এই নদীর পানি লক্ষ্মীপুর হয়ে নেমে যাবে। যারা আক্রান্ত তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের আশ্রয় দিতে উপজেলা পর্যায়ের সব মাধ্যমিক, প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদরাসা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’