বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ায় মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা: শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের নামে মামলা

কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে আমার দেশ পত্রিকার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১টায় মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পুলিশের সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি মেহেদী হাসান, মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীসহ মোট ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১৫-২০ জনকে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর হক চৌধুরী বলেন, কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ৪৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুর রহমান বলেন, আমার ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছি। ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছি। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২২ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়ায় আদালত থেকে মানহানির মামলায় জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা করা হয়। আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়ার সময় লাঠি ও ইটের আঘাতে তিনি আহত হন। তাকে বহনকারী গাড়ির গ্লাসও ভেঙে ফেলা হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান ও তার সহযোগীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় জামিন নিতে কুষ্টিয়া আদালতে গিয়েছিলেন তিনি।

ওইদিন কুষ্টিয়ায় দায়ের হওয়া মানহানির মামলায় মাহমুদুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এম এম মোর্শেদ ১০ হাজার টাকা জামানতে স্থায়ীভাবে তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়ার পর দুপুর ১টা থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেন।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আগে থেকে আদালত চত্বরে অবস্থান নেন। জামিন মঞ্জুর করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ওপর হামলা চালানো হয়। জামিন মঞ্জুরের পর মাহমুদুর রহমানকে আদালতের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে ফেলেন তারা। একপর্যায়ে সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি নিজের গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এতে গুরুতর রক্তাক্ত আহত হন মাহমুদুর রহমান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

কুষ্টিয়ায় মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা: শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের নামে মামলা

প্রকাশিত সময় : ১০:৩২:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪

কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে আমার দেশ পত্রিকার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১টায় মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পুলিশের সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি মেহেদী হাসান, মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীসহ মোট ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১৫-২০ জনকে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর হক চৌধুরী বলেন, কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ৪৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুর রহমান বলেন, আমার ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছি। ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছি। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২২ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়ায় আদালত থেকে মানহানির মামলায় জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা করা হয়। আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়ার সময় লাঠি ও ইটের আঘাতে তিনি আহত হন। তাকে বহনকারী গাড়ির গ্লাসও ভেঙে ফেলা হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান ও তার সহযোগীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় জামিন নিতে কুষ্টিয়া আদালতে গিয়েছিলেন তিনি।

ওইদিন কুষ্টিয়ায় দায়ের হওয়া মানহানির মামলায় মাহমুদুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এম এম মোর্শেদ ১০ হাজার টাকা জামানতে স্থায়ীভাবে তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়ার পর দুপুর ১টা থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেন।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আগে থেকে আদালত চত্বরে অবস্থান নেন। জামিন মঞ্জুর করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ওপর হামলা চালানো হয়। জামিন মঞ্জুরের পর মাহমুদুর রহমানকে আদালতের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে ফেলেন তারা। একপর্যায়ে সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি নিজের গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এতে গুরুতর রক্তাক্ত আহত হন মাহমুদুর রহমান।