বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বদেশে ফিরতে অন্তর্বর্তী সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে রোহিঙ্গারা

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের সাত বছর পূর্ণ হলো আজ রোববার (২৫ আগস্ট)। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট সামরিক বাহিনীর কাছে নির্যাতিত হয়ে প্রাণ ভয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। তাদের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়। তবে, দীর্ঘ সাত বছরেও আলোর মুখ দেখেনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি। তাই নিজ দেশে ফিরে যেতে বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সেহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

নিজ ভূমি থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের দিনটিকে ‘কালো দিন’ আখ্যা দিয়ে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস’ পালন করে আসছেন রোহিঙ্গারা।

জানা গেছে, আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা’ দিবস পালন করেন রোহিঙ্গারা। এসময় তারা ‘হোপ ইজ হোম’ ক্যাম্পেইন করেন। এছাড়া, সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে হাজারো রোহিঙ্গা খোলা মাঠে জড়ো হন। সেখানে আয়োজিত সমাবেশে রোহিঙ্গা পুরুষদের পাশাপাশি নারী ও শিশুরা যোগ দেন। নিজেদের অধিকার নিয়ে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার দাবি জানান তারা।  ‘উই ওয়ান্টন জাস্টিস’ স্লোগান সম্বলিত পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন তারা।

রোহিঙ্গা নেতারা জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধ হলে দুনিয়ার কোনো শক্তি টিকে থাকতে পারেনা। তেমনিভাবে রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামলে মিয়ানমারের জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মির পতন হতে বাধ্য। ২০১৭ সালে মিয়ানমার জান্তা সরকার তাদের (রোহিঙ্গা) ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। বাংলাদেশ মানবিক হয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়। এখন রোহিঙ্গারা নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে তারা আর থাকতে চান না। তারা নিজ দেশে ফিরতে চান।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গারা যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বাংলাদেশসহ দাতা সংস্থার কাছে সহযোগিতা কামনা করেন।

উখিয়া ১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কমিউনিটি নেতা হামিদ হোসেন বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের মাতৃভূমি। অনতিবিলম্বে আমাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে। আমাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগিতা চাই। এই সরকার আমাদের স্বদেশে ফিরে যেতে অবদান রাখবে বলে আশা রাখছি।’

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- রোহিঙ্গা নেতা ছৈয়দ উল্লাহ, মাস্টার কামাল, রহমত উল্লাহ, মাস্টার আবদুর রশিদ ও মুহাম্মদ মুসা।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা তাদের আগমনের সাত বছর অতিবাহিত করেছেন। আজ তারা প্রত্যাবাসনের দাবিতে সভা ও সমাবেশ করেছেন। তাদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার ছিল।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

‘প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ায় স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়েছিলাম’

স্বদেশে ফিরতে অন্তর্বর্তী সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত সময় : ১১:৫৬:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের সাত বছর পূর্ণ হলো আজ রোববার (২৫ আগস্ট)। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট সামরিক বাহিনীর কাছে নির্যাতিত হয়ে প্রাণ ভয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। তাদের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়। তবে, দীর্ঘ সাত বছরেও আলোর মুখ দেখেনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি। তাই নিজ দেশে ফিরে যেতে বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সেহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

নিজ ভূমি থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের দিনটিকে ‘কালো দিন’ আখ্যা দিয়ে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস’ পালন করে আসছেন রোহিঙ্গারা।

জানা গেছে, আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা’ দিবস পালন করেন রোহিঙ্গারা। এসময় তারা ‘হোপ ইজ হোম’ ক্যাম্পেইন করেন। এছাড়া, সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে হাজারো রোহিঙ্গা খোলা মাঠে জড়ো হন। সেখানে আয়োজিত সমাবেশে রোহিঙ্গা পুরুষদের পাশাপাশি নারী ও শিশুরা যোগ দেন। নিজেদের অধিকার নিয়ে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার দাবি জানান তারা।  ‘উই ওয়ান্টন জাস্টিস’ স্লোগান সম্বলিত পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন তারা।

রোহিঙ্গা নেতারা জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধ হলে দুনিয়ার কোনো শক্তি টিকে থাকতে পারেনা। তেমনিভাবে রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামলে মিয়ানমারের জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মির পতন হতে বাধ্য। ২০১৭ সালে মিয়ানমার জান্তা সরকার তাদের (রোহিঙ্গা) ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। বাংলাদেশ মানবিক হয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়। এখন রোহিঙ্গারা নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে তারা আর থাকতে চান না। তারা নিজ দেশে ফিরতে চান।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গারা যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বাংলাদেশসহ দাতা সংস্থার কাছে সহযোগিতা কামনা করেন।

উখিয়া ১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কমিউনিটি নেতা হামিদ হোসেন বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের মাতৃভূমি। অনতিবিলম্বে আমাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে। আমাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগিতা চাই। এই সরকার আমাদের স্বদেশে ফিরে যেতে অবদান রাখবে বলে আশা রাখছি।’

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- রোহিঙ্গা নেতা ছৈয়দ উল্লাহ, মাস্টার কামাল, রহমত উল্লাহ, মাস্টার আবদুর রশিদ ও মুহাম্মদ মুসা।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা তাদের আগমনের সাত বছর অতিবাহিত করেছেন। আজ তারা প্রত্যাবাসনের দাবিতে সভা ও সমাবেশ করেছেন। তাদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার ছিল।’